ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ডকে মোকাবেলায় বোলাররা ভাল করবে বলে আশাবাদী এই কৃতী অলরাউন্ডার

তবু জেতার প্রত্যাশা সাকিবের

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

তবু জেতার প্রত্যাশা সাকিবের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ওয়ানডে ও টি২০ ক্রিকেটে যতটা ধারাবাহিক বাংলাদেশ দল সেটা দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে একেবারেই নেই। বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুই টেস্টের সিরিজের প্রথমটি খেলতে নামার আগে টানা ১৪ মাসের বিরতি। এমনকি লঙ্গার ভার্সনের সঙ্গেই লম্বা একটা সময় ধরে কোন ধরনের সখ্যতা নেই অধিকাংশ ক্রিকেটারের। দলের অন্যতম অপরিহার্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও মনে করতে পারছেন না সর্বশেষ কবে চারদিনের ম্যাচ খেলেছেন। দলের সবারই একই অবস্থা। তবে আসন্ন টেস্ট সিরিজে ভাল করার প্রস্তুতিটা দারুণ হতে পারে মানসিকভাবে যদি বেশি ঠিক থাকা সম্ভব হয়। এমনটাই মনে করেন দলের স্পিন আক্রমণের অন্যতম ভরসা সাকিব। কিন্তু নিজে সেটা মনে করছেন না। তিনি মনে করেন দীর্ঘ বিরতির পর টেস্টে ব্যাটিং-বোলিংয়ে মানিয়ে ওঠার জন্য সময় লাগবে। কোচ হাতুরাসিংহের কথায় দ্বিমত পোষণ করে সাকিব দাবি করলেন দলে ২০ উইকেট তুলে নেয়ার মতো বোলার আছে। এ কারণে দাবি করলেন জেতার লক্ষ্য নিয়েই প্রস্তুত হচ্ছে দল। দীর্ঘদিন বিরতির পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ দল। এমন বিরতি অবশ্য এই প্রথম নয়। নিয়মিত টেস্ট ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা কখনও নেই। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘৭ বছর খেললাম এরকম তিনবার হয়েছে। নতুন নতুনতো লাগেই। আমি যেটা বললাম অনেকদিন না খেললে একটা ঘাটতি তৈরি হয়। আশাকরি প্রস্তুতিটা ভালভাবে শেষ করতে পারব। কালকে (আজ) আরও একটাদিন আছে। টেস্ট ম্যাচটা যেহেতু আল্টিমেট ক্রিকেট, সবাই রোমাঞ্চিত।’ ওয়ানডে ক্রিকেটেও দীর্ঘ বিরতির পর খেলতে গিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল। নিজেদের ধাতস্থ করে নিতে সময় লেগেছে। টেস্ট ক্রিকেটেও মানিয়ে নেয়ার জন্য সময় লাগবে বলে মনে করছেন সাকিব। সাকিব বলেন, ‘ওইসময় হয়তো জাতীয় লীগ খেলা হতো। এখনতো সেগুলো খেলা হয় না। ওয়ানডেই খেললাম আমরা এক বছর পর। ওটাও মানিয়ে নিতে প্রথম দুই-তিন ম্যাচ আমাদের সময় লেগেছে। আশা করব সময় লাগবে। তারপরও বলা মুশকিল। আত্মবিশ্বাস আসলে ম্যাচে গেলে বোঝা যাবে কি অবস্থায় আছে। এখন পর্যন্ত আমরা সবাই চেষ্টা করছি প্রস্তুতিটা ভালভাবে নেয়ার। আমরা যেহেতু অনেকদিন টেস্ট ম্যাচ খেলি না। আর আমিতো লঙ্গার ভার্সন কবে খেলেছি আমার মনে নেই। আমার জন্য কঠিন। দেখা যাক কি হয়, চেষ্টা করছি ওই রকম মাইন্ডসেট তৈরি করার। সত্যি কথা বলতে খুব বেশি প্রস্তুতির কিছু নেই। মানসিক দিক থেকে যতবেশি ঠিক থাকা যাবে, টেস্ট ম্যাচের জন্য প্রস্তুত থাকা যাবে।’ ইংলিশদের বিরুদ্ধে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগ নিয়েই বেশ চিন্তার মধ্যে আছে দল। বিশেষ করে বোলিংয়ে যে বড় ধরনের দুর্বলতা আছে সেটা কোচ হাতুরাসিংহের মন্তব্যেই পরিষ্কার। তিনি তিনদিন আগে বলেছিলেন বর্তমান দলের কোন বোলারেরই সামর্থ্য নেই প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেয়ার। কোচের সঙ্গে সুর মেলালেন সাকিবও। তিনি বলেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে বোলিং করা, অনেকক্ষণ ধরে ব্যাটিং করা সবকিছুই আসলে অন্যরকম। দেখা যাক আমার কাছে মনে হয় অন্যরকম একটা চ্যালেঞ্জ। উইকেটের ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করবে। আমরা হোমে যখন খেলি সাধারণত চেষ্টা করা হয় ফ্ল্যাট উইকেট বানানোর। যাতে করে ব্যাটসম্যানরা রান করে। যদি কখনও স্পিনার কিংবা পেসারদের সুযোগ দেয়া হয় আমার মনে হয় আমাদের বোলারদের যোগ্যতা আছে ২০ উইকেট নেয়ার। এখন যদি ফ্ল্যাট উইকেট বানিয়ে দেয়া হয় সেখানে বোলারদের পক্ষে উইকেট নেয়া সম্ভব হবে না।’ আর এ কারণেই জানালেন যত সমস্যাই থাক জেতার লক্ষ্যেই খেলবে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘অবশ্যই জেতার জন্য খেলা। তার জন্য আমাদের অবশ্যই ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। সেটা আমরা জানি। ওভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ কিন্তু প্রথম টেস্টের জন্য যেভাবে দল গঠন করা হয়েছে সেখানে মাত্র দুই পেসার নিয়ে দল করা হয়েছে। স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবেও শুধু তাইজুল ইসলাম আছেন দলে। কিন্তু এটাকে নিজের ওপর কিংবা দলের অন্য স্পিন অপশনের ওপর বাড়তি চাপ হিসেবে দেখছেন না তিনি। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘না। চাপের কি আছে। এখনতো আমি অতো বেশি বোলিংও করি না আগের মতো। যখন অনেক বেশি বোলিং করতাম তখন একরকমের দায়িত্ব ছিল, এখন অত বেশি বোলিং করা লাগে না। আমি যে মূল স্পিনার হিসেবে খেলছি তাও নয়। আগে যেমন দেখা যেত একটা স্পিনার হিসেবে খেললে আমি একমাত্র স্পিনার হিসেবে খেলতাম। এখন আসলে ওই দায়িত্বটা নেই। আমার যে দায়িত্বটা আছে আমি চেষ্টা করছি ওটা পালন করার।’ এবার দলে চারজন আনকোরা মুখ টেস্টে সুযোগ করে নিয়েছেন। তাদের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন সাকিব।
×