ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মুসার সংবর্ধনায় বক্তারা মানবিক সমাজ গড়তে চোখ ও দেহদানে এগিয়ে আসতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ১৮ অক্টোবর ২০১৬

মুসার সংবর্ধনায় বক্তারা মানবিক সমাজ গড়তে চোখ ও দেহদানে এগিয়ে আসতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মৃত্যুর পর দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মৃত ব্যক্তিটির কোন কাজে আসে না। নিজের চক্ষুদানের মাধ্যমে পৃথিবীর আলো দেখতে পারে অন্য একটি অন্ধ মানুষ। দেহদানের মাধ্যমে চিকিৎসা হতে পারে মুমূর্ষু ব্যক্তির। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজে লাগতে পারে চিকিৎসা বিজ্ঞানে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে চোখ কিংবা দেহদান বৃদ্ধি পেলেও দেশে বর্তমানে বছরে মাত্র ৪০টি কর্ণিয়া পাওয়া যাচ্ছে, যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগণ্য। এক্ষেত্রে নিজের চোখ এবং দেহদানের ক্ষেত্রে বজরঙ্গি ভাইজান খ্যাত জামাল ইবনে মুসা এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মানবিক সমাজ গড়তে নিজের চোখ এবং দেহদানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। উদ্বুদ্ধ করতে হবে অন্যদের। সোমবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বজরঙ্গি ভাইজান খ্যাত জামাল ইবনে মুসার চক্ষু ও দেহদান উপলক্ষে ‘সংবর্ধনা এবং মরণোত্তর চক্ষুদান ও দেহদান’ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ সময় মুসা তার চোখ ও দেহদানের দলিলপত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করেন। পরে তাকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর একটি ক্রেস্ট তুলে দেন। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সন্ধানী যখন কার্যক্রম শুরু করে তখন দেহদান এত জনপ্রিয় ছিল না। আমরা কয়েকজন অনুপ্রাণিত হয়ে চক্ষু দান করেছিলাম। এক্ষত্রে জামাল ইবনে মুসা একজন সুখী মানুষ। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর করতে তিনি নিজের জমি দান করেছেন, দেহ দিয়ে দিচ্ছেন। বর্তমানে ধনবান দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা তাদের সম্পদ দান করে যাচ্ছেন। তবে আমাদের দেশের মানুষ এখনও ততটা দানবীর হতে পারেননি। এক্ষেত্রে নিজের দেহ এবং জমি দান করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মুসা। তিনি বলেন, একটা শিশুকে তার মায়ের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। এসব কথা ভেবে মুসা ভাই আমাদের সামনে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার মতো আমাদেরও মানবিক কাজে উদ্বুদ্ধ হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক অগ্রগতিই আমাদের লক্ষ্য হতে পারে না। আমাদের সন্তানরা মানুষ হবে না, তা হতে পারে না। তারা ফুল-পাখি, লতাপাতা দেখবে নাÑ এমন সমাজ আমরা চাই না। আমরা ভালবসাহীন সমাজ চাই না, চাই মানবিক সমাজ। অনুষ্ঠানে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ একেএম সালেকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেনÑ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, বিএমএর মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান, সন্ধানীর সদস্য শিবলি শাহরিয়ার প্রমুখ।
×