ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাংবাদিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

জাতির প্রতি দায়িত্ব পালনে আরও সচেতন হোন

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২১ অক্টোবর ২০১৬

জাতির প্রতি দায়িত্ব পালনে আরও সচেতন হোন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। তবে দেশের প্রতি সকলের একটা দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। সমাজের প্রতি সাংবাদিকদের যে দায়িত্ব রয়েছে তা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। সুবিধা ভোগ করবেন অথচ দায়িত্ব পালন করবেন না; এটা হতে পারে না। এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। আর গণতন্ত্রের নীতিমালা থাকবে, সাংবাদিকদের নীতিমালা থাকবে না; সেটি হতে পারে না। দেশে সাংবাদিকদের জন্য নীতিমালা আছে, তাদের সেই নীতিমালা মেনে চলতে হবে। জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে নতুন ভবন ৩১ তলাবিশিষ্ট ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা নেই বলে সমালোচকদের অভিযোগের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বিষয়টি আসলে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা। এদেশে সাংবাদিকতার যথেষ্ট স্বাধীনতা রয়েছে। যদিও আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে বলে বেড়ান, এদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, স্বাধীনতা না থাকলে তারা কীভাবে এ কথাগুলো বলছেন? তাদের অভিযোগের কথা কিভাবে প্রকাশ হচ্ছে? পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন ও টকশোতেও কিভাবে এত লেখা ও সমালোচনা করা হচ্ছে? বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সম্পদ বিক্রি করে, মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি শেখ হাসিনা করে না। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশের সম্পদ, কোন এক বড় দেশ তারা সেই সম্পদ তুলবে, আরেক দেশ বিক্রি করবে। সম্পদের মালিক বাংলাদেশ, বেচবে একজন কিনবে আরেকজন। আমি তাতে রাজি হইনি। ওটাই ছিল আমার অপরাধ, সে জন্য ক্ষমতায় আসতে পারিনি। অথচ ভোট আমরাই বেশি পেয়েছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমার কি অপরাধ ছিল? দেশে কি তখন উন্নয়ন করিনি? অবশ্যই উন্নতি হয়েছিল। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল, বিদ্যুত উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম, বড় বড় রাস্তাঘাট, ব্রিজ, পুল তৈরি করেছিলাম। দেশকে এগিয়ে নিয়েছিলাম। তারপরও ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। তিনি বলেন, এদেশের সম্পদ, এদেশের মানুষের কাজে আগে লাগবে। মানুষের জন্য আগে ব্যবহার হবে; তারপরই বিক্রির বিষয়টি আসবে। সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্য হলো এমন কিছু দলের সঙ্গে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয় যারা মাটি ও মানুষের মধ্য থেকে গড়ে ওঠেনি। তারা সৃষ্টি হয়েছে: কোন একদিন আমরা টেলিভিশন খুলে দেখতে পেলাম, কেউ একজন ঘোষণা দিচ্ছেন, আজ থেকে আমি রাষ্ট্রপতি হলাম। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল এবং মার্শাল ল’ দিয়ে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা। তিনি বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশে এভাবেই হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র আর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি চলেছিল। গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যিনি সংবাদপত্রের মালিক হন তিনিই সম্পাদক হয়ে যান। তাই মালিকানাটা যেহেতু নিজের হাতে থাকে সেখানে সাংবাদিকতার সুযোগটা যে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়; এতে কোন সন্দেহ নেই। মালিক সম্পাদক হলে সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের মধ্যে থাকে না। যে কারণে আমি সব সময় সাংবাদিকতার স্বাধীনতার কথা বলে থাকি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার চেয়ে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা বেশি জরুরী। