ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

খুদে লেখক সৃজনে উজ্জ্বল দেয়াল পত্রিকা উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২১ অক্টোবর ২০১৬

খুদে লেখক সৃজনে উজ্জ্বল দেয়াল পত্রিকা উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বড়দের মতোই ছোটদের মনেও খেলে যায় নানা ভাবনা। তাদের আশপাশেও ঘুরঘুর করে স্বপ্নের দল। আর সুন্দর করে প্রকাশিত হয়েছে ছোট্টর মনে সেই সব ভাবনা ও স্বপ্নের কথা। খুদে লেখকদের লেখা গল্প-কবিতার সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে বাদ যায়নি সমাজ বাস্তবতায়। তবে বইয়ের পৃষ্ঠায় নয়, লেখাগুলো উপস্থাপিত হয়েছে দেয়াল পত্রিকায়। শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের উন্মুক্ত চত্বরে এখন শোভা পাচ্ছে সেসব পত্রিকা। সেই সঙ্গে বিরাজ করছেন সৃজনে ব্যস্ত খুদে লেখকদের সরবতা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো নবম জাতীয় দেয়াল পত্রিকা উৎসব ও প্রতিযোগিতা ২০১৬। গণগ্রন্থাগারের উন্মুক্ত চত্বরে প্যান্ডেলের সাহায্যে কৃত্রিম দেয়াল গড়ে সেখানে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে রকমারি বিষয়ের পত্রিকাগুলো। কাগজ থেকে তালপাতায় প্রকাশিত হয়েছে লেখাগুলো। সেসব পত্রিকায় উঠে এসেছে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীদের মননের স্রোতধারা। এ উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ দেয়াল পত্রিকা পরিষদ। সহযোগিতায় রয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিন দিনের এ উৎসব উদ্বোধন করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় গ্রন্থাগার অধিদফতরের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কোষাধ্যক্ষ তাহমিনা রহমান প্রমুখ। নির্মলেন্দু গুণ বলেন, লেখা এক ধরনের অস্ত্র। আগ্নেয়াস্ত্রের মতোই। এই পত্রিকায় লেখার মাধ্যমে সেই অস্ত্রকে ব্যবহার করতে শেখেন লেখকরা। দেয়াল পত্রিকায় ছোটদের ভাবনা ও স্বপ্নের কথা ফুটে ওঠে। ধীরে ধীরে তারা বড় হয় তখন সমাজ ভাবনা ও সমাজের অসঙ্গতির সমালোচনা থাকে তাদের লেখায়। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দেয়াল পত্রিকা দেয়ালে টানানো পত্রিকা ঠিক কিন্তু এটি আসলে দেয়াল ভাঙ্গার পত্রিকা। এখন মানুষকে আমরা আলাদা করে ফেলছি। প্রত্যেকে সংকীর্ণ ও ছোট হয়ে যাচ্ছি। সেই সংকীর্ণতা, বিচ্ছিন্নতার দেয়াল ভেঙ্গে দিয়ে সৃষ্টিশীলতার দেয়াল গড়ে তোলাই আমাদের কাজ। তার জন্য প্রয়োজন সৃষ্টিমলিতার চর্চা। সৃষ্টিশীলতার চর্চাকে বিকশিত করে দেয়ালপত্রিকা। খুদে লেখকরা স্বপ্নের কথা লেখা পত্রিকায় সেজেছে এ উৎসব। পত্রিকাগুলোর নামকরণেও পাওয়া যায় সৌন্দর্যের পরিচয়। ঝিনাইদহের শিশুকুঞ্জ স্কুল এ্যান্ড কলেজের দেয়াল পত্রিকাটির নাম রক্তশপথ। ভিকারুন্নিসা নূন স্কুলের আজিমপুর শাখার শিক্ষার্থীদের দেয়াল পত্রিকার নাম বর্ণালী। কিশোরগঞ্জের আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দামিনী নামের পত্রিকাটি উৎসর্গ করা হয়েছে সকল নির্যাতিত নারী ও ধর্ষণের শিকার নারীদের। নওগাঁর পিএম সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দেয়াল পত্রিকাটি তাল পাতায় লেখা। সেই সূত্রে পত্রিকার নামটিও বেশ মজার ‘তালপাতার দপ্তর’।