ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আবাদ কমলেও এবার তুলা উৎপাদন বাড়বে

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

আবাদ কমলেও এবার তুলা উৎপাদন বাড়বে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বব্যাপী চলতি মৌসুমে তুলা আবাদে জমির পরিমাণ কমতে পারে। এরপরও এবার পণ্যটির উৎপাদন থাকবে বাড়তির দিকে। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল কটন এ্যাডভাইজরি কমিটি (আইসিএসি) এ তথ্য জানিয়েছে। আইসিএসির তথ্যানুযায়ী, ২০১৬-১৭ মৌসুমে ১ শতাংশ কমে বিশ্বের প্রায় তিন কোটি হেক্টর জমিতে তুলা আবাদ হতে পারে। ২০০৯-১০ মৌসুমের পর এবার সবচেয়ে কম পরিমাণ জমিতে তুলা আবাদ হতে যাচ্ছে। এরপরও পণ্যটির উৎপাদন থাকবে বাড়তির দিকে। চলতি মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ২৬ লাখ টন তুলা উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, যা ৭ শতাংশ বেশি। বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো একরপ্রতি জমিতে ফলন বৃদ্ধি। ২০১৬-১৭ মৌসুমে ৯ শতাংশ বেড়ে হেক্টরপ্রতি জমিতে ৭৫৩ কেজি তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৬-১৭ মৌসুমে উৎপাদন বাড়লেও এর ব্যবহার গতবারের সমপরিমাণ দাঁড়াতে পারে। ২০১৫-১৬ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৩৮ লাখ টন তুলা ব্যবহার হয়েছিল। সে হিসাবে চলতি মৌসুমে উৎপাদনের তুলনায় ১৩ লাখ টন বেশি চাহিদা থাকবে। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে বৈশ্বিক তুলার মজুদ ৭ শতাংশ কমে ১ কোটি ৮১ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। বিশ্বের বৃহৎ তুলা উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। আইসিএসি চলতি মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৩ লাখ টন তুলা উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে। এর পরিমাণ গত মৌসুমের চেয়ে ১৯ শতাংশ কম। তবে আইসিএসির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) দেয়া পূর্বাভাসের মিল নেই। কেননা ইউএসডিএ ২০১৬-১৭ মৌসুমে দেশটিতে ৩৫ লাখ টন তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। আইসিএসি চলতি মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে তুলা আবাদে জমির পরিমাণ ১০ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করছে। এদিকে চলতি মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৬ শতাংশ বেড়ে ২৫ লাখ টন তুলা রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে পণ্যটির দ্বিতীয় শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ভারত থেকে এর রফতানি থাকবে নিম্নমুখী। গত মৌসুমে খরা ও পোকামাকড়ের আক্রমণের কারণে দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। ২০১৬-১৭ মৌসুমে ভারতে তুলা বপন কমেছে। কেননা ভারতের কৃষকরা লোকসান এড়াতে বিকল্প হিসেবে অন্যান্য শস্যের আবাদ বাড়িয়েছেন। চলতি মৌসুমে দেশটিতে ৬ শতাংশ কমে ১ কোটি ১২ লাখ হেক্টর জমিতে তুলা আবাদের পূর্বাভাস রয়েছে। সে হিসাবে ২০১৬-১৭ মৌসুমে দেশটি থেকে ৩৫ শতাংশ কমে ৮ লাখ ২০ হাজার টন তুলা রফতানির পূর্বাভাস দিয়েছে আইসিএসি। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ভারতকে ছাড়িয়ে তুলা উৎপাদনে শীর্ষস্থানটি দখলে নেয় চীন। তবে চলতি মৌসুমে চীনেও ৩ শতাংশ কমে ৪৭ লাখ টন তুলা উৎপাদন হতে পারে, যা এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। এদিকে উৎপাদন কমায় পণ্যটি আমদানিতে উৎসাহিত হচ্ছে চীন, যা চার মৌসুম কমতির দিকে ছিল। ২০১৬-১৭ মৌসুমে চীন ৯ লাখ ৮০ হাজার টন তুলা আমদানি করতে পারে, যা গতবারের চেয়ে ২০ হাজার টন বেশি। চলতি মৌসুম শেষে চীনে ১৩ শতাংশ কমে ৯৯ লাখ টন তুলা মজুদের প্রত্যাশা করছে আইসিএসি। ইন্টারন্যাশনাল কটন এ্যাডভাইজরি কমিটি এর আগে এক পূর্বাভাসে চলতি মৌসুমে তুলার বৈশ্বিক দরবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়। চলতি মৌসুমে বিশ্বব্যাপী তুলার গড় দাম প্রতি পাউন্ড ৭৫ সেন্টে দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইসিএসি, যা আগের দেয়া পূর্বাভাসের চেয়ে ৩ সেন্ট বেশি।
×