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার গঠনের পর থেকেই কিভাবে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করা যায় সেই প্রচেষ্টা আমাদের রয়েছে। সেই ১৯৯৬ সাল থেকেই সে প্রচেষ্টা করে যাচ্ছি। এজন্য সাংবাদিকদের কল্যাণে অনেক আইন আমরা করেছি। তথ্য অধিকার আইন আমরা করে দিয়েছি। তথ্য কমিশন করে দিয়েছি। সিড মানি দিয়ে সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ টাস্ট আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এভাবে ১৮টি আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন ও সংস্কার আমরা করে দিয়েছি। সংবাদপত্রকে আমরা সেবাশিল্প খাত হিসেবে ঘোষণা করেছি। ৮ম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করেছি। এখন অনেকে আবার কিছু চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৭ বছরে নিবন্ধন দেয়া পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে সাত শতাধিক। বর্তমানে দেশে বেসরকারী খাতে অনুমোদনপ্রাপ্ত স্যাটেলাইট চ্যানেলের সংখ্যা ৩১টি। সম্প্রচাররত চ্যানেলের সংখ্যা ২৬টি। এরপর রেডিও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, এসব চ্যানেলে যে টকশো হয় তা শুনলে কে বলবে যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই বা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নেই? তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি সংগঠন যে সংগঠন গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য একদম তৃণমূল থেকে এই সংগঠনটা গড়ে উঠেছে। দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ সরকারে গেছে। তিনি বলেন, ক্ষমতায় এসেই তারা (স্বৈরশাসকরা) প্রথম বক্তৃতায় বলে, তারা কোন রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে আসেনি বরং দেশটা সঠিকভাবে চলছে না, সেটাকে সঠিকভাবে চালাতেই তারা ক্ষমতায় এসেছে। এরপর তারা রাজনীতিকদের গালিটালি দিয়ে আরম্ভ করলেও নিজেরাই পরে রাজনীতিবিদ সেজে যায়। নিজেরা রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার কাজে লেগে যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেনারেল আইয়ুব খান, জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ প্রত্যেকেই এই পদাঙ্ক অনুসরণ করেই চলেছে। অর্থাৎ ক্ষমতায় বসে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল সৃষ্টি হয় তা মানুষের আর কতটুকু কল্যাণ করতে পারে? তারা পারে কেবল নিজেদের আখের গোছাতে। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় প্রেসক্লাব প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপনারা জানেন- আমাদের প্রেসক্লাবের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাসের সঙ্গে জাতির পিতার সম্পৃক্ততা ছিল। আমিও একজন সাংবাদিক পরিবারেরই সদস্য। কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকার তৎকালীন পূর্ববঙ্গের প্রতিনিধি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এ সম্পর্কে অনেক কথাই লিখেছেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগ মেজরিটির যুক্তফ্রন্ট সরকার ১৮, তোপখানা রোডের লাল দোতলা ভবনটি (বর্তমান স্থানের আগের অবকাঠামো এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ক্ষতিগ্রস্ত) ‘পূর্ব পাকিস্তান প্রেসক্লাব’র নামে বরাদ্দ দেন। ২০ অক্টোবর সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ দেখা করেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। ওই বৈঠকে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম জাতীয় প্রেসক্লাব। আর আজ ৬২ বছর পরে সেই জমিতেই প্রেসক্লাবের আধুনিক ভবন নির্মাণ হচ্ছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। সেই পথে সাংবাদিকদের সহযোগিতাও চাই। প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার প্রেসক্লাবে আগমনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৭২ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় জাতির পিতা তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘গণতন্ত্রের একটা নীতিমালা আছে। সাংবাদিকতারও একটা নীতিমালা আছে। এ দুটো মনে রাখলে আমরা অনেক সমস্যা সমাধান করতে পারব।’ প্রেসক্লাবের জায়গাটিও সাংবাদিকদের জন্য চূড়ান্ত বরাদ্দ প্রদানে বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে প্রেসক্লাবের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণও করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেন, তিনি খালি হাতে প্রেসক্লাবে আসবেন না, জমি বরাদ্দের চূড়ান্ত কাগজ নিয়েই তবে তিনি আসবেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, নানা প্রক্রিয়া শেষে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু লিখিতভাবে প্রেসক্লাবে জমির চূড়ান্ত লিজ বরাদ্দ দেন। কিন্তু পঁচাত্তরের আগস্টে নির্মমভাবে জাতির পিতার হত্যাকা-ের ফলে ওই জমি আর তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবকে