ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মাহিয়ান দ্বীপ

পাদপ্রদীপের আলোয় এ্যালিসন লি

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

পাদপ্রদীপের আলোয় এ্যালিসন লি

দুই বছর আগে বিশ্ব এ্যামেচার গলফ র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেন এ্যালিসন লি। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ১৬ সপ্তাহ নিজের আধিপত্য বজায় রাখেন তিনি। বিশ্ব গলফ অঙ্গনে তখন থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন এ্যালিসন লি। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে হয়ে যাওয়া এলপিজিএ কেইবি হানা ব্যাংক চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন তিনি। সেখানেও আলো ছড়ান ২১ বছর বয়সী এই প্রমীলা গলফার। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। শিরোপার খুব কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত স্পেনের কার্লোতা সিগান্ডারের কাছে হার মানেন লি। তবে এখানে হারলেও হতাশ নন তিনি। বরং ইনচনের এই টুর্নামেন্ট থেকে শিক্ষা নিয়েই নতুন বছরে নতুন করে জ্বলে উঠতে চান এ্যালিসন। এলপিজিএ কোয়ালিফায়িং টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত ধাপ জিতে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরেই পেশাদার গলফে নাম লেখান লি। র‌্যাঙ্কিংয়ের উপর ভিত্তি করে সে বছরই সোলেম কাপের জন্য নির্বাচিত হন তিনি। পেশাদার গলফে প্রথম বছরেই নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেন এ্যালিসন লি। সবমিলিয়ে পাঁচটি মেজর টুর্নামেন্ট খেলেন তিনি। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে তার বর্তমান অবস্থান ২২। তবে প্রতিভাবান এই গলফার বর্তমানে লস এ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাও করছেন। পড়ালেখা এবং গলফ উভয় ক্ষেত্রেই নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেছেন এই আমেরিকান তারকা। অথচ ২০০৯ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ইউএস ওপেনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেবার তার পরিবারকে চমকে দিয়ে টুর্নামেন্টের শেষ দুই দিন খেলেন তিনি। সেবার অবশ্য তার পিতা-মাতা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। এ প্রসঙ্গে লি এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছিলেন, ‘তাদের বিশ্বাসই ছিল না যে আমি কাট করতে পারব। যখন এটা করতে পেরেছিলাম আমি তো বিস্মিত হয়ে যাই। এমনকি আমার বাবা-মাও রীতিমতো হতবাক হয়ে যান। আমি যখন প্রথম রাউন্ডে পারফর্ম করি তখন খুবই সন্তুষ্ট হয়েছিলাম। স্কোর বোর্ডে যখন দেখি আমার অবস্থান তৃতীয় তখন খুবই রোমাঞ্চিত হয়ে পড়ি। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে এটা পারবোই। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডেই আমি ধীরে ধীরে ক্লান্ত হতে থাকি। প্রথম রাউন্ডে ঠিক যেভাবে খেলছিলাম তা আর দ্বিতীয় রাউন্ডে পারছিলাম না। শেষ মুহূর্তে তো আমার বাবা সব আশাই ছেড়ে দেন। তিনি বলছিলেন যে, ঠিক আছে এ্যালিসন, তুমি পরের বছরে চেষ্টা করতে পারবে। কিন্তু তারপরও আমি সবধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাই।’ এ্যালিসন লি জুনিয়র টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করেছিলেন মাত্র ৮ বছর বয়সে। কিন্তু আশ্চার্যজনক তথ্য হলো সেই সময় তার কোন ব্যক্তিগত কোচ ছিলেন না। তার বাবাই প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতেন।’ তবে তখন থেকেই লি যদি কোচের দিকনির্দেশনা পেতেন তাহলে আরও ভাল করতে পারতেন বলে মনে করেন ভ্যালেন্সিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গলফ কোচ এ্যান্ড্রু রাইভৌরি। এ প্রসঙ্গে তার অভিমত হলো, ‘সে যদি তখন ভাল কোচ পেতেন তাহলে আরও যে ভাল করতে পারতেন না এ বিষয়ে বলাটা খুবই কঠিন। তার সুইং খুবই সাধারণ কিন্তু চমকপ্রদ। যা তার ক্ষেত্রে খুবই কাজে দেয়। বর্তমান বিশ্বে তার এই সুইং স্বাভাবিক নিয়মের চেয়ে ব্যতিক্রম।’ তবে লি তার সুইংয়েই সন্তুষ্ট ছিলেন। যে কারণে তার বাবার নির্দেশনাই মেনে চলেন। এ প্রসঙ্গে পাঁচ ফুট নয় ইঞ্চি উচ্চতার এই গলফার বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার নিজস্ব সুইং ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে যারা আমার কোচ হিসেবে কাজ করেছেন তারা বিভিন্নভাবে শিক্ষা দিয়েছেন। তবে তাদের সকলের চেয়েই আমার বাবার সুইং স্টাইলটা একটু ভিন্ন ছিল। এরপরই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে, বাবার সঙ্গেই লেগে থাকব এবং আমার নিজস্ব সুইংয়েই খেলব। আমি এখনও তাতে খুব সন্তুষ্ট।’ বর্তমান বিশ্বে যে ক’জন আকর্ষণীয় এবং আবেদনময়ী প্রমীলা গলফার রয়েছেন তাদের মধ্যে এ্যালিসন লি অন্যতম। শীর্ষ দশের মধ্যে তার অবস্থান অষ্টম। সুন্দরীদের তালিকায় সবার উপরে আছেন হোলি সোন্ডার্স। এরপর ব্ল্যাইর ও’নিল দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে আছেন কেইলি রোহরবাচ। শীর্ষ চার ও পাঁচ নাম্বারে আছেন যথাক্রমে লেক্সি থম্পসন এবং বেইলি মোজিয়ের। এলিসন লির আগে থাকা বাকি দুই আকর্ষণীয় গলফার হলেন সাডেনা পার্কস ও কেথেরিন রবার্টস।
×