ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-দিল্লী অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২০ অক্টোবর ২০১৬

ঢাকা-দিল্লী অঙ্গীকার

বাংলাদেশ-ভারতের সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন পরীক্ষিত বন্ধুসুলভ রাষ্ট্র হিসেবে, তেমনি উভয় দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায়ও। দু’দেশের জনগণই প্রত্যাশা করে দেশ দুটির মধ্যে সৎ ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক। আর সেক্ষেত্রে তিস্তার পানি বণ্টন, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করা, সীমান্তে নিরীহ মানুষ হত্যাসহ খুঁটিনাটি আরও বিষয় রয়েছে। যেগুলোর সমাধান খুবই জরুরী। অবশ্য সমাধানের বিষয়ে উভয় দেশের আন্তরিকতা ও উদ্যোগ রয়েছে। যদিও বাস্তব কিছু কারণে সমাধানে সময় নিচ্ছে। তা সত্ত্বেও এ কথাও সত্য; দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিকট-অতীতে যে শীতলতা নেমে এসেছিল, বর্তমান সরকারের দু’দফা ক্ষমতাকালে তা প্রায় সর্বাংশে হ্রাস পেয়েছে এবং সম্পর্ক এক নতুন মাত্রায় ও উচ্চতায় আরোহণ করেছে। এমন অবস্থায় ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে দু’দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যেসব আশ্বাস উঠে এসেছে, সে বিষয়ে নতুন করে আশাবাদী হয়েছে দু’দেশের মানুষ। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে উভয় দেশ অভিন্ন কণ্ঠে তা নির্মূলে সার্বিক সহযোগিতার বিষয়টিকে আবারও গুরুত্ব প্রদান করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একমত হয়েছেন যে, অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ একটি প্রধান বাধা। এসব মোকাবেলায় দুই দেশ একযোগে কাজ করায় জঙ্গীবাদ হ্রাস পেয়েছে। সন্ত্রাসবাদ যেহেতু লগ্নির গতিপথে এক প্রধান অন্তরায়, সেহেতু উভয় দেশ কোনভাবেই তা বরদাশ্ত করতে পারে না। জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশ অনুসৃত মডেল সম্পর্কে শেখ হাসিনা মোদিকে অবহিত করেছেন। দুজনের মধ্যে প্রত্যাশিতভাবেই প্রায় সব দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়েই কথাবার্তা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে তিস্তার পানি বণ্টন বিষয়ে চুক্তির রূপরেখা আলোচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই নেতা উন্নয়নের পথে একসঙ্গে হেঁটে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ চায় অবিলম্বে তিস্তাচুক্তি। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপত্তির বিষয় নিষ্পত্তির দায়িত্ব নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি আলাদা। যেখানে রাজ্য সরকারকে পাশ কাটিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কিছুই করার থাকে না। এ কথা সত্য যে, পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের স্বার্থে উভয় দেশকে একে অন্যের প্রতি আস্থার প্রতিফলন ঘটাতে সচেষ্ট। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুদেশ পরস্পরের পাশে দাঁড়াতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সন্ত্রাসবাদের সূতিকাগার পাকিস্তান সম্পর্কে দুদেশই ক্ষুব্ধ তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে। শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের মাটিতে ভারতবিরোধী সশস্ত্র তৎপরতা চালাতে দেয়া হবে না। সব মিলিয়ে দুদেশ পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখলে উন্নয়নের রথ অধিক সচল হতে বাধ্য।
×