ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জড়িতদের শাস্তি চেয়েছে ছাত্রলীগ

ঢাবির স্মরণিকায় ইতিহাস বিকৃতি তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২২ অক্টোবর ২০১৬

ঢাবির স্মরণিকায় ইতিহাস বিকৃতি তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই

সোহেল তানভীর ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের দীর্ঘ তিন মাস পার হলেও তদন্তে তেমন কোন অগ্রগতি নেই। কমিটির একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। অনেক তথ্য সহজে মেলে না বলে তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে। এদিকে, এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। গত ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ক্ষেত্রে জেনারেল জিয়াকে ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের ইতিহাস তুলে ধরতে গিয়ে স্মরণিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে লেখা হয়, তিনি বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা, যিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিষয়টি নজরে আসার পর স্মরণিকাটি বাজেয়াফত ঘোষণা করে স্মরণিকার সম্পাদক ও ওই নিবন্ধের লেখক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এ ঘটনায় সেদিন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ এবং উপাচার্যের গাড়ি ভাংচুর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এরপর ২১ জুলাই সার্বিক ঘটনা তদন্তের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ কামাল উদ্দীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ আর্থ এ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন, সিনেট সদস্য বাহালুল মজনুন চুন্নু এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী এএফএম মেজবাহ উদ্দিন। তদন্তে অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির প্রধান অধ্যাপক কামালউদ্দীন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটি মিটিংয়ে বসেছি এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। অনেক তথ্য সহজে মেলে না বলে আমাদের তদন্তে একটু বিলম্ব হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে আবার মিটিংয়ে বসে করণীয় নির্ধারণ করব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। যারা ইতিহাস বিকৃতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তদন্ত চলছে, তদন্ত থেমে নেই। পুরো ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, কিভাবে জড়িত আমরা সিরিয়াসলি দেখছি। ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় যারা জড়িত কেউ রেহাই পাবে না। জানা গেছে, অব্যাহতি পাওয়ার পর সৈয়দ রেজাউর রহমান তার আগের টিএসসির ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান দফতরে যোগ দিয়ে বর্তমানে ছুটিতে আছেন। বিএনপি-জামায়াতের আমলে উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজের সময়ে ২০০৭ সালে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদে নিয়োগ পান।
×