এসব পত্রিকায় কেউ লিখেছেন গল্প, কেউ কবিতা কিংবা বিশেষ বিষয়ের প্রবন্ধ-নিবন্ধ। কেউ পালন করেছেন সম্পাদনার গুরুদায়িত্ব। সুন্দর হাতের লেখার সঙ্গে কোন পত্রিকায় আবার বর্ণিল হয়েছে রং-তুলির আঁচড়ে। এ উৎসবে ১৬টি জেলা থেকে অংশ নিয়েছে ৬৪টি স্কুল। জেলাগুলো হচ্ছে- নওগাঁ, বরিশাল, ঝিনাইদহ, পাবনা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ। উৎসবের শেষ দিন শনিবার মোট ১০টি দেয়াল পত্রিকাকে পুরস্কৃত করা হবে। এছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রদর্শনী। ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বিষয়ক সম্মেলন শুরু ॥ ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বা বিয়ে বিয়ক আলোকচিত্র নিয়ে শুরু হলো তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শুরু হওয়া এ সম্মেলনের আয়োজক ওয়েডিং এ্যান্ড পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফার ইন বাংলাদেশ। আয়োজনে রয়েছে আলোকচিত্র বিষয়ক প্রতিযোগিতা ও ডিজিটাল সামগ্রীর প্রদর্শনী। বিকেলে সম্মেলন উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আরও বক্তব্য রাখেন ওয়েডিং ফটোগ্রাফার হাসান চন্দন, চঞ্চল মাহমুদ, প্রীত রেজা, তানভীর মুরাদ তপু, সুদীপ্ত সালাম, সজীব পাল, শামীম শরিফ সুষম, ডেভিড বারিকদার প্রমুখ। ২২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কনফারেন্স ও মাস্টার ক্লাস হবে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের থ্রিডি থিয়েটার হলে, এক্সপো চলবে গ্যালারি ১-৪ এ। প্রদর্শনী হবে চতুর্থ তলার লবিতে। আয়োজকরা জানান, ‘কল ফর এন্ট্রি’ পদ্ধতিতে ছবি চাওয়া হয়েছিল ফেসবুকের মাধ্যমে। প্রদর্শনীর থিমগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ব্রাইড এ্যান্ড গ্রুম টুগেদার’, ‘ব্রাইড এ্যান্ড গ্রুম সিঙ্গেল’, ‘সেরেমোনি’, ‘ডিটেইল’, ‘ক্রিয়েটিভ’, ‘মোমেন্ট’, ‘প্রি শুট’, ‘এনগেজমেন্ট’, ‘গেটিং রেডি’, ‘ফ্যাশন পোর্ট্রেট’ ও ‘চিলড্রেন’। সারাদেশ থেকে ৫৬৭ অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে ছয় হাজারেরও বেশি জমা পরা আলোকচিত্রীদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত ২০০টি ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। কেআইবির থ্রিডি খিয়েটার হলে আয়োজিত এক্সপোতে সমাগম হয়েছে আলোকচিত্র অনুষঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর। এখানে আলোকচিত্রীরা পাবেন আলোকচিত্র সম্পর্কিত যে কোন অনুষঙ্গ। ডিজিটাল শপ, সনি, ক্যামেরা জোন, এস এস ক্যামেরার মতো দেশী-বিদেশী নানা প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে এক্সপোতে। ক্রেতাদের জন্য পণ্য ক্রয়ে মূল্য ছাড়ও আরও অনেক অফার দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। আয়োজকরা জানান, এবারের আয়োজনে অংশগ্রহণ করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েডিং ফটোগ্রাফার ডেভিড বেকস্টেড। আয়োজনের প্রথম দিন থেকেই থাকছে তার ‘লাইভ জাজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম’ ক্লাস, আরও থাকছে তার সঙ্গে ‘ডায়নামিক শুটিং’-এর সুযোগ। এছাড়াও মালয়েশিয়া থেকেও এসেছেন আলোকচিত্রী জেফ ভুন, ভারতের অনুপ পাড়লকার, প্যাট্রিক লো। এবারের আয়োজনে ডব্লিউপিপিবি সম্মাননা জানাবে প্রবীণ আলোকচিত্রী রফিকুল ইসলাম।
×