ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

হিলারির সঙ্গে তৃতীয় ও শেষ নির্বাচনী বিতর্ক

নির্বাচনের ফল বর্জন করার ইঙ্গিত ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২১ অক্টোবর ২০১৬

নির্বাচনের ফল বর্জন করার ইঙ্গিত ট্রাম্পের

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার আভাস দিয়েছেন তিনি ৮ নবেম্বরের নির্বাচনের ফল নাও মেনে নিতে পারেন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রাথী ট্রাম্প এদিন লাস ভেগাসে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে তৃতীয় ও শেষ নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেন। আগের দুটো নির্বাচনের মতো এ বিতর্কেও হিলারির কাছে ধরাশায়ী হন ট্রাম্প। খবর এএফপি ও বিবিসির। নির্বাচনের মাত্র ১৯ দিন আগে দুই প্রার্থী শেষবারের মতো মুখোমুখি হন। ৯০ মিনিটের বিতর্কে নির্বাচনের ফল ট্রাম্প মেনে নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি স্থগিত রাখতে চাই। তিনি এটাও বলেন, এবারের নির্বাচনে কারচুপি হতে পারে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ২৪০ বছরের ইতিহাসে কোন বড় রাজনৈতিক দল থেকে নারী হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন হিলারি। মনোনয়ন প্রতিযোগিতাকালে প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্সের বক্তব্য উদ্ধৃত করে হিলারি ট্রাম্পকে আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেন। এ বিতর্কে ট্রাম্প যে হেরে গেছেন রিপাবলিকান দলীয় রাজনীতিকরাও সেটি মেনে নিয়েছেন। রিপাবলিকান সিনেটর, জেফ ফ্লেক মনে করেন ট্রাম্প প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েছেন। এছাড়া দলের এক সময়ের মনোনয়নপ্রত্যাশী লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, মার্কিন রাজনৈতিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব না দেয়ার মাসুল গুনতে হবে ট্রাম্পকে। এবারের বিতর্কে দুই প্রার্থীকে শান্ত দেখা গেছে, তবে মাঝে মধ্যে দুজনকে কিছুট উত্তেজিত হতে দেখা গেছে। এ বিতর্কের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প মার্কিন নাগরিকদের সংশয় আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। ভোটারদের অনিশ্চয়তায় ফেলাই ট্রাম্পের লক্ষ্য হয়ে থাকলে সেদিক তিনি সফল হয়েছেন বলা যায়। হিলারি বলেছেন, ট্রাম্প গণতন্ত্রের সম্মান নষ্ট করছেন। মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য তাঁর এই বক্তব্য এক ধরনের হুমকি। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকার, গর্ভপাত ও কর নিয়ে দুই প্রার্থীর মধ্যে বিতর্ক জমে। অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নের পক্ষে আবার আওয়াজ তোলেন ট্রাম্প। হিলারি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হিলারি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনার প্রচার করছেন। এগুলো সব বানোয়াট কাহিনী। এরপর করের প্রসঙ্গ আসে। হিলারি বলেন, কর পরিশোধ করে ট্রাম্প এই বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে পারেন। এ সময় ট্রাম্প বলে ওঠেন, হিলারি একজন নিকৃষ্ট স্বভাবের নারী। পুতিন প্রসঙ্গ ॥ হিলারি অভিযোগ করেন ট্রাম্পকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তিনি হবেন পুতিনের হাতের পুতুল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিতর্কে হিলারি বলেন, রুশ সাইবার হামলার লক্ষ্য ছিল তার দল ও নির্বাচনী প্রচার এবং তিনি দাবি করেন, এজন্য ট্রাম্প দায়ী। তিনি বলেন, তারা আমেরিকান ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে, আমেরিকার জনগণের ব্যক্তিগত এ্যাকাউন্ট ও প্রতিষ্ঠানের এ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছে। তারপর সেগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ইন্টারনেটে ছাড়ার জন্য তারা উইকিলিকসকে দিয়েছে। ট্রাম্প গোয়েন্দা রিপোর্টগুলো প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এ বিষয়ে আমাদের দেশের কোন ধারণাই নেই। বিতর্কে পুতিনের সঙ্গে সখ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভাল বোঝাপড়া করতে পারবেন, যা হিলারির পক্ষে সম্ভব নয়। ট্রাম্প বলেন, পুতিন আমার সম্পর্কে চমৎকার সব কথা বলেছেন। অন্যদিকে হিলারির প্রতি তার কোন শ্রদ্ধা নেই, সম্মান নেই আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্টের প্রতিও। আমি আপনাদের বলতে চাই, আমরা কিন্তু গভীর সঙ্কটে আছি। এ সময় হিলারি বলেন, এর কারণ পুতিনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো একজন পাপেট আছে। ট্রাম্প এর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি নই, আসল পাপেট আপনি। প্রতিটি পদক্ষেপে আপনাকে ও ওবামাকে ধরাশায়ী করেছে পুতিন। তবে সঙ্গে সঙ্গেই হিলারি এর জবাবে বলেন, তার মানে এটি স্পষ্ট যে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব সাইবার হামলা হয়েছে সেজন্য আপনি রাশিয়াকে দায়ী করতে চান না। ট্রাম্প সেনাবাহিনী ও বেসামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যারা আমাদের রক্ষা করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তাদের চেয়েও পুতিনকে বেশি বিশ্বাস করেন। তিনি আরও বলেন, আপনি আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাবৃত্তি উৎসাহিত করছেন। পুতিনের পথেই আপনি হাঁটতে ইচ্ছুক, তার অভিলাষ তালিকা অনুমোদন করে ন্যাটো ভাঙতে চান।
×