ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় সাব্বিরসহ চার নতুন মুখ

কন্ডিশন কাজে লাগাতে চান মুশফিকরা

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১৮ অক্টোবর ২০১৬

কন্ডিশন কাজে লাগাতে চান মুশফিকরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ ১৪ মাস বিরতির পর আবার টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ শুরু সাগর পাড়ের ভেন্যু সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এ লড়াইয়ে বাংলাদেশ দলে এবার ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। চারজন একেবারে আনকোরা মুখ ঘোষিত ১৪ জনের দলে। এই নবীন তারকারা মুখিয়ে আছেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আর গতবছর জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলা দলটির অনেক সদস্যই প্রথম টেস্টে নেই। তবে ঘরোয়া কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে দারুণ কিছু করতে চায় বাংলাদেশ দল। এমন প্রত্যয়ই জানালেন টি২০ ক্রিকেটে অপরিহার্য এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের নিয়মিত ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান রুম্মান। নিয়মিত ওয়ানডে ও টি২০ ক্রিকেটে খেললেও এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলার অপেক্ষায় আছেন সাব্বির। ক্ষুদ্র ফরমেটের ক্রিকেটে তার ওপর দারুণ নির্ভরশীল বাংলাদেশ দল। এবার দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটেও তাকে দলে নেয়া হয়েছে। বুধবার সফরকারী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে। সেই ম্যাচেই হতে পারে সাব্বিরের অভিষেক। কারণ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দারুণ লেগস্পিনও করতে পারেন যা আর কেউ পারেন না। একঝাঁক বাঁহাতি স্পিনার থাকলেও দলে নেই কোন লেগস্পিনার। সর্বশেষ কয়েকটি সিরিজে লেগস্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখন খেলেছেন দলে। এবার তিনিও নেই। সাব্বির একাদশে ঠাঁই করে নিতে পারলে বাংলাদেশ দলেরও বোলিংয়ে বাড়তি বৈচিত্র্য যোগ হবে। এ বিষয়ে সাব্বির বলেন, ‘আমি সবসময়ই বোলিং করার ব্যাপারে আগ্রহী। ওয়ানডে, টি২০, টেস্ট যেটাই হোক না কেন। বোলিংয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি আরও ভাল কিছু করা যায় কি না। বা নিয়মিত বোলার হতে পারি কিনা। আমি অবশ্যই আমার শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করব। আর অধিনায়ক যখন বোলিংয়ের জন্য ডাকেন আমি যেন পুরোটা দিতে পারি সেই চেষ্টা থাকবে।‘ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তেমন বোলিং না করলেও লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে প্রায় ধারাবাহিকভাবেই লেগস্পিনের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন তিনি। এবার টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করে নিজের যোগ্যতা দেখাতে উন্মুখ এ ডানহাতি। পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি, অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানও মুখিয়ে আছেন টেস্ট খেলার জন্য। এ বিষয়ে সাব্বির বলেন, ‘নির্বাচক, কোচ, অধিনায়ক মিলে ভাল দল করেছে অবশ্যই। যারা চারদিনের ম্যাচ খেলে এসেছে সবাই ফর্মে আছে। আসলে সবাই অনেক উত্তেজনায় আছে টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য। রাব্বির দিকে তাকাচ্ছি। ও আর আমি ভাল বন্ধু। আমরা চারজন চারজনের দিকে তাকাচ্ছি যে আমরা টেস্ট দলে ডাক পেয়েছি, আমরা নতুন মুখ।’ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলাটা বেশ চ্যালেঞ্জের হবে বাংলাদেশের জন্য। কারণ দীর্ঘ বিরতির পর লঙ্গার ভার্সনের ক্রিকেটে আবার পা রাখছে বাংলাদেশ। মাঝে অনেকগুলো ওয়ানডে ও টি২০ ম্যাচ খেলার কারণে ফরমেট পরিবর্তন করে পুরোপুরি নিজেদের মেলে ধরাটা বেশ কঠিন হবে। কিন্তু সাব্বির মনে করেন নিজেদের পরিবেশে খেলাটাকেই চাবিকাঠি হিসেবে ব্যবহার করে ইংলিশদের মোকাবেলা করা সহজতর করে তোলা সম্ভব। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ওরা অনেক ভাল দল। আমরা টেস্ট কম খেলি। ওরা সবসময়ই আমাদের থেকে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলে। তারপরও আমাদের কন্ডিশন অনুযায়ী ওদের কন্ডিশন অনেক আলাদা। আমরা চেষ্টা করব আমাদের কন্ডিশন কাজে লাগানোর জন্য।’ তবে দলের প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহেরই আস্থা কম এই টেস্ট দলটির ওপর। তিনি দু’দিন আগে বলেছেন বেশি কিছু প্রত্যাশা না করতে এবং জানিয়েছেন এই দলটিতে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেয়ার মতো বোলার নেই। এ বিষয়ে সাব্বির বলেন, ‘আমার মনে হয় না নেতিবাচক বা ইতিবাচক কিছু এটা। ২০ উইকেট নেয়ার চেয়ে ভাল ক্রিকেট খেলা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ অবশ্য টেস্ট না খেললেও ইতোমধ্যে ২৯ ওয়ানডে ও ২৬ টি২০ খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং ৩৫টি প্রথমশ্রেণীর ম্যাচও খেলেছেন। এসব অভিজ্ঞতা কাজে দেবে টেস্ট ম্যাচে এমনটাই মনে করছেন সাব্বির। তিনি বলেন, ‘হুট করে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা যায় না। এসব আমাকে অবশ্যই ভাল ব্যাকআপ দেবে টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য। টেস্ট খেলোয়াড় হওয়াটা একটা স্বপ্নের ব্যাপার। আমারও স্বপ্ন ছিল টেস্ট খেলোয়াড় হব। আমার পরিবারও অনেক খুশি যে আমি টেস্ট দলে ডাক পেয়েছি। টি২০ প্রথম খেলেছি, ওয়ানডে খেলেছি এখন টেস্টেও ইনশাআল্লাহ ওইভাবে খেলব। প্রথমে সবাই ভাবত আমি টি২০ খেলোয়াড়। ওয়ানডে বা টেস্টে আমি খেলতে পারব না। কিন্তু আমি প্রমাণ করেছি যে ওয়ানডেতেও আমি খেলতে পারি। ইনশাআল্লাহ টেস্ট দলে আমি সুযোগ পেয়েছি, ম্যাচ খেললে আমার অভিষেক হবে। তো আমি চেষ্টা করব এই তিনটা ফরমেটে যেন একইভাবে খেলতে পারি। সবকিছু মানসিকতার ওপরই নির্ভর করে।’
×