ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র

উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২০ অক্টোবর ২০১৬

উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির পড়াশোনা

(পূর্ব প্রকাশের পর) খ. সংগ্রামী কার্যাবলী (গরষরঃধহঃ ঋঁহপঃরড়হং): শ্রমিক সংঘ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি- দাওয়া আদায়ের জন্য যে সব সংগ্রামী কার্যক্রম করে তা হলো ৮. চাকুরির নিরাপত্ত: মালিকপক্ষ অবৈধভাবে, খেয়াল খুশিমত যাতে শ্রমিক ছাঁটাই করতে না পারে, সেই ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখে। ৯. চাকুরির শর্তাবলি উন্নত করা: শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা হ্রাস, কারখানার পরিবেশ উন্নয়ন, পেনশন, বোনাস, পদোন্নতি প্রভৃতি অনুকূল দাবি আদায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। ১০. ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ: আমাদের দেশের মত অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহ শ্রমের যোগান বেশি হওয়ার মজুরি অত্যন্ত কম হয়। এমতাবস্থায় শ্রমিক সংঘ কর্তৃপক্ষকে মজুরি নির্ধারণে বাধ্য করে। ১১. কাজের সময়সীমা হ্রাস: শ্রমিক সংঘ শ্রমিকদের প্রতিদিনের কাজের ন্যূনতম সময় সীমা কর্তৃপক্ষের কাজ থেকে আদায় করে দেয় এবং অতিরিক্ত কাজের জন্য মজুরি আদায়ের ব্যবস্থা করে থাকে। ১২. শোষণ ও নির্যাতন বন্ধ: শ্রমিক সংঘ শ্রমিক শোষণ, নির্যাতনবন্ধ, শিশু শ্রমিক ও নারী শ্রমিকদের নির্যাতন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। ১৩. বীমা ব্যবস্থা প্রচলন: শ্রমিকদের ঝুঁকি এড়াতে ও শ্রমিকদের নিধাপত্তা নিশ্চিত করতে শ্রমিক সংঘ মালিক পক্ষকে বীমা প্রথা প্রচলন বাধ্য করে। ১৪. কাজের পরিবেশ উন্নত করা: শ্রমিক সংঘ মালিক পক্ষকে বুঝিয়ে কাজের পরিবেশকে উন্নত করে থাকে। ১৫.ন্যায্য মজুরি: শ্রমিক সংঘ মালিক পক্ষের সাথে দরকষাকষির মাধ্যমে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি আদায় করে থাকে। গ) রাজনৈতিক কার্যাবলী (চড়ষরঃরপধষ ঋঁহপঃরড়হং): শ্রমিক সংঘ শ্রমিকের স্বার্থরক্ষার জন্য রাজনৈতিক বিভিন্ন কার্যাবলীতে অংশ গ্রহণ করে থাকে তা নিচে আলোচনা করা হল: ১৬. আইন প্রণয়: শ্রমিক সংঘ বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরি আইন, কারখানা আইন, ক্ষতিপূরণ আইন প্রভৃতি আইন সভার মাধ্যমে পাশ করার চেষ্টা করে। ১৭. দল গঠন: শ্রমিকসংঘ শ্রমিক স্বার্থরক্ষার জন্য রাজনৈতিক দলগঠন করে এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে চেষ্টা করে। ১৮. আইনসভায় প্রতিনিধি প্রেরণ: শ্রমিক সংঘ তাদের স্বার্থ কথা বলার জন্য অনেক সময় জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আইনসভায় প্রতিনিধি পাঠানো প্রচেষ্টা নেয়। ঘ) আপসমূলক কার্যাবলি: অনেক সময় শ্রমিক সংঘ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে না পারলে মালিক পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের সর্বোচ্চ সুযোগ- সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করে। উপরের আলোচনা থেকে এটা স্পষ্টত যে, শ্রমিক এমন একটি সংঘ যার দ্বারা শ্রমিকরা একতাবদ্ধভাবে মালিকদের কাছ থেকে ন্যায্য পাওনা আদায়সহ সার্বিক উন্নয়নে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে শ্রমিক সংঘ যৌক্তিক ভূমিকা পালন করলে শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও উন্নতি অর্জিত হবে। শ্রমিক সংঘ কি মজুরি বৃদ্ধি করতে পারে? উল্লেখিত প্রশ্নোত্তরে অর্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ক্ল্যাসিক্যাল অর্থনীতিবিদদের মতে, শ্রমিক সংঘ কখনই স্থায়ীভাবে মজুরি বাড়াতে পারে না। কারনগুলো নিম্নরূপ- ক. মজুরি বৃদ্ধি পেলে দ্রব্যের দাম বাড়বে ফলে চাহিদা কমবে। উৎপাদন হ্রাস পাবে ফলে শ্রমের চাহিদার কমবে ও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। খ. শ্রমিকের পরিবর্তে মূলধন নিবিড় উৎপাদন পদ্ধতির কারণে শ্রমিকসংঘ মজুরি বৃদ্ধি আন্দোলন করতে পারবে না।
×