ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনায় বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার সিটি

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২১ অক্টোবর ২০১৬

বার্সিলোনায় বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার সিটি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ম্যাচের আগে অনেক ঝাঁঝালো কথাবার্তা হয়েছে। হয়েছে অনেক হিসেব-নিকেশ। গুরু-শিষ্যের লড়াইয়ে কে করবেন বাজিমাত? সব আলোচনা আর হিসেবের মারপ্যাঁচ চুকিয়ে ম্যানচেস্টার সিটিকে আরও একবার কাবু করেছে বার্সিলোনা। শুধু হারিয়েছে বললে হয়তো ভুল বলা হবে। ইংলিশ ক্লাবটিকে ফুটবল শিখিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে কাতালানরা। বুধবার রাতে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে লিওনেল মেসির রেকর্ডগড়া হ্যাটট্রিকে ভর করে বার্সা ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেয় ম্যানসিটিকে। কাতালানদের অপর গোলদাতা ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। ‘এ’ গ্রুপে সহজ জয় পেয়েছে আর্সেনাল ও প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন। ঘরের মাঠ লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনাল ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে বুলগেরিয়ার ক্লাব লুডোগোরেটস রাজগার্ডকে। গানার্সদের হয়ে চোখ ধাঁধানো হ্যাটট্রিক করে জার্মান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিল। একটি করে গোল করেন এ্যালেক্সিস সানচেজ, থিও ওয়ালকট ও অক্সালেড চেম্বারলেইন। প্যারিসে ফরাসী চ্যাম্পিয়ন পিএসজি ৩-০ গোলে হারায় সুইস ক্লাব বাসেলকে। বিজয়ী দলের হয়ে গোলগুলো করেন এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, লুকাস মউরা ও এডিনসন কাভানি। ‘বি’ গ্রুপে আগের দুই ম্যাচেই জয় পাওয়া নেপোলিকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে তুরস্কের ক্লাব বেসিকটাস। ইতালিয়ান ক্লাবটিকে তাদেরই মাঠে ৩-২ গোলে হারিয়েছে বেসিকটাস। তুর্কী ক্লাবটির অসাধারণ জয়ে জোড়া গোল করেন ভিনসেন্ট আবুবকর। অপর গোল আদ্রিয়ানোর। গ্রুপের আরেক ম্যাচে বেনফিকা ২-০ গোলে হারিয়েছে ডায়নামো কিয়েভকে। এই গ্রুপে থেকে এখন নকআউট পর্বে যাওয়ার লড়াই বেশ জমে উঠল। ‘ডি’ গ্রুপে টানা তৃতীয় জয় পেয়েছে স্প্যানিশ ক্লাব এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। এ্যাওয়ে ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক রাশিয়ান ক্লাব রোস্টভকে। আগের ম্যাচ হার মানা বেয়ার্ন মিউনিখ ফিরেছে জয়ের ধারায়। নিজেদের মাঠ মিউনিখের এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারানায় বাভারিয়ানরা সহজেই ৪-১ গোলে হারায় ডাচ ক্লাব পিএসভি আইন্দহোভেনকে। বেয়ার্নের হয়ে গোলগুলো করেন টমাস মুলার, জোসুয়া কিমিচ, রবার্ট লেভানডোস্কি ও আরিয়েন রোবেন। ন্যুক্যাম্পে ম্যাচের শুরু থেকেই অতিথি ম্যানসিটির ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে স্বাগতিক বার্সা। ১৭ মিনিটেই ফার্নান্ডিনহোর ভুল থেকে বার্সাকে এগিয়ে নেন আর্জেন্টাইন তারকা মেসি। সিটি গোলরক্ষক ক্লাউডিও ব্রাভোর লালকার্ডের সুবাদে ৬১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বার্সিলোনার এই গোল মেশিন। আগস্টে বার্সা ছেড়ে সিটিতে জো হার্টের স্থলাভিষিক্ত হন চিলিয়ান এই গোলরক্ষক। বার্সার আক্রমণের একটি বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তা চলে যায় লুইস সুয়ারেজের পায়ে। কিন্তু তার সেই শট আটকাতে গোল সীমানার বাইরে এসে ইচ্ছা করে হাত দিয়ে বল রক্ষা করেন ব্রাভো। আর এতেই ৫৩ মিনিটে লাল কার্ড পেতে হয় তাকে। ৬৯ মিনিটে মেসি দলের তৃতীয় ও ইউরোপে নিজের টানা দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। ৮৬ মিনিটে পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করার পর ৮৯ মিনিটে নেইমার দলের বড় জয়ে অবদান রাখেন। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডেল কারণে বদলি খেলোয়াড় জেরেমি ম্যাথুউ ৭৩ মিনিটে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলে বার্সিলোনাও ১০ জনের দলে পরিণত হয়। ম্যাচে ম্যানসিটি গোল করার মতো তেমন পরিষ্কার সুযোগ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়। দলের সেরা তারকা মেসির অসাধারণ নৈপুণ্যে অনুমিতভাবেই প্রশংসা করেছেন কোচ লুইস এনরিকে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, সে (মেসি) ছিল ফল নির্ধারক। ম্যাচের সব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সঙ্গে জড়িত ছিল সে। মেসি এমনভাবে ম্যাচটি শেষ করেছে যেন সে স্কুল মাঠে খেলছিল! অন্যদিকে বড় হারে যেন বাকরুদ্ধ ম্যানসিটি কোচ পেপ গার্ডিওলা। অনেকেই এটিকে তার ক্যারিয়ারের বাজে হার বলছেন। তবে গার্ডিওলা এটি মানছেন না। ২০১৪ সালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে তার তখনকার দল বেয়ার্ন মিউনিখের ৪-০ গোলের হারটিকে নিজের কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে বলে উল্লেখ করেন গার্ডিওলা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেয়ার্নের হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে যাওয়া ছিল আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে। পুরো পরিস্থিতি আর শুরুর একাদশ নিয়ে আমার ভুলের বিষয় ছিল সেটা। অন্যদিকে ওজিলের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের পর আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারের চাওয়া আরও বেড়ে গেছে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, মনে হচ্ছে সে (ওজিল) গোল করার স্বাদ পাচ্ছে। আমরা তাকে গোলে সহায়তাকারী এবং গোলদাতা হিসেবে চাই। মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে সে এই ভাল ভারসাম্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
×