ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুমান হাফিজ

অমর্যাদা কেন?

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২০ অক্টোবর ২০১৬

অমর্যাদা কেন?

প্রতিদিনের খবরের কাগজ চোখ বুলাতেই যে খবরটি আঘাত করে বারবার, তা হলো নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা। যা আমাদের সমাজের নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইদানীং এর মাত্রাটা আরও বহুগুণে বেড়েছে। তুচ্ছ কোন কিছুকে কেন্দ্র করে গুম-খুন, হত্যা, ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজটা করতেও পিছপা হচ্ছে না মানুষ নামধারী কিছু নরপশু! নারী আজও নানাভাবে নির্যাতন নিপীড়িত হচ্ছে। যার সাম্প্রতিক বলি সিলেটের খাদিজা। সকালবেলা লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে আসে এমসি কলেজে। আর বিকেলবেলা ফিরতে হলো নরপশুর পৈশাচিক বর্বরতায় জর্জরিত হয়ে। কিন্তু সে কি জানত যে আজ তার এই অবস্থা হবে! আর জানবেই বা কি করে? সে তো কোন অপরাধ করেনি। প্রেম নিবেদনে ব্যর্থ হওয়া সেই নরপশু বদরুল এভাবে আইয়্যামে জাহেলিয়াতের মতো নির্যাতন চালিয়ে খাদিজার জীবন শেষ করে দিতে একবারও কি চিন্তা করেনি? সেও তো ভার্সিটি পড়ুয়া! যেখানে শিক্ষার আলোতে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার কথা সেখানে গুটিকয়েক বদরুল আজ শিক্ষার প্রকৃত আলো থেকে বঞ্চিত। শিক্ষার বদলে তারা গ্রহণ করছে কুশিক্ষা। খাদিজার মতো নাম না জানা আরও কত খাদিজা এভাবেই প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছে কতিপয় নরপশুর হাতে! তাদের কতটুকুইবা আসে মিডয়াতে? এসব মানবিকতা শূন্য কার্যাবলীর অন্যতম কারণ হচ্ছে নৈতিক শিক্ষার অভাব। এই পথে আসা অনেকেই পাচ্ছে না নৈতিকতা সম্পন্ন শিক্ষা। ফলে লোপ পাচ্ছে মূল্যবোধ। সামান্য টাকার লোভে খুন হচ্ছে স্বামীর হাতে তারই প্রিয়তমা স্ত্রী, বিবাহ বিচ্ছেদসহ আরও নানারকম নির্যাতন-নিপীড়ন। এর মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার অন্যতম আরেকটি কারণ উক্ত ঘটনাবলীর সুষ্ঠু বিচার না হওয়া, কিংবা আইনের ফাঁকফোকড় দিয়ে প্রকৃত অপরাধী পার পেয়ে যাওয়া। নারী নির্যাতনের মতো ভয়াবহ এই ব্যাধি থেকে মুক্ত হতে প্রয়োজন আইনের সঠিক বাস্তবায়ন, অপরাধী যেই হোক উপযুক্ত শাস্তি প্রদান। প্রচলিত আইনের যথাযথ ব্যবহার। উক্ত ভয়াবহতা সম্পর্কে সমাজের সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। খাদিজার মতো আর কোন নারীকে যেন এভাবে প্রাণ দিতে না হয়, নারী পাক তার মৌলিক অধিকার, সমাজ হোক সুন্দর এবং শান্তিময়। বন্ধ হোক নারী নির্যাতনের মতো ভয়াবহ অপখেলা। মেজরটিলা, সিলেট থেকে
×