ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আফ্রিকান-আমেরিকান ও তরুণদের উৎসাহে ভাটা

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সংশয়

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সংশয়

চলতি বছরের তিক্ততাপূর্ণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতি ভোটাররা উৎসাহহীনতার আভাস দিচ্ছেন। এটি নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় ঐ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি হ্রাস পাওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল/এনবিসি নিউজের নতুন জরিপে এটি দেখা যায়। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির দু’শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ ভোটার আফ্রিকান-আমেরিকান ও তরুণরা নির্বাচনে সবচেয়ে কম উৎসাহ দেখাচ্ছেন এমন ভোটারদের মধ্যে রয়েছেন। জরিপে দেখা যায়, সামগ্রিকভাবে রেজিস্টার্ড ভোটারদের শতকরা ৭২ ভাগ নিজেদের নির্বাচনের বিষয়ে খুবই উৎসাহী বলে গণ্য করেন। এটি ২০১২ সালের নির্বাচনের তুলনায় শতকরা ৪ ভাগ এবং ২০০৮ সালের তুলনায় শতকরা ১৫ ভাগ কম। চলতি বছরের কলহপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে দুই অপছন্দসই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহ বোধ করবেন কিনা, বা বিরোধী প্রার্থীর প্রতি প্রত্যেক দলের ভিতর নেতিবাচক অনুভূতি থাকায় ভোটাররা ভোট দিতে যেতে উৎসাহী হবেন কিনা তা নিয়ে বিশ্লেষকরা বিতর্ক করেছেন। যদি ঐতিহাসিক প্রবণতা সত্য হয়, তবে নতুন জরিপে ভোটার উপস্থিতি কম হবে বলে দেখা যায়। কারণ গত দুটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেই ভোটারদের অংশগ্রহণ খুবই উৎসাহী ভোটারদের অনুপাতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। ডেমোক্র্যাটিক কোয়ালিশনের দু’স্তম্ভ আফ্রিকান-আমেরিকান এবং তরুণ ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কম দেখা যায়। এটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হিলারি ক্লিনটনের জন্য এক সম্ভাব্য সমস্যা। আফ্রিকান-আমেরিকানদের মধ্যে শতকরা প্রায় ৬৫ ভাগ নিজেদের নির্বাচনে খুবই উৎসাহী বলে গণ্য করেন। এটি ২০১২ সালের নির্বাচনের তুলনায় শতকরা ১৮ পয়েন্ট এবং ২০০৮ সালের তুলনায় শতকরা ২৮ পয়েন্ট কম। জার্নাল/এনবিসি নিউজ জরিপে এমনটাই দেখা যায়। ৩৫ বছরের কম বয়স্ক তরুণ ভোটারদের শতকরা মাত্র ৫৪ ভাগ নির্বাচনে তারা খুবই উৎসাহী বলে জানান। এটি ২০১২ সালের নির্বাচনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট এবং ২০০৮-এর তুলনায় প্রায় ৩০ পয়েন্ট কম। হিলারির জন্য সুসংবাদ, হিসপ্যানিক ভোটাররা উৎসাহী বলে দেখা যায়। হিসপ্যানিক ভোটারদের শতকরা প্রায় ৬৯ ভাগ নিজেদের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে খুবই উৎসাহী বলে গণ্য করেন। এটি ২০১২ সালের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেশি। উপরন্তু, হিসপ্যানিক ভোটাররা বলছেন, তারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন বলে সামগ্রিক ভোটারদের মতোই প্রায় নিশ্চিত। জরিপে হিসপ্যানিক ভোটারদের শতকরা প্রায় ৮২ ভাগ জানান, তারা যে ভোট দেবেন সেটি একেবারেই নিশ্চিত। আরও শতকরা ৮ ভাগ সম্ভবত ভোট দেবেন বলে জানান। জরিপ পরিচালনার ক্ষেত্রে স্প্যানিশভাষী টিভি নেটওয়ার্ক টেলেমান্ডোকে জড়িত করা হয়। তরুণ ভোটাররা যে ভোট দেবেন, তাতে অনেক ডেমোক্র্যাট আস্থাশীল বলে জানান। তবে তরুণদের নির্বাচনের বিষয়ে উৎসাহ কম বলে জরিপে দেখা যায়। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচন নিয়ে একই মাত্রার উৎসাহ দেখান। উভয় দলের শতকরা ৭৫ ভাগ নিজেদের এ নিয়ে খুবই উৎসাহী বলে দেখেন। এতে দেখা যায়, ২০১২ সালের তুলনায় এখন রিপাবলিকানদের উৎসাহ ৮ পয়েন্ট কমেছে, কিন্তু ডেমোক্র্যাটদের উৎসাহের কোন পরিবর্তন ঘটেনি। প্রেসিডেন্ট পদে তারা কাকে চান, এ প্রশ্নের জরিপে সম্ভাব্য হিসপ্যানিক ভোটাররা শতকরা ৬৭-১৭=৫০ পয়েন্টে ট্রাম্পের তুলনায় হিলারিকেই প্রিয় মনে করেন। যদি তা-ই ঘটে, তাহলে ট্রাম্প ২০১২ সালের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিট রমনির তুলনায় হিসপ্যানিকদের কম সমর্থন পাবেন। রমনি হিসপ্যানিক ভোটারদের ২৭ শতাংশের সমর্থন পেয়েছিলেন। ঐ বছর প্রতি ১০ ভোটারের একজন ছিলেন হিসপ্যানিক। জরিপে আরও দেখা যায়, হিসপ্যানিকরা রিপাবলিকান পার্টি ও প্রেসিডেন্ট পদে দলের প্রার্থী ট্রাম্পের প্রতি ক্রমশ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করছেন। ট্রাম্প মেক্সিকান ও অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন। হিসপ্যানিকদের শতকরা মাত্র ১৬ ভাগ রিপাবলিকান দল সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন; অথচ সেপ্টেম্বরে শতকরা ২১ ভাগ অনুকম্পা মনোভাব পোষণ করতেন। বিপরীতক্রমে শতকরা প্রায় ৫৫ ভাগ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সম্পর্কে এবং ৫৯ ভাগ হিলারি সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন। -ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
×