ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুশফিক-কুকের টেস্ট পরীক্ষা শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২০ অক্টোবর ২০১৬

মুশফিক-কুকের টেস্ট পরীক্ষা শুরু আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংল্যান্ডের লক্ষ্য একটাই, জয় তুলে নেয়া। আর বাংলাদেশের লক্ষ্য স্বাভাবিকভাবেই যে করেই হোক হার এড়ানো। মানে ড্র করা। বাংলাদেশের সেই হার এড়ানোর টেস্টই শুরু হচ্ছে আজ। বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে। শুধু এই টেস্টই নয়, ২৮ অক্টোবর যে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে, সেই টেস্টেও বাংলাদেশের লক্ষ্যতো একটাই থাকছে। সেই লক্ষ্য পূরণ হলেও বাজিমাত হবে বাংলাদেশেরই। পারবে বাংলাদেশ বাজিমাত করতে? হার এড়ানো মানেই হচ্ছে ড্র করা। সেটিতো খুবই সম্ভব। এর আগেও বাংলাদেশ দল তা করে দেখিয়েছে। ইতিহাস বলছে ড্র সম্ভব। এজন্য আসল কাজটি ব্যাটসম্যানদেরই করতে হবে। ইংল্যান্ড দলের ব্যাটসম্যানদের যে রুখে দেয়া কঠিন, তা সবাই বোঝে। তাই টেস্ট বাঁচাতে হলে, হার এড়াতে হলে; বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদেরই যা করার করতে হবে। এক ইনিংসে দুটি শতক কিংবা দুটি বড় জুটিই এর জন্য যথেষ্ট। এর আগে বাংলাদেশ যে ১৫টি টেস্টে ড্র করেছে, সেগুলোর মধ্যে ৯টি টেস্ট বৃষ্টিতে ড্র হয়েছে। আর ৬টি টেস্ট যে দাপটে খেলেই ড্র করেছে; তা থেকেই এখন বোঝা যাচ্ছে। ২০০০ সালে টেস্টে পা রাখার পর থেকে যে ১৫টি টেস্টে ড্র করেছে বাংলাদেশ, এর মধ্যে ৬টি টেস্টেতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দারুণ খেলেই ড্র করেছে। ২০০৪ সালে যেমন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে হাবিবুল বাশার সুমনের ১১৩ ও মোহাম্মদ রফিকের ১১১ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে পাইলটের ১০৩ রানে টেস্ট ড্র করে। ২০০৫ সালে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ড্র টেস্টে মোহাম্মদ রফিক ৫৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে নাফিস ইকবাল ১২১ ও রাজিন সালেহ অপরাজিত ৫৬ রান করে ম্যাচ বাঁচিয়ে দেন। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুল ১৯০, মুশফিকুর রহীম ২০০ ও নাসির হোসেন ১০০ রান করার পর যে বাংলাদেশ ৬৩৮ রান করে, তাতেই টেস্ট ড্র হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একই বছর মুমিনুল হকের ১৮১, মুশফিকুর রহীমের ৬৭ ও সোহাগ গাজীর অপরাজিত ১০১ রানে টেস্ট ড্র করা সম্ভব হয়। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শামসুর রহমান শুভ’র ১০৬, ইমরুল কায়েসের ১১৫ ও সাকিব আল হাসানের ৫০ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হক যে ১০০ রান করেন, তাতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো দাপটে খেলে ড্র করে বাংলাদেশ। গতবছর পাকিস্তানের বিপক্ষেতো আরও দুর্দান্ত খেলে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হক ৮০ ও ইমরুল কায়েস ৫১ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবাল ২০৬ ও ইমরুল ১৫০ রান করেন। ৩১২ রানের বাংলাদেশের ইতিহাস সেরা জুটিও গড়েন। এর সঙ্গে সাকিবের অপরাজিত ৭৬ রান যোগ হওয়ায় টেস্ট ড্র করা সম্ভব হয়। একই বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তামিমের ৫৭, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ৬৭ ও লিটন কুমার দাসের ৫০ রানে ম্যাচটি ড্র’র দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে খেলা শেষ হতে পারেনি। বাংলাদেশ দলে শতক করার মতো ব্যাটসম্যানের অভাব নেই। শুরুতেই তামিম ও ইমরুল বড় জুটি এর আগেও গড়ে দেখিয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে গতবছরই ৩১২ রানের জুটি গড়েছেন। দুইজনই আবার শতক করেছেন। তাতে ম্যাচ ড্র হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও যদি তা করা যায়, তাহলেতো ম্যাচ ড্র হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এরপর মুমিনুল হকতো টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানই। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আছেন। যিনি বড় ইনিংস খেলার যোগ্যতা রাখেন। আর মুশফিকুর রহীমতো বাংলাদেশ ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২০০ রানের ইনিংসটি খেলেই রেখেছেন। সাকিব আল হাসানের তো তুলনাই হয় না। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ, সাব্বির রহমান রুম্মনরাও আছেন। বড় ইনিংস খেলতে পারলেই হলো। যদি ইংলিশ বোলারদের তোপে বাংলাদেশের ব্যাটিং স্তম্ভ ছন্নছাড়া না হয়ে পড়ে, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ইনিংসে যে কোন দুইজন শতক এবং দুটি বড় জুটি হলে ড্র অসম্ভব নয়। আর ড্র হলেইতো অনেক বড় প্রাপ্তি মিলে যায়। বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমও তাই ভাবছেন, ‘আপনি যদি খেয়াল করেন, বাংলাদেশ দলে ব্যাটিংয়ে ৫-৬ জন তিনটা ফরমেটেই খেলে। সেদিক থেকে বলব যে এটা একটা লাক্সারি আছে। সবাই ফর্মে আছে। ইমরুল বলেন, সাকিব বলেন, তামিম বা রিয়াদ ভাই, মুমিনুল সবাই ফর্মে আছে। অবশ্যই তাদের দিকে তাকিয়ে আছি। আশাকরি ওরা ভাল খেলবে। টপ ফোরে কেউ যদি বড় ইনিংস খেলতে পারে, প্রথম ইনিংসে যদি আমরা তিন শ’র বেশি রান করতে পারি, এটা আমাদের জন্য হবে বিগ প্লাস।’ এখন দেখা যাক, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা চার টেস্ট সিরিজে পাত্তা না পেলেও, এবার কি করে বাংলাদেশ।
×