সুন্দরবনের ১৩ দস্যুর আত্মসমর্পণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বরগুনা, ২০ অক্টোবর ॥ দস্যুতার মতো ঘৃণ্য অপরাধ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্মসমর্পণ করেছে সুন্দরবনের জলদস্যু ‘সাগর বাহিনী’র সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বরগুনা সার্কিট হাউস মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে সাগর বাহিনীর ১৩ সদস্য। দস্যুরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ২০টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ শ’ ৯৬ রাউন্ড গুলি জমা দেয়। জমা দেয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছেÑ আটটি বিদেশী একনলা বন্দুক, তিনটি দেশীয় একনলা বন্দুক, একটি বিদেশী দোনলা বন্দুক, দুটি পয়েন্ট ২২ বোর বিদেশী এয়ার রাইফেল, চারটি এলজি, দুটি বিদেশী কাটা রাইফেল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে মন্ত্রী বেলা সাড়ে ১১টায় র‌্যাবের একটি হেলিকপ্টারে বরগুনা পৌঁছান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানে বরগুনা জেলা প্রশাসক ড. মুহাঃ বশিরুল আলম, পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএমসহ র‌্যাব-৮-এর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আত্মসমর্পণকারী দস্যুরা হলোÑ সাগর বাহিনীর প্রধান মোঃ আলমগীর শেখ ওরফে সাগর (৩৫), বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড মোঃ কামরুল ফকির (২৭), আবদুল মালেক (৩৮), মোঃ কাদের শেখ (৩৮), মোঃ হাফিজুর রহমান শেখ (৪৬), মোঃ কাবীর শেখ (৩৪), মোঃ দেলোয়ার শেখ (৩৮), মোঃ হাসান সরদার (২২), মোঃ নান্না ফকির (২৯), মোঃ তৌহিদুল ইসলাম (৪৩), মোঃ রাজু শেখ (২৮), মোঃ লিটন হাওলাদার (৩৪), মোঃ তরিকুল গাজী (৩২)। আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের বাড়ি বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় বলে জানিয়েছে র‌্যাব। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে স্বাগত জানান ও তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এছাড়াও তিনি অন্য দস্যুদের অস্ত্র ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাংলাদেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে আমার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সুন্দরবন দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও ইকোনমিক জোন। এ এলাকাকে বিপদমুক্ত রাখতে সরকারও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এজন্য এ এলাকায় র‌্যাব, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে সুন্দরবনের গহীনে দরজার খালে সাগর বাহিনীর সদস্যরা র‌্যাব-৮-এর কাছে আত্মসমর্পণ করে।