ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

পাল তুলে দাও নায়ে তোমার বৈঠা ধর শক্ত হাতে

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৭ অক্টোবর ২০১৬

পাল তুলে দাও নায়ে তোমার বৈঠা ধর শক্ত হাতে

সাতষট্টি বছর আগে যে চারা রোপণ করা হয়েছিল, তা আজ বিশাল মহীরূহে পরিণত হয়েছে। সেই বৃক্ষের নিচে কতশত সহস্র কোটি মানুষেরা ছায়া পায়, শ্রান্তির অবকাশে নিমগ্ন হয়ে জাগরণের গান শোনায়। সে গান ধ্বনি-প্রতিধ্বনিত হয় সারা বাংলা ছাড়িয়ে। বিশ শতকের মাঝামাঝি ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলটি একটি স্বাধীন ভূ-খ-, একটি স্বাধীন জাতি ও একটি জাতীয় পতাকা উপহার দিতে পেরেছিল। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম এক দেশ হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে সেই দলের নেতৃত্বে। শত ঘাত-প্রতিঘাত-সংঘাত পেরিয়ে, কত চড়াই-উতরাই মাড়িয়ে তাকে পথ চলতে হয় আজও। পদে পদে নানা বাধাবিপত্তি; সেসব দলিত মথিত করে যেতে হচ্ছে সামনের দিকে, প্রগতি ও অগ্রগতির পথে। বাঙালী জাতীয়তাবাদের মূলধারা হিসেবে পরিগণিত রাজনৈতিক দলটি সংগ্রামী মানুষের প্রতিচ্ছবি যেমন, তেমনি লাঞ্ছিত নিপীড়িত জনতার জয়গান কণ্ঠে তুলে গেয়ে যায় বাংলার চিরায়ত সুর। রাজনীতি হচ্ছে গতিশীল। সে কোন অচলায়তন পর্বত নয়। আর গণতন্ত্র তখনই সফল হয়, যখন জনগণ সচেতনভাবে নিজেদের বিচার বিবেচনা মতো তাদের রাজনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের সেই ভাষা বুঝতেন, জানতেন। আর সে কারণেই তার অঙ্গুলি নির্দেশে জাতি সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে পেরেছিল। দুই দশক ধরে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে, অনেক প্রাণের আত্মাহুতি ঘটিয়ে বিজাতীয় শাসককে হঠাতে পেরেছিল। এজন্য বিশাল ত্যাগ করতে হয়েছে। লাখ লাখ মানুষকে যেমন প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে, তেমনি হারাতে হয়েছে নারীর সম্ভ্রম, ধনসম্পদ, একাত্তরের সশস্ত্র যুদ্ধজয়ে বাঙালী তার নেতা শেখ মুজিবের আহ্বানকে সম্বল করে মুক্তির মন্দির সোপানতলে প্রাণ বলি দিয়েছিল। শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাঙালী জাতির অধিকার, স্বাধিকার আন্দোলনকে স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামে পরিণত করতে পেরেছিল। জাতিসত্তার বিকাশে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে সংগ্রামের সূচনা, তা ধাপে ধাপে স্বাধীনতা অর্জনের দিকেই ধাবিত হয়েছে, আর তা সম্ভব হয়েছে শেখ মুজিব এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগের সাহস ও সংগ্রামী এবং লড়াকু মনোভাবের কারণে। রাজপথ যেমন শ্রেষ্ঠ পথ, রাজনীতিও তেমনই শ্রেষ্ঠনীতি। নীতির বিকাশ ও বিস্তার রাজনীতিরই নামান্তর। যে রাজনীতিতে কামনাই লক্ষ্য, কাম্য বস্তুর লোভে যেখানে নীতি-নির্ধারিত হয়, তার অপ্রাপ্তিতে জ্বলে ওঠে ক্রোধের আগুন। তাই সুস্থ রাজনীতি অনুসরণ করা বাঞ্ছনীয় হয়ে ওঠে। কল্যাণ রাষ্ট্র নির্মাণে সুস্থ রাজনীতিই আপেক্ষিত। আদর্শ দ্বারা বিধৃত নীতিই যথার্থ রাজনীতি। সেই রাজনীতি মানুষকে পীড়ন না করে ‘রঞ্জন’ করে। যিনি সৎ কর্মের মাধ্যমে মানুষকে রঞ্জিত করেন। আনন্দিত করেন। তিনি সুস্থ সুন্দর রাজনীতিই করেন। বঙ্গবন্ধু সেই রাজনীতিকেই ধারণ করেছেন, যা কল্যাণ, মঙ্গল এবং সাহসকে উপজীব্য করে দীর্ঘদিনের শোষিত, বঞ্চিত, হতশ্রী জাতির মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করতে পেরেছিলেন নবজীবনের আবাহনে। আজকের