হস্তান্তর করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর থেমে যায় নতুন জমিতে ক্লাব ভবন নির্মাণের সমস্ত প্রক্রিয়া। প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য অনুদান নিয়ে বড় মিডিয়া হাউজগুলোর এগিয়ে না আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমি চিরদিন থাকব না। কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য স্থায়ী কিছু করে দিয়ে যেতে চাই; যাতে কর্তব্য পালনকালে বা অবসরকালীন সাংবাদিকরা অসুস্থ হলে বা অসুবিধায় পড়লে এই ফান্ড তাদের কাজে আসে। এ সময় সকলকে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে তিনি এগিয়ে আসারও আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি যা করার সেটা তো করবই আপনাদেরও উদ্যোগ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অনলাইন সংবাদপত্রের সংখ্যা বেশি, ‘কাগজের সংখ্যা বা গুরুত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে আমরা যারা এখনও পুরনো যুগের মানুষ সকালবেলা উঠে পত্রিকাটা হাতে না পেলে মনটা খারাপ লাগে। ১ কাপ চা আর একটা পত্রিকা, আমাদের যাদের অভ্যাস আছে, তাদের জন্য এটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ, কত প্রয়োজন! কিন্তু আজকের ছেলেমেয়েরা ল্যাপটপ নিয়ে বসে, ওখানেই বসে দেখে, ওখানে বসেই পড়ে। এটা হলো বাস্তবতা।’ প্রযুক্তির যুগের সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, প্রযুক্তিতে আসতে হবে, বিশ্বের সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়ন হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বিদেশীরা জানতে চান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা জিজ্ঞেস করে আমাদের উন্নয়নের ম্যাজিক কি? আমি বলি ম্যাজিক কিছু না, এটা হলো আমরা দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসি। দেশপ্রেম নিয়ে এবং জনগণের কল্যাণের চিন্তা করেই কাজ করি বলেই এত উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেড় গড়ে তোলার আকাক্সক্ষা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে প্রতিটি কাজ ও জিনিসই হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ; যাতে বিশ্ববাসী দেখে, বাঙালী পারে, বাঙালীই পারবে। একটি বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই। অবশ্যই আমাদের উচ্চাভিলাষ নয়, উচ্চাকাক্সক্ষা থাকতে হবে; না হলে দেশ কীভাবে এগুবে। এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে প্রবেশ করেই প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলেই খ্যাতনামা রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ‘বড় আশা করে এসেছি গো কাছে ডেকে লও, ফেরাও না জননী’ এই অভ্যর্থনা সঙ্গীত এবং ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ দেশাত্মবোধক গানটি গেয়ে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। মঞ্চে আসনগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গান দুটির সঙ্গে ঠোঁট মেলান। জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, এডিটর্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার এবং প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। প্রসঙ্গত, পুরো ২ দশমিক ০৬ একর জমি নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স’র নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। ভবনটির প্রতিতলার আয়তন ১৯ হাজার ৮০০ বর্গফুট। প্রথম ১০ তলা সম্পূর্ণ প্রেসক্লাব এবং মিটিং, কনফারেন্সের ভাড়ার জন্য ব্যবহার হবে। ১১ তলা থেকে ২৮ তলা পর্যন্ত বিভিন্ন সংবাদপত্র, দেশী-বিদেশী সংস্থা, টিভি, রেডিওর জন্য ভাড়া দেয়া যাবে। ২৯ তলা থেকে ৩১তলা পর্যন্ত হেলথ ক্লাব, সুইমিংপুল, জিমন্যাসিয়াম ইনডোর গেমস, গেস্ট হাউস, ডাইনিং হল, সিনেপ্লেক্স ইত্যাদির জন্য বরাদ্দ। ভূমিকম্প সহায়ক নির্মাণশৈলীর প্রয়োগে নির্মাণাধীন কমপ্লেক্সটির পুরো ওপেন স্পেসে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করে এক লেভেল উপরে প্লাজার সৃষ্টি করা হয়েছে, সামনে সৌন্দর্য বর্ধনে রাখা হয়েছে ঝর্ণা। ৩১তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলে পূর্বদিকের চারতলা এনেক্স ভবন নির্মাণ করে নামাজের ঘর, ইউনিয়ন অফিস, ভাড়ার জন্য ছোট-বড় মিটিং রুমসমূহ শিফট করা হবে। বর্তমানে প্রেসক্লাবে যেসব গাছ রয়েছে, ডিজাইনের ক্ষেত্রে সে সমস্ত গাছ যথাসম্ভব না কেটে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ডিজাইনে কমপ্লেক্স এলাকায় সবুজ গাছপালা রয়েছে।
×