ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কঠিন কন্ডিশনে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত কুক

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

 কঠিন কন্ডিশনে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত কুক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার টেস্ট সিরিজের আগে পারিবারিক কর্মকা-ে ব্যস্ত ছিলেন ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক। সে কারণে দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারেননি বাংলাদেশের মাটিতে। আগেভাগেই এসে একাকী অনুশীলন করে কন্ডিশনটার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে গেছেন। তবে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারেননি। বৃহস্পতিবার দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ শুরু হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। সোমবার সন্ধ্যায় দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আবার। এখন শুরু ক্রিকেট নিয়ে সার্বিক চিন্তা-ভাবনার। বাংলাদেশ সফরের পর আবার ভারত সফরে ৫ টেস্টের সিরিজ। উপমহাদেশের কন্ডিশনে এই টানা ক্রিকেট খেলাটাকে কঠিন মনে করছেন কুক। তবে সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে প্রস্তুত ইংলিশরা এমনটাই দাবি করলেন তিনি। একটি টেস্ট খেললেই ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বাধিক টেস্ট খেলার রেকর্ড গড়বেন কুক। চট্টগ্রাম টেস্টে টস করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন এ্যালেক স্টুয়ার্টের দেশের পক্ষে খেলা সর্বাধিক ১৩৩ টেস্টের রেকর্ডকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক বছর আগে শুরু করেছি। কিন্তু কখনও ভাবিনি যে এমন কোন অবস্থানে যাব যাতে রেকর্ড ভাঙ্গবে। তবে রেকর্ড ভাঙ্গা অবশ্যই বিশেষ কিছু।’ এটাকে ভাগ্যের ব্যাপারই মনে করছেন তিনি। ২০০৬ সালে ভারতের বিরুদ্ধে নাগপুরে অভিষেক হওয়ার পর সেই সিরিজেই অসুস্থতার কারণে মুম্বাই টেস্ট খেলতে পারেননি। মাঝে ক্রিকেট থেকে আর কোন বিচ্ছেদ ঘটেনি কুকের। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা অনেক ভাগ্যেরও ব্যাপার। কারণ অনেক ইনজুরি এবং নানাবিধ সমস্যার বিষয়াদি থাকে। তাছাড়া দলে নিজেকে রাখার জন্য একই সঙ্গে যথেষ্ট রানও করতে হয়।’ কিন্তু শুধু রেকর্ডই নয়, ক্রিকেটকেই মাঝে কয়েকদিনের জন্য দূরে রেখেছিলেন তিনি। কারণ দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হওয়ার জন্য স্ত্রীর কাছে ছিলেন লন্ডনে। এ বিষয়ে কুক বলেন, ‘যদি নির্দয়ভাবে সত্যটা বলি, তাহলে জানাতে চাই যে গত দুই/তিন সপ্তাহ আমার মনের কাছাকাছিও অন্যকিছু ঘেঁষতে পারেনি। পারিবারিক বিষয়াদি অন্য সবকিছুকে দূরে রেখেছিল, তাই এ বিষয়টি নিয়ে কিছু ভাবিইনি।’ ওয়ানডে সিরিজ চলার সময় টেস্ট দলের প্রথম সদস্য হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন কুক। ফতুল্লায় প্রস্তুতিমূলক ওয়ানডে চলার দিন নেটে দীর্ঘক্ষণ অনুশীলনও করেছেন। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ দলের খেলা দেখেও প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে ওঠার যে চ্যালেঞ্জ সেটা কেমন হবে তাও বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় কন্যার বাবা হওয়ার একদিন পরেই ফিরতে হয়েছে। এ বিষয়ে বেশ আক্ষেপ নিয়ে কুক বলেন, ‘সেটা ছিল খুবই গৌরবময় দিন, আবেগঘন ৪৮ ঘণ্টা। কারণ এটা তো ধারণাই করা যায় না কন্যা হওয়ার পর এত দ্রুত চলে আসা। এটা কোনভাবেই বিশ্বের যে কোন প্রান্তে খুব ভাল একজন স্বামী কিংবা বাবার অনুভূতি দেবে না।’ এখন পেশাদারিত্ব দেখানোর সময় হয়ে গেছে। আর ক্রিকেট ভাবনা দূরে রাখার উপায় নেই। তাই সোমবার চট্টগ্রামে পা রাখার পরই আসন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভাবনা শুরু হয়ে গেছে ক্যাপ্টেন কুকের। তিনি বলেন, ‘এখন আমি এখানে এসেছি। তাই আমাকে এগিয়ে যেতে হবে এবং কিছু ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে।’ টানা ৭ টেস্ট খেলতে হবে উপমহাদেশের পরিবেশে। ভিন্ন এই কন্ডিশনে এটাকে অন্যরকম চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন কুক। তিনি বলেন, ‘এই কন্ডিশনে আমরা সাতটা ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি। তাই এটা চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের হয়ে যত সময় ধরেই খেলি না কেন আমি কখনও আট সপ্তাহে সাত টেস্ট ম্যাচ উপমহাদেশে খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করিনি।’ অবশ্য এই চ্যালেঞ্জটাকে দলের জন্যই উপকারী হিসেবে দেখছেন তিনি। আবার ইনিংস উদ্বোধনেও এবার একেবারে নতুন সঙ্গী পেতে যাচ্ছেন। সেটা হতে পারে তরুণ হাসিব হামিদ কিংবা বেন ডাকেটের মধ্যে যে কোন একজন। কুক বলেন,‘ এ ধরনের চ্যালেঞ্জ অবশ্যই একটি দলকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। আমাদের ভাল শুরু করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি হাসিব কিংবা বেন আমার সঙ্গে ব্যাটিং উদ্বোধনে ভালভাবে মানিয়ে নিতে পারবে।’
×