যে বাঙালী জাতি বিশ্বসভায় নিজের আসনটুকু অর্জন করতে পেরেছে, তা আওয়ামী লীগ নামক দলটির কল্যাণেই। বাঙালী জাতির প্রতিটি অর্জনের নেতৃত্বদানকারী হচ্ছে প্রাচীন ও সুবিশাল রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। ভাষা আন্দোলন, গণআন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতাযুদ্ধ, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন এবং একুশ শতকে এসে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার যে গৌরব তার সবখানেই আওয়ামী লীগ নামক দলটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পরাজিত হয়নি কখনও শেখ মুজিব ও তার দল। দলটির নেতাকর্মীদের ত্যাগ তিতিক্ষা ও অঙ্গীকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। বিশ শতকে যে দলটি ক্রমান্বয়ে বাঙালীর কণ্ঠসর হয়ে উঠেছিল, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের মতোই স্থবির হয়ে পড়েছিল দলটি। কিন্তু পিতার মন্ত্র নিয়ে কন্যা যখন হাল ধরলেন, তখন আবার সচল হয়ে ওঠা শুধু নয়, তিন দফায় ক্ষমতাসীন হয়ে আবার দেশকে বাঙালীর চিরায়ত ধারায় পরিচালিত করে বিশ্বসভায় গৌরবের অংশীদার হয়ে ওঠেছে। শেখ মুজিবের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার পথে তার কন্যা শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টা পঁচাত্তর পরবর্তী হতশ্রী, বিভ্রান্ত জাতিকে সুসংগঠিত করা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গীনির্মূল, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, মানবসম্পদের উন্নয়ন, অনাহার-অর্ধাহারী মানুষের সংখ্যা হ্রাস করে এক নবযুগের দিকে দেশ ও জাতিকে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাসিনা হয়ে উঠেছেন বাঙালী গণমানুষের কণ্ঠসর থেকে বিশ্ব মানবের ও আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলায় ডিজিটাল বাংলাদেশের দিকে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টায় যুগান্তকারী সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু এই সাফল্যের ক্ষেত্রে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অবদান নাম মাত্র। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা কর্মসূচী ঘোষণা ও তা বাস্তবায়নে যতদূর এগিয়ে গেছেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও তার নেতারা সেই অবস্থানে এগিয়ে যেতে পারেননি। তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের যুগে দলের নেতাকর্মী পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে বলে মনে হয় না। তথ্যপ্রযুক্তিতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষিত করার কাজটি শুরুই হয়নি। যেমন হয়নি এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেও। ছাত্র সংগঠনকে ব্যবহার করা হয়নি দেশব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য। ছাত্র নেতাকর্মীরা নিজেদের প্রশিক্ষিত করে সারাদেশে জনগণের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার ঘটাতে মাঠ পর্যায়ে তৎপরতা চালাতে পারত, যাতে দেশবাসী আরও বেশি অগ্রসর হতো। