স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ নামকা ওয়াস্তে অনুমোদন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করে ভেজাল খাদ্যজাত, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন ও উপস্থাপন অব্যাহত রাখলেও স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ঠুঁটো জগান্নাথ হয়ে আছেন। স্যানিটারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে উপজেলা অফিসারদেরও এতে কোন মাথা ব্যথা নেই। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সব খাদ্যজাত প্রতিষ্ঠান চলছে স্বাস্থ্য বিধি মেনে।
গত এক বছরে তিন হাজারের বেশি খাদ্য উৎপাদন ও বিকিকিনি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে মাত্র ২০ অভিযান পারিচালিত হয়েছে। যা হাস্যকর। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে তাহলে স্যানিটারি কর্মকর্তাদের কাজ কী? সিভিল সার্জন অফিসের সূত্র মতে, যশোরে বেকারির সংখ্যা ২শ’ ১০টি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি ও তেলমিল মিলিয়ে রয়েছে আরও এক শ’ ৭৪টি। এছাড়া খাবার হোটেল রয়েছে দুই হাজার ৬শ’ ৭০টি। জেলা স্যানিটারি কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য হিসেবে এগুলো সবই অনুমোদিত। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এগুলো চলছে কিনা এর হাল নাগাদ কোন তথ্য এই অফিসে নেই। অভিযোগ এসেছে, যশোর জেলার অধিকাংশ খাদ্য উৎপাদন, বিক্রি ও সরবরাহ প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিধি মানা হয় না। স্বাস্থ্য কার্ড নেই কর্মচারীদের, ভেজাল করা হচ্ছে, পচাবাসিও বিক্রি করা হচ্ছে, কোনটায় রঙের ব্যবহারও চলছে। বেকারিতেও রয়েছে অস্বচ্ছতা। মানুষের আহার্য্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য মান অপেক্ষা নিম্নমানের কোন খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্যোপকরণ বিক্রির জন্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ বা সরবরাহ বিক্রি স্বাস্থ্যবিধি পরিপন্থি। আর এই স্বাস্থ্য পরিপন্থি কর্মকা- যশোরে অহরহ হচ্ছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের হদিস না মিললেও যশোরে অভিযান নেই। সম্প্রতি ও বিগত সময়ে স্যানিটারি কর্মকর্তারা স্বপ্রণোদিতভাবে অভিযান চালিয়েছে এর সংখ্যা খুবই কম। অথচ যশোর শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা শহর, বাজার এবং পাড়া-মহল্লায় যত্রতত্র খাবার হোটেল গড়ে উঠলেও সঠিক হিসেব নেই স্যানিটারি বিভাগে। শুধু যারা নিজেরাই অনুমোদন নিতে আসে নামকাওয়াস্তে তদন্ত করে অনুমোদন দেয়াই স্যানিটারি কর্মকর্তার কাজ।
শুধু অনুমোদন কাগজকে পুঁজি করে অনেক প্রতিষ্ঠান চলছে। উপজেলা স্যানিটারি কর্মকর্তারা তদারকির দায়িত্বে থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তারা নিরাবতা পালন করে। যত্রতত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও তার তালিকা নেই, মাঠ পর্যায়ে তদন্তও নেই। স্যানিটারি বিষয়ক প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র পর্যন্ত জেলা স্যানিটারি কর্মকর্তার কার্যালয়ে নেই। সূত্র জানিয়েছে, যশোর জেলার বেশিরভাগ বেকারি কিংবা আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালালে ধরা পড়বে ভেজাল ও অনিয়ম। এসব প্রতিষ্ঠানে জরুরি অভিযান দাবি করেছেন ভোক্তাগণ। এ বিষয়ে যশোর জেলা স্যানিটারি কর্মকর্তার কার্যালয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সেখানে স্যানিটারি সংক্রান্ত কোন লিফলেট, স্বাস্থ্য বিধির কোন প্রিন্ট কপি পাওয়া যায়নি। সাম্প্রতিক আইনের একটি কপি তিন দিন পর তার বাসা থেকে এনে দেন। জেলা স্যানিটারি কর্মকর্তা শিশির কান্তি পাল জানান, গত এক বছরে জেলায় ২০টি অভিযান হয়েছে। আদায় হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। খাদ্য নিরাপত্তা আইনে এখন জরিমানা মোটা অংকের হওয়ায় অভিযান কম করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: