ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদপত্রের চেয়ে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বেশি জরুরি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৮:৪৭, ২০ অক্টোবর ২০১৬

সংবাদপত্রের চেয়ে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বেশি জরুরি: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার চেয়ে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বেশি জরুরি। কারণ দেখা যাচ্ছে, মালিক-সম্পাদক অনেক ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি। এ কারণে চাইলেই সাংবাদিকেরা সবকিছু করতে পারছেন, তা তো নয়। তাই সাংবাদিকদের স্বাধীনতাই বেশি প্রয়োজন। এসময় তিনি বলেন, সংবাদপত্রের মালিকরাই সম্পাদক হয়ে গেলে তাতে সাংবাদিকতার সমস্যা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ৩১ তলা ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স’ এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি এসময় আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দেশে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নেই বলে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা পাচ্ছেন না- এই কথাগুলো কীভাবে বলেন যদি স্বাধীনতা নাই থাকে তো। সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবাদপত্রের কর্মীদের ইতোমধ্যে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরবর্তী ওয়েজ বোর্ড নিয়ে সাংবাদিকদের দাবি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে তো যিনি মালিক, তিনিই হয়ে যান সম্পাদক। মালিক সম্পাদক হলে সাংবাদিকতার সুযোগটা সেখানে মাঝে মাঝে একটু বাধাগ্রস্ত হয়, তাতে কোনো সন্দেহ নাই। দেশে সংবাদমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা নেই বলে সমালোচকদের অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আসলে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতা যদি নাই থাকবে, তাহলে তাদের অভিযোগের কথা কীভাবে প্রকাশ হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলেন সরকার প্রধান। প্রযুক্তির পরিবর্তনে অনলাইন সংবাদমাধ্যমের বিস্তার এবং পাঠোভ্যা স বদলে যাওয়ার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা যারা আছি, সকালে এক কাপ চা আর পত্রিকা যে কত গুরুত্বপূর্ণ... আজকের ছেলে-মেয়েরা কিন্তু ট্যাবেই সব দেখে আর পড়ে। তিনি বলেন, সংবাদপত্রকে এবং সাংবাদিকদের যত রকম সুবিধা দেওয়া যায়, সব ব্যবস্থা আমরা করেছি। এতোগুলো মিডিয়াতে কর্মসংস্থান হচ্ছে। উন্নয়নে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। সেই ’৯৬ সাল থেকেই সাংবাদিকদের সহযোগিতার চিন্তা-ভাবনা আমরা করেছি। কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি, আইন হয়েছে, ওয়েজ বোর্ড চলছে অষ্টমে আরও নানান কিছু। প্রেসক্লাবের জায়গা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই জায়গাটা যাতে প্রেসক্লাব পায় এই ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু করেছেন। লিখিতভাবে প্রেসক্লাবের জমি লিজ দিয়েছিলেন তিনি। তাকে হত্যা করা হলো, এরপর থেকে আর উন্নতি সেভাবে হয়নি। মনজুরুল আহসান বুলবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি গোলাম সারওয়ার ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী। জানা গেছে, ৩১তলা ওই আধুনিক কমপ্লেক্সে সিনেপ্লেক্স, লাইব্রেরি, মিডিয়া মিউজিয়াম, গেস্ট হাউস, ডরমিটরি, আইটি রুম, সবুজ বাগান প্রভৃতি থাকবে। কয়েকটি ফ্লোর বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হবে। এসব ফ্লোর দেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেওয়া হবে। ভবনের মাঝখানে থাকবে খালি জায়গা।জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৩১তলা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরের স্পেস হবে ২২ হাজার বর্গফুট। এ ভবনের ছাদে থাকবে একটি শক্তিশালী হেলিপ্যাড। যেকোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করতে চাইলে হেলিকপ্টারে এসে ছাদে নেমে বিশেষ লিফটের মাধ্যমে কনফারেন্স কক্ষে চলে যেতে পারবেন ভিআইপিদের জন্য নতুন ভবনে থাকবে বিশেষ লিফট। গাড়িতে এসেও ওই লিফটে করে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কনফারেন্স কক্ষে যেতে পারবেন বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, ১৯৫৪ সালে এই দিনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়।
×