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজও হতো ত্বরান্বিত। ছাত্ররা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপকর্মে জড়িয়ে যেত না। ছাত্র রাজনীতির সুস্থ স্বাভাবিক বিকাশ ঘটত। আর আজকের ছাত্র নেতারাই তো আগামী দিনের জাতীয় রাজনীতির ধারক-বাহক হবেন। তারাই যদি সুস্থ ধারায় রাজনীতি না করেন, তবে অন্ধকার সমাচ্ছন্ন হতে বাধ্য। দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধুও কর্মসূচী ঘোষণা করে বহুদূর এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু দল ও নেতৃবৃন্দ সেই স্তরে পৌঁছাতে পারেননি। ফলে বিপর্যয় রোধ করা যায়নি। আর চারদিন পর আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কুড়িতম কাউন্সিল অধিবেশন। দলে নেতৃত্ব পরিবর্তন বা নয়া নেতৃত্বের সমাহার ঘটবে বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে দলে তেমন নেতৃত্ব তৈরি হয়নি। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে কিংবা জনগণসম্পৃক্ত নেতৃত্বের অভাব খুবই। বর্তমান কমিটিতে এমন নেতৃত্বও রয়েছেন যাদের নিজ এলাকার লোকজনও চেনেন না। কাগুজে এই নেতারা দলকে সমৃদ্ধ যেমন করতে পারেন না, তেমনি দলীয় কর্মকা-কে এগিয়ে নেয়া জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণেও সক্রিয় হতে পারেন না। আর দলীয় সাংসদদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা গণমানুষের ভাষা যেমন বোঝেন না, তেমনি নীতি নৈতিকতার ধারও ধারেন না। তাদের নেতিবাচক ক্রিয়াকলাপ জনগণের কাছে দলের ভাবমূর্তি ম্লান করে দেয়। বঙ্গবন্ধুর সময় যারা জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই নিজ নিজ এলাকা, জেলা এমনকি বিভাগ পর্যায়ে জনপ্রিয় ও পরিচিত ছিলেন। মফস্বলে জনভিত্তি রয়েছে এবং সাংগঠনিক শক্তিমত্তা দৃঢ় এমন নেতৃত্বকে বঙ্গবন্ধু কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে অন্তর্ভূক্ত করতেন। ফলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ক্রমশ গণমানুষের দলে পরিণত হতে পেরেছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতারা সারাদেশ সফর করতেন, ফলে তাদের সঙ্গে দেশবাসীর একটা সংযোগ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এখনকার কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে উল্লেখ করার মতো নেতা হাতেগোনা মাত্র। ফলে দলে এবার নতুন যারাই আসুক, জনগণের কাছে তাদের আবেদন কী দাঁড়ায়, সেটা স্মর্তব্য। কাউন্সিলে নেতৃত্বে যারাই আসেন তাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোন গুণগত পরিবর্তন আসতে পারে, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। ক্ষমতাসীন দলের কাউন্সিল আয়োজন যতটাই আড়াম্বরপূর্ণ হোক না কেন, তাতে যদি সারবত্তা কিছুই না থাকে, তবে সবই হা হতোস্মিতে পরিণত হতে বাধ্য। এটা তো বাস্তবে একুশ শতকে এসে আওয়ামী লীগ একক শক্তিতে ক্ষমতাসীন হওয়ার মতো শক্তিমত্তা অর্জন করতে পারেনি। অথচ একক শক্তি নিয়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছিল দলটি। পাকিস্তানী শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নির্বাচনী জোট গঠন করার পথে যায়নি দলটি। পঁচাত্তর পরবর্তী সময় দলটিতে ভাঙ্গন এবং দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া নেতাদের আরও দল গঠন একক শক্তি অর্জনের পথে যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি আওয়ামী লীগ। পঁচাত্তরের পর তিন দফায় দলটি ক্ষমতাসীন হয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রায় একক শক্তি নিয়ে দলটি বিজয়ী হওয়ার পর অন্য দলের সমর্থনে সরকার গঠন করেছিল। ২০০১ সালে নির্বাচনী জোট করেও ক্ষমতায় আসতে পারেনি। ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জোট গঠন করে বিজয়ী হওয়ার পর সরকার গঠন করতে পেরেছে। দেখা যাচ্ছে দিন দিন দলটির একক শক্তি অর্জনের ক্ষেত্রটি সঙ্কুচিত হয়েছে। অর্থাৎ দলের সাংগঠনিক শক্তি হ্রাস পেয়েছে। এর কার্যকারণও রয়েছে। