ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল ॥ আবাহনী ২-০ রহমতগঞ্জ

অবশেষে রহমতগঞ্জকে থামাল আবাহনী

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২০ অক্টোবর ২০১৬

অবশেষে রহমতগঞ্জকে থামাল আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রূপকথার মতো অবিশ্বাস্য খেলে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। অবশেষে তাদের সেই দুরন্ত গতি থেমেছে। থামিয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে এতদিন ধরে অপরাজিত থাকা রহমতগঞ্জকে ২-০ গোলে হারিয়েছে আরেক অপরাজিত দল আবাহনী। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই খেলার প্রথমার্ধের স্কোরলাইন ছিল ০-০। এই জয়ে রহমতগঞ্জের কাছ থেকে শীর্ষস্থানটি দখল করে নিল আবাহনী। ১১ ম্যাচে এটা তাদের ষষ্ঠ জয়। ২৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এলো তারা। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রহমতগঞ্জ (এ পরিসংখ্যান বুধবার অনুষ্ঠিত ব্রাদার্স-চট্টগ্রাম আবাহনী ম্যাচের আগ পর্যন্ত, জিতলে চট্টগ্রাম আবাহনী চলে যাবে শীর্ষে)। হারলেও রহমতগঞ্জের লড়াকু খেলা সবার প্রশংসা কুড়ায়। যদিও তুলনামূলক বেশি আক্রমণ করে পেশাদার লীগের চারবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। আক্রমণ সামলে পালটা আক্রমণ করে রহমতগঞ্জও। কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো সফল হয়নি। ১৪ মিনিটে রহমতগঞ্জের জাত্তা মোস্তফার দূরপাল্লার জোরাল শট আবাহনী গোলরক্ষক হিমেল রুখে দেন। ২৮ মিনিটে আবাহনীর লি টাক কর্নার করেন। রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে ফেরত আসে টাকের কাছেই। বল নিয়ে তিনি বক্সে ঢুকেই বাঁ পায়ের গড়ানো শট নেন। কিন্তু পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে বল চলে যায় মাঠের বাইরে। ৩১ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে আবাহনীর ওয়ালী ফয়সালের উঁচু লব ধরে বক্সের ভেতর থেকে জোরালো হেড করেন সানডে চিজোবা। গোলরক্ষক মাসুম পাঞ্চ করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন দলকে। ৩৮ মিনিটে লি টাকের ফ্রি কিক থেকে হেমন্ত বলের গতি পরিবর্তন করেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। ৪০ মিনিটে রহমতগঞ্জের সিও জুনাপিও প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে পোস্টে শট নিলেও তা গোলরক্ষকের গ্রিপে চলে যায়। ৪৫ মিনিটে আবাহনীর ইমন বাবুর ডানদিকের বাড়ানো বলে হেমন্ত ফাঁকায় বারের ওপর দিয়ে মেরে সুযোগ হেলায় হারান। ইনজুরি সময়ে সানডে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে গোলরক্ষকের গায়ে মেরে নষ্ট করেন। ৪৭ মিনিটে সতীর্থ জুয়েল রানার কাছ থেকে পাস পান সানডে। বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে বল প্লেসিং করে জালে পাঠান। এগিয়ে যায় আবাহনী (১-০)। ৪৮ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে সিয়ো জুনাপিওর গড়ানো ক্রস। পা ছোঁয়ালেই গোল হয়Ñ এমন পজিশনে থেকেও বলে পা লাগাতে পারেননি হুমড়ি খেয়ে পড়া নয়ন। ৫৫ মিনিটে ফ্রি কিক পায় রহমতগঞ্জ। জাত্তা মুস্তাফার উঁচু শট জালে প্রবেশ করার ঠিক আগ মুহূর্তে বলটা কোনমতে ফিস্ট করে এ যাত্রা আবাহনীকে বাঁচান গোলরক্ষক সোহেল। ৯৪ মিনিট রহমতগঞ্জ গোলরক্ষক মাসুমকে বেশ খানিকটা এগিয়ে থাকতে দেখে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে (আনুমানিক ৬০) বল পেয়ে সানডে উঁচু লম্বা শট নেন গোলপোস্ট লক্ষ্য করে। বিপদ দেখে মাসুম দ্রুত ফিরতে চাইলেন পোস্টে। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলেন না। এক ড্রপ খেয়ে বল ঢুকে গেল জালে (২-০)! কোন সন্দেহ নেই, এটাই এই লীগের অন্যতম সেরা গোল। এই গোল করে (১০টি) নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে উঠে গেলেন লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের এক নম্বর তালিকায়। পেছনে ফেললেন শেখ জামালের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে এবং ব্রাদার্সের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এনকোচা কিংসলেকে। কিন্তু নাটক তখনও বাকি ছিল। আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলকে ফাউল করেন প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়। তিনি একটু বেশিই ব্যথা পাবার ভান করেন। রেফারি হলুদ কার্ড দেখালে খেপে উঠেন সোহেল। অবশেষে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তিন ফুটবলার পরিবর্তন করে ফেলায় আর গোলরক্ষক নামানোর সুযোগ ছিল না আবাহনীর। ফলে গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন ডিফেন্ডার শাকিল আহমেদ। মজার ব্যাপারÑ শাকিল গ্লাভস ছাড়াই গোলকিপিং করেন! যদিও তাকে কোন পরীক্ষায় পড়তে হয়নি। শেষ পর্যন্ত লীগে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুণœ রেখে, পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ওঠার আনন্দ নিয়ে এবং পূর্ণ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয় জর্জ কোটানের শিষ্যরা।
×