ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘হিলারি দ্বিতীয় বিতর্কে মাদকজাতীয় ওষুধ সেবন করেছিলেন’

মাদক পরীক্ষার দাবি ট্রাম্পের!

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৭ অক্টোবর ২০১৬

মাদক পরীক্ষার দাবি ট্রাম্পের!

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিতর্কের পারফরমেন্স নিয়ে সমালোচনার পারদ চড়িয়ে তার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তুলেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোন প্রমাণ ছাড়াই শনিবার ট্রাম্প চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় বিতর্কে হিলারি কোন মাদক বা মাদকজাতীয় ওষুধ সেবন করেছিলেন। তাই তৃতীয় বিতর্কের আগে দুইজনেরই মাদক পরীক্ষার দাবি তুলেছেন তিনি। ট্রাম্প নির্বাচনে কারচুপির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন। খবর এএফপি, বিবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমসের। আগামী বুধবার লাস ভেগাসে দুই প্রার্থীর মধ্যে চূড়ান্ত বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের পোর্টসমাউথ শহরে শনিবার এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, আমি জানি না হিলারি কি করছেন। তবে ১০ অক্টোবর দ্বিতীয় বিতর্কের শুরুতে হিলারিকে দারুণ উজ্জীবিত দেখাচ্ছিল। কিন্তু শেষে মনে হচ্ছিল, উনি বোধ হয় নিজের গাড়ি পর্যন্তই যেতে পারবেন না। তাই তৃতীয় বিতর্কের আগে আমাদের ড্রাগ টেস্ট হওয়া উচিত। তিনি বলেন, খেলোয়াড়রা খেলার আগে মাদক পরীক্ষা করিয়ে থাকেন। তাই আমি মনে করি, চূড়ান্ত বিতর্কের আগে আমাদেরও মাদক পরীক্ষা করানো উচিত এবং কেন আমরা তা করবো না। অবশ্য যে অভিযোগ তিনি তুলেছেন, তার কোন প্রমাণ হাজির করেননি তিনি। ট্রাম্পের প্রচার শিবির আগে থেকেই সক্রিয়ভাবেই হিলারির স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। গত মাসে হিলারির নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে ট্রাম্প শিবির প্রচার চালায় যে, বড় ধরনের কোন স্বাস্থ্য সমস্যা তিনি গোপন করছেন এবং প্রেসিডেন্ট পদে তিনি অযোগ্য। ট্রাম্প এমন এক সময় হিলারির বিরুদ্ধে সর্বশেষ এ অভিযোগ এনেছেন যখন তিনি নারীদের সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য এবং নারীরা তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ নিয়ে আসছেন। নারীদের নিয়ে তার অশ্লীল ভিডিও প্রচারের পর অন্তত ১০ নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। তবে ট্রাম্প গত শুক্রবার বলেছেন, বিরোধীদের ইন্ধনে সংবাদমাধ্যম ও প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদরা একজোট হয়ে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন। তার দাবি, ওই নারীদের সঙ্গে তার ‘কিছুই হয়নি’ এবং নারীর প্রতি তার চেয়ে বেশি সম্মান আর কেউ দেখাতে পারবে না। নিউ হ্যাম্পশায়ারের ওই সমাবেশে ট্রাম্প আরও অভিযোগ করেন, হিলারির পক্ষে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত গণমাধ্যম’ আগামী নবেম্বরের নির্বাচনে ‘ভোট কারচুপি’ করার চেষ্টা করছে। তবে ট্রাম্প কারচুপির গন্ধ পেলেও তার দলের সিনিয়র নেতা মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পল রায়ান বলেছেন, আসছে ৮ নবেম্বরের নির্বাচন যে সুষ্ঠুভাবেই হবে, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। রায়ানের নারী মুখপাত্র এ্যাশলি স্ট্রং শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচনের ফলের উপর আমাদের গণতন্ত্রের আস্থা রয়েছে এবং স্পিকার সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে, সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে অঙ্গরাজ্যগুলো এই নির্বাচন পরিচালনা করবে। ট্রাম্পের নারীদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিও টেপ ফাঁস হওয়ার পরই রায়ান জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আর ট্রাম্পের পক্ষে বলবেন না। এরপর এক ডজনেরও বেশি রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেন। এদিকে হিলারির নির্বাচনী প্রচার শিবির থেকে বলা হয়েছে, উপায় না দেখে ট্রাম্প নির্বাচনকে হেয় করার চেষ্টা করছেন এবং ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে তারা দেখছে ভোটে হারার ভয় থেকে তার ‘নির্লজ্জ মন্তব্য’ হিসেবে। হিলারির নির্বাচনী প্রচার শিবিরের ম্যানেজার রবি মুক বলেছেন, প্রত্যাখ্যান বা হেয় করা নয়, ভোটারদের ভোট দিতে উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে ট্রাম্প হেরে যাওয়ার ভয়ে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে নির্বাচনকে হেয় করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমেরিকানদের সতর্ক করে বলেছেন, নবেম্বরের নির্বাচনে আসলে গণতন্ত্রের উপরই ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার মত সৎ ব্যক্তি নন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
×