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নামক দলটিকে সরকার গিলে ফেলেছে। সরকার আর দল কোন পৃথক সত্তা নয়। সবই একীভূত যেন। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুও সরকারকে পৃথক অবস্থানে রেখেছিলেন। সরকার প্রধান হওয়ার পর তিনি দলীয় সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন তখনকার বাস্তবতার কারণে। একালে দল ও সরকার একাকার হওয়ার ফলে দলীয় সাংগঠনিক শক্তি ক্রমশ লোপ পাচ্ছে। ভুঁইফোঁড়, হাইব্রিডদের সংখ্যা বাড়ছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি বড় অংশই মন্ত্রিসভার সদস্য বা সরকারী অন্যান্য পদে রয়েছেন। একই সঙ্গে সরকার ও দলে থাকায় সংগঠনটির পৃথক অস্তিত্ব মেলে না। সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ নেই। সবই চলে ফ্রিস্টাইলে। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের শত্রুতে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ। ইউপি ও পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে মনোনয়ন বাণিজ্য সংঘটিত হয়েছে, তা কল্পনাতীত। বাণিজ্যের মাধ্যমে দলের নেতাদের বাদ দিয়ে ভাড়াটিয়াদের প্রার্থী করার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে দলের সাংগঠনিক ও নৈতিক শক্তিকে পর্যুদস্ত করা হয়েছে। মনোনয়ন বাণিজ্য যারা করেছেন, তারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আবারও সমাসীন থাকবেন বলাই বাহুল্য। কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে যে ক্ষত তৈরি করা হয়েছে তার উপশম সহজে হওয়ার নয়। বহিষ্কৃতদের আবার দলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এতে রেষারেষি বাড়বে বৈ কমবে না। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়ে ওঠার সমূহ সম্ভাবনার মধ্যে থাকলেও পরিচর্যার অভাবে তা অসংগঠিত থেকেই যাচ্ছে। শেখ হাসিনার অনেক নির্দেশ আদেশ হাল্কাভাবে নেয়া হয়। তা প্রতিপালনে আগ্রহও দেখা যায় না। দায়িত্ব ও কর্তব্যহীনতার সংস্কৃতিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে দলটি। নিয়মিত দলের কাউন্সিল না হওয়ায় নয়া নেতৃত্বও গড়ে উঠছে না। নতুন প্রাণশক্তিরও হচ্ছে না সম্মিলন। ছাত্র ও যুব সংগঠন রাজনীতিতে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। বরং তাদের অনেক কর্মকা- ও নেতিবাচক তৎপরতা দলের ভাবমূর্তিতে কালিমালেপন করে। অনেকে লুটেরা চরিত্রের বিকাশ ঘটিয়েছেন। এসব নেতিবাচক দিকের বিপরীতে ইতিবাচক অবস্থানে থেকে শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন বহুদূর। দলকে পশ্চাৎপদ রেখে এই অগ্রগতি একটা জায়গায় এসে থমকে যেতে বাধ্য। তাই দলকে একুশ শতকের উপযোগী আধুনিক চিন্তা-চেতনায় গড়ে তোলা জরুরী। এ দেশের মানুষের আশা-ভরসার স্থল এখনও আওয়ামী লীগ ও তার নেত্রী শেখ হাসিনা। যার উপর জনগণের রয়েছে অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস। আর এই কারণেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গী নিধন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে। কাউন্সিলে মেধাবী, দক্ষ, যোগ্য, অভিজ্ঞ যে নেতারাই আসুন, শেখ হাসিনাকেই সব ভার বইতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে গোছাতে হবে। তাই এখনই তাকে নৌকায় পাল তুলে দিতে হবে এবং বৈঠা শক্ত হাতে ধরে পাড়ি দিতে হবে বহু নদী, সমুদ্র। বাঙালীর স্বপ্নপূরণ তাকেই ঘটাতে হবে।
×