ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গঙ্গা-যমুনা নাট্য উৎসবে সৈয়দ শামসুল হকের ‘ঈর্ষা’

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৮ অক্টোবর ২০১৬

গঙ্গা-যমুনা নাট্য উৎসবে সৈয়দ শামসুল হকের ‘ঈর্ষা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আগামী ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে গঙ্গা যমুনা নাট্যোৎসব। উৎসবের উদ্বোধনী দিনে শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে সন্ধ্যা ৭ টায় মঞ্চস্থ হবে প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদলের নন্দিত প্রযোজনা ‘ঈর্ষা’। টি দলের ৮ম প্রযোজনা। সৈয়দ শামসুল হক রচিত কাব্যনাটক ‘ঈর্ষা’ নির্দেশনা দিয়েছেন অনন্ত হিরা। নাটকের তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন নূনা আফরোজ, রামিজ রাজু ও অনন্ত হিরা। নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনায় শাহীনুর রহমান, আলো জিল্লুর রহমান, সঙ্গীত রামিজ রাজু ও পোশাক নূনা আফরোজ। কাব্যনাটক ‘ঈর্ষা’র গল্প জীবন থেকে জীবনে বিস্তৃত আর দ্বন্দ্ব সংঘাতে মুখর যা বর্ণনাতীত। সেই সঙ্গে আছে শিল্পের সঙ্গে শিল্পের দ্বন্দ্ব শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর দ্বন্দ্বও। আছে মানুষের সঙ্গে মানুষের এবং শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর প্রেম, ভালবাসা; আছে মানব জীবনের আরেক অপরিহার্য এবং অত্যন্ত গোপন বিষয় শারীরিক সম্পর্ক বা যৌনতার কথা। আছে রূপসী বাংলার, শ্যামল উজ্জ্বল, রূপশালী গর্ভবতী ধানের বাংলার রূপের বর্ণনা, আছে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধও। ‘প্রেমিকের হৃদয় যদি পোড়ে তো একমাত্র ঈর্ষার আগুনে পোড়ে, ঈর্ষায় যে পোড়েনি, প্রেম সে হৃদয়ে ধরেনি, ঈর্ষা এক ঠা-া নীল আগুন’। অথবা ‘রাষ্ট্রের বিপর্যয়ে পথে নামা যায়, বক্তৃতা করা যায়, করা যায় মিটিং মিছিল, গেরিলাও হওয়া যায়। কিন্তু বিপর্যয় হয় যদি ব্যক্তিগত, যদি নষ্ট হয়ে যায় নিজেরই ফসলের মাঠ, কি তবে কর্তব্য হয়? মিছিল কি নামানো যায়? সেøাগান কি দেয়া যায়? গড়ে তোলা যায় গোপন বাহিনী শুধু নিজেকে নিয়ে?’ অথবা ‘অবরুদ্ধ শৃঙ্খলিত যেখানে স্বদেশ, রঙ তুলি কাগজ সব অর্থহীন। বাড়িতে ডাকাত যদি পড়ে, বেহালা যে বাজায় তাকেও বল্লম হাতে তুলে নিতে হয়। অথবা বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়- নর্দমায় বেহালা গড়ায়’। এরকম অসংখ্য জীবন তত্ত্বকথা সমৃদ্ধ নাট্য কথনে বিমুগ্ধ হয় দর্শক। ১ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের এই নাটকের তিনটি দৃশ্যে রয়েছে মাত্র ৭টি সংলাপ। নাটকটির সবচেয়ে বড় সংলাপের ব্যাপ্তি ৩৬ মিনিট এবং সবচেয়ে ছোট সংলাপটি ১৬ মিনিট ব্যাপ্তিকালের। নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক অনন্ত হীরা বলেন, নাটকটির বিশেষত্ব হলো এটি কাব্যিক নাটক। নাটকের গল্পটি তিনজন চিত্রশিল্পীর শিল্পের দ্বন্দ্ব নিয়ে। চারুকলার একজন নারী, একজন পুরুষ শিক্ষক ও একজন ছাত্র এই তিন চরিত্র নিয়েই পুরো নাটকটি। এই কথাটি সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় এরকম কাঠামোতে নাটক লেখার নিরীক্ষা এর আগে বাংলা ভাষায় হয়নি। এ ধরনের নাটক মঞ্চে এনে দর্শক ধরে রাখাটা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং। অবশ্যই দীর্ঘ এই গাম্ভীর্যপূর্ণ সংলাপগুলোর প্রক্ষেপণে অভিনয়শিল্পীদের কৌশল বেশ ভালই উপভোগ করেন দর্শকরা।
×