ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী;###;৩১ প্রবাসী বাংলাদেশী ও ৪ এক্সচেঞ্জ হাউস পেয়েছে রেমিটেন্স এ্যাওয়ার্ড;###;রিজার্ভের অর্থ বিনিয়োগে দিকনির্দেশনা থাকবে আগামী বাজেটে

মেগা প্রকল্পে প্রবাসীদের থেকে ঋণ নেবে সরকার

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

মেগা প্রকল্পে প্রবাসীদের থেকে ঋণ নেবে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রিজার্ভের অর্থ ঋণ নিয়ে সরকার বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পে বিনিয়োগ করবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে। তিনি বলেন, আগামী বছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা হাসিল হবেই। আমরা ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে যাব নিশ্চিত। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স এ্যাওয়ার্ড-২০১৫ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শীর্ষ রেমিটেন্স পাঠানো ৩১ প্রবাসী বাংলাদেশী এবং ৪টি অনাবাসী বাংলাদেশী মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউসকে রেমিটেন্স এ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান এবং গবর্নর ফজলে কবির। এ সময় বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি দেশে প্রবাসীদের পাঠানো টাকার পরিমাণ যখন বেড়ে যায় তখন দেশের মানুষের, জাতির কনফিডেন্স বেড়ে যায়। আমরা জোরেশোরে চিন্তা করছি তাদের পাঠানো টাকা থেকে ধার নিয়ে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় করব। তবে কোথায় কিভাবে ব্যয় করা হবে তা আগামী বাজেটে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হবে। প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিমানে ও ইমিগ্রেশনের বেশ হেনস্থার শিকার হন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের লোকদের দেশের প্রতি টানটা একটু বেশি। কারণ তারা বাংলাদেশ বিমানে বারবার হেনস্থা হলেও সেটাতে উঠেন। কাস্টমস ইমিগ্রেশন তাদের ওপর অত্যাচার হতো। তারপরও তারা কিছু বলত না তবে বর্তমানে এটা কিছুটা কমেছে। কারণ ধীরে ধীরে বাংলাদেশে বুরোক্রেসির সদস্যদের চারিত্রিক পরিবর্তন হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে অনেক অদক্ষ শ্রমিক বিদেশে যাচ্ছে। ফলে তারা আশানুরূপ সুফল পাচ্ছে না। সরকার আগামীতে শ্রমিকদের দক্ষ করে পাঠাতে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করবে। বর্তমানে সরকার পর্যায়ে বিনিয়োগ বাড়লেও ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগ তেমন একটা হচ্ছে না। দেশের মানুষ এখন অর্থনীতির স্বার্থে রাজনৈতিক সহিংসতাকে পরিহার করেছে। তাই আগামীতে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়বে। এটি বাড়লে আমরা অবশ্যই বার্ষিক ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব। শিক্ষা খাতে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও আমাদের কাজ করার বিশেষ দক্ষতা আছে। তাই আমরা এগিয়ে যাবই। এ সময় গবর্নর ফজলে কবির প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন, হুন্ডি বা অন্যান্য পন্থায় টাকা পাঠালে তা দেশের ক্ষতি। এটি কালো টাকা। এগুলো জঙ্গী, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও অসৎ কাজে ব্যবহƒত হয়। তাই প্রবাসীদের হুন্ডির মাধ্যমে টাকা না পাঠিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানান তিনি। সম্মাননা পাওয়া প্রবাসীরা বেশ কিছু দাবি দাওয়া তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রীর কাছে। এর মধ্যে রয়েছে ডলারের ক্রয় বিক্রয়ের পার্থক্য কামানো, প্রবাসীদের জন্য একটি ইপিজেড তৈরি, টাকা বন্ডসহ বেশ কিছু বিষয়ে। অনুষ্ঠানের শেষে অর্থমন্ত্রী এ্যাওয়ার্ড তুলে দেন প্রবাসীদের হাতে। এ সময় ২৬ জন রেমিটেন্স প্রেরক, ৫ জন বন্ডে বিনিয়োগকারী এবং ৪টি একচেঞ্জ হাউসকে সম্মাননা দেয়া হয়। সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে পাঠানোয় যাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে তারা হলেন জাকির হোসেন, মোঃ শফিক, ওয়ালিউর রহমান, খান মো মুহিবুল বারি, সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান, আক্তার হোসেন, মোঃ সেলিম, জাকির হোসেন চৌধুরী, পারভেজ কামাল, আবু মোঃ জাকারিয়া, রায়হান আলাউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম মিয়া, সেলিম মিয়া, শহীদ হোসেন জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ ইসমাইল, নওশাদ আহমেদ, জেড ইউ সাঈদ, দেওয়ান সাদেক আফজাল, ইকবাল হোসেন, নাজমুল হুদা, আলী রেজা, মুর্শিদুজ্জামান, মোঃ আজম, আব্দুল ওয়াহাব, শাহবুদ্দিন। বন্ডে বিনিয়োগ করায় যাদের সম্মাননা দেয়া হয়েছে তারা হলেন মাহততাবুর রহমান, ওমর ফারুক, আশিফ এ চৌধুরী, মোছা. জেসমিন আক্তার, আরিফ এ চৌধুরী এবং এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো হলো প্লাসিড এনকে কর্পোরেশন, ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানি, এনইসি মানি ট্রান্সফার এবং কে এম বি ইন্ট: মানি ট্রান্সফার। রেমিটেন্স এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তদের মধ্যে জনতা ব্যাংকের আটজন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের চার জন, সোনালী ব্যাংকের তিন জন, এইচএসবিসি ৩ জন, পূবালী ব্যাংকের ৩ জন, ব্যাংক এশিয়ার দুই জন এবং এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক দুইজন। বাকি ৬ জন, অগ্রণী, এবি, ট্রাস্ট, বেসিক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও এনআরবি ব্যাংক হতে নির্বাচন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনকুশন ডিপার্টমেন্ট।
×