ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১৮ অক্টোবর ২০১৬

রাজধানীতে অবৈধ স্থাপনা  উচ্ছেদ অভিযান শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রায় দেড় মাস পর রাজধানীর আবাসিক এলাকা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সোমবার রাজধানীর উত্তরা ও লালমাটিয়া আবাসিক এলাকায় পৃথক অভিযানে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে সংস্থাটি। পাশাপাশি বেশ কিছু অবৈধ দোকান ও রেস্টুরেন্ট অপসারণ করা হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ে নিজ নিজ স্থাপনার অবৈধ অংশ সরিয়ে নিতে মালিকদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করা হয়। উত্তরা এলাকার অভিযানে নেতৃত্বদানকারী রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার জাকির হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, ১১ নং সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ এ্যাভিনিউতে ৩০ নং হোল্ডিংয়ের একটি ভবনের কার পার্কিংয়ের জায়গা বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য ‘টপ টেন’ নামক একটি ফেব্রিকসের দোকানকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি উভয় প্রতিষ্ঠানকে ১৫ দিনের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়। তিনি বলেন, ১নং হোল্ডিংয়ের একটি ভবনের কার পার্কিংয়ের স্থলে ‘প্রাইম ইলেকট্রনিক্স’ নামক একটি দোকান ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় এবং ২ নং হোল্ডিংয়ের একটি ভবনের গাড়ি পার্কিংয়ের স্থলে ওষুধসহ অন্য কয়েকটি দোকান ৫ দিনের মধ্যে অপসারণের জন্য মালিকের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়। এছাড়া ১/বি নং হোল্ডিংয়ের একটি ভবনের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মাণরত কয়েকটি দোকান অপসারণ করা হয়েছে। লালমাটিয়া এলাকার উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাসির উদ্দিন জনকণ্ঠকে জানান, লালমাটিয়া আবাসিক এলাকার ব্লক-ডি এর ৪/৪ নং হোল্ডিংয়ে নির্মাণরত একটি দোকানের আবশ্যিক উন্মুক্ত স্থানে অবৈধ স্থাপনার কিছু অংশ অপসারণ করা হয় এবং ৭ দিনের মধ্যে বাকি অংশ অপসারণের জন্য মালিকের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। ব্লক-ই এর ১/৯ নং হোল্ডিংয়ে ‘আল নূর’ নামক একটি চক্ষু হাসপাতালের ভূতলের পার্কিংয়ের জায়গায় অভ্যর্থনা কক্ষ ও চশমার দোকান হওয়ায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় ও ৩ দিনের মধ্যে অপসারণের জন্য মালিকের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়। ব্লক-এফের ৩/১ নং হোল্ডিংয়ে আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক ব্যবহার ও আবশ্যিক উন্মুক্ত স্থানে অবৈধভাবে পরিচালিত রেস্টুরেন্ট ‘কাবাব ও বিরিয়ানি’ এর অবৈধ অংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। জনপথ মোড়ের ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ ॥ সায়েদাবাদে জনপথ মোড়ে ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এর মাধ্যমে সংস্থাটির প্রায় ৫০ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন পর অবৈধ দখলমুক্ত হয়েছে। উচ্ছেদের পরপরই দখলকৃত স্থানের চারপাশে দেয়াল নির্মাণ শুরু করে সংস্থাটি। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চলে এ উচ্ছেদ অভিযান। অভিযান পরিচালনা করেন ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপ-সচিব) খালিদ হোসেন। উচ্ছেদ অভিযানে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনিসুর রহমানসহ অসংখ্য পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে খালিদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, অভিযানে ট্রাকস্ট্যান্ড সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন অন্য যান চলাচলে অনেক সুবিধা হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে এই স্থানে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড তৈরি করতে দেয়ার পথ চিরতরে বন্ধ করে দেয়া হলো। শ্যামলী-মোহাম্মদপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ॥ রাজধানীর শ্যামলী ও মোহাম্মদপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। সোমবার ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম অজিয়র রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চলাকালে ফুটপাথ দখলকারী অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন আইন ও ভোক্তা অধিকার আইনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৫টি মামলা করা হয়। এ সময় দায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম অজিয়র রহমান জনকণ্ঠকে জানান, অভিযান চলাকালে ফুটপাথ দখলকারী ৭০টির অধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ এর অধীনে ১ জনকে ৫ হাজার টাকা এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯-এর অধীনে ৪ জনকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে এবং শ্যামলী ও মোহাম্মদপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএসসিসির অভিযানে সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ের ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়। এর মাধ্যমে সংস্থাটির প্রায় ৫০ শতাংশ জমি অবৈধ দখলমুক্ত হলো। এদিকে শ্যামলী-মোহাম্মদপুরে ডিএনসিসির অভিযানে ফুটপাথ দখলকারী ৭০টির বেশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় সিটি কর্পোরেশন আইন ও ভোক্তা অধিকার আইনে পাঁচটি মামলা করা হয় এবং দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
×