ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নৌকার আদলে দৃষ্টিনন্দন মূল মঞ্চ- লম্বায় দেড় শ’ চওড়ায় ৮৪ ফুট

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২২ অক্টোবর ২০১৬

নৌকার আদলে দৃষ্টিনন্দন মূল মঞ্চ- লম্বায় দেড় শ’ চওড়ায় ৮৪ ফুট

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ লম্বায় ১৫০ ফুট, চওড়ায় ৮৪ ফুট। নৌকার আদলে সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি দৃষ্টিনন্দন মূল মঞ্চ। মঞ্চের ডান পাশে স্বাধীনতা স্তম্ভের জলাশয়ে লাগানো হয়েছে কৃত্রিম শাপলা, ভাসছে ডিঙ্গি নৌকা। পুরো উদ্যানকে ঘিরে বর্ণাঢ্য ও মনোলোভা সাজসজ্জা, বৈদ্যুতিক আলোর ঝলকানি, লেজাররশ্মিসহ অনেক কিছু। এককথায় অপরূপ সাজে সেজেছে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, যেখানে আজ অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল। রাজধানীজুড়েও শোভা পাচ্ছে বর্ণিল আলোকচ্ছটা। বর্ণাঢ্য এ আয়োজনকে ঘিরে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। শুক্রবার সরেজমিন দেখা গেছে, সৌন্দর্যবর্ধনকারী কর্মীরা শশব্যস্ত। কেউ মঞ্চের এক অংশে রংয়ের কাজ করছেন, কেউ চেয়ার সাজাচ্ছেন, কেউবা অনুষ্ঠানস্থলের কোথায় কী কম পড়ল তা দেখভাল করছেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের স্থানে নৃত্যশিল্পীরা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের মহড়ায়। কেউবা সুবিশাল প্যান্ডেলের সাউন্ডবক্স, মাইক ঠিক আছে কি-না, সাঁটানো বড় বড় এলইডি স্ক্রিন ঠিকমতো কাজ করছে কি-না তা শেষ সময়ে পরীক্ষা করে দেখছেন। আর ক্ষণে ক্ষণে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে শেষ সময়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতেও ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। ব্যানার, ফেস্টুন, লাইটিংÑ সব মিলিয়ে জমায়েত সার্থক করার মহাযজ্ঞের প্রস্তুতি। এদিকে, রাতের ঢাকার চিরচেনা দৃশ্য কয়েকদিন ধরেই হঠাৎ বদলে গেছে। ঢাকাজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। ঝলমল সাজে সেজেছে গোটা মহানগরী। সন্ধ্যা নামতেই বর্ণিল আলোকচ্ছটায় রূপ বদলে যায় ধূলি-ধূসর ঢাকার। নগরীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত সাজানো হয়েছে লাল-নীল মরিচ বাতি দিয়ে। বসেছে এলইডি লাইটে তৈরি আলোকোজ্জ্বল নৌকা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের রঙ্গিন প্রতিকৃতি। কোন রাজনৈতিক দলের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশ এর আগে এত দীর্ঘ সময় আলোকোজ্জ্বল সাজে কখনও সাজতে দেখেনি দেশবাসী। দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন ঘিরেই রাজধানীজুড়ে এখন রঙ্গিন আলোর ছড়াছড়ি। শুধু বর্ণিল সাজসজ্জাই নয়, প্রযুক্তি খাতেও বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাজসজ্জার সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকের প্রোফাইল ছবিতেও আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের ছাপ পড়েছে। ২০তম জাতীয় সম্মেলন সরাসরি ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার হবে। এ ব্যাপারে দলের নেতারা বলেন, বাংলাদেশকে ডিজিটাল হিসেবে গড়ে তোলার মূল ভূমিকা রেখেছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। সেই দলের সম্মেলনে ডিজিটালের ছোঁয়া তো থাকবেই। আওয়ামী লীগের নিজস্ব ফেসবুক পেজে সম্মেলন সরাসরি দেখা যাবে। যে কেউ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সম্মেলন লাইভ দেখতে পারবেন। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে একটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে। সেখানে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’-এর ২০তম জাতীয় সম্মেলনে সবাইকে স্বাগত জানানো হয়েছে। আর সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সুবিশাল প্যান্ডেলসহ পুরো এলাকা ওয়াই-ফাইয়ের আওতায় আনা হয়েছে। সোহেল তাজ লাইমলাইটে ॥ আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অনেক চমক থাকবে, এ কথা হরহামেশাই বলছেন দলের নেতারা। কী হতে পারে এসব চমক? এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার মধ্যে হঠাৎ করেই আলোচনায় উঠে এসেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। অভিমান করে মন্ত্রিত্ব ও রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন এই তরুণ নেতা। সম্মেলন সামনে রেখে দেশে ফিরেই সরব হয়ে উঠেছেন তিনি। দায়িত্বশীল দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সম্মেলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে যাচ্ছেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম ও দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ। তাঁকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করা হচ্ছে এমনও গুঞ্জন এখন সর্বত্র। বেশ কিছুদিন আগেই সোহেল তাজ দেশে এসে কাউন্সিল আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছেন। এরই মধ্যে সম্মেলনে যোগ দিতে গাজীপুর থেকে কাউন্সিলরও হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে তা ছেড়ে দিয়ে এমনকি দল থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন সোহেল তাজ। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্টে রাজনীতিতে ফেরার ইঙ্গিত দেন তিনি। দেশের মানুষের জন্য অর্থবহ কিছু করতে চান বলেও ওই পোস্টে জানিয়েছিলেন তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।
×