ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৭০ কোটি টাকা তুলতে শেয়ার ছাড়বে পপুলার ফার্মা

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৭ অক্টোবর ২০১৬

৭০ কোটি টাকা তুলতে শেয়ার ছাড়বে পপুলার ফার্মা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে ৭০ কোটি টাকা উত্তোলন করতে চায় পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। যার বড় একটি অংশ কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজে লাগানো হবে। এর মাধ্যমে ওষুধ শিল্পে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করতে চায় কোম্পানিটি। আগামী ২৪ অক্টোবর রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে কোম্পানিটির রোড শো অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালের কারখানা পরিদর্শন করেন সাংবাদিকরা। কোম্পানিটির কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ওষুধ উৎপাদনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সরেজমিনে ঘুরে দেখান। জানা গেছে, পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা অর্থের ৬৩ শতাংশ বা ৪৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে ব্যবসা সম্প্রসারণে। এই অর্থ মূলত সলিড ওষুধ (ট্যাবলেট, ক্যাপসুল) তৈরির মেশিনারিজ আমদানি করা হবে। কোম্পানির ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে ২৩ কোটি টাকা। আর আইপিওতে ব্যয় হবে ৩ কোটি টাকা। ৩০ জুন, সমাপ্ত হিসাব অনুযায়ী প্রথম ৬ মাসে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৬ পয়সা। আলোচ্য সময়ে শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য হয়েছে ১৩ টাকা ১২ পয়সা। এই সময়ে ২২৫ কোটি টাকার পণ্য সেল হয়েছে কোম্পানিটির। সর্বশেষ ৩ বছরে কোম্পানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ। এ সময় কোম্পানির সার্বিক বিষয় অবহিত করার জন্য ২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। কোম্পানির পরিচালক কামরুল হাসান বলেন, বাংলাদেশে এখন ওষুধ শিল্পের বাজার প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে প্রায় ২ শতাংশ বাজার পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের দখলে। তিনি জানান, যে দেশ আগে আমদানিনির্ভর ছিল, সে দেশ এখন ৯৭ ভাগ ওষুধ উৎপাদন করে। আর আমদানি হয় মাত্র ৩ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ ইউরোপের দেশগুলোতে ওষুধ শিল্পের প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে। যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অনেক বেশি। বাংলাদেশে এই হার ২০ শতাংশের ওপরে। পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। সারাদেশে কোম্পানির ২০টি নিজস্ব সরবরাহ ব্রাঞ্চ রয়েছে। কামরুল হাসান বলেন, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের এখন ৪০০-এর বেশি ব্র্যান্ড রয়েছে। ২০০৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০০টির বেশি ব্র্যান্ড ওষুধ রফতানি করা হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। অন্য একটি উপস্থাপনায় পরিচালক এম মালেক চৌধুরী কোম্পানির তৈরিকৃত বিভিন্ন পণ্যের দিক তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলতে চাই মূলত কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য। আমরা এই টাকা দিয়ে সলিড পণ্য তৈরির মেশিন আমদানি করতে চাই। তবে এর মাধ্যমে কোম্পানির উৎপাদন ক্ষমতা আরও বাড়বে বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, কারখানার পাশে আরও একটি ৬তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। সেটা করতে পারলে আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়বে। অবশ্য পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকা দিয়ে যে মেশিনারিজ কেনা হবে তা বর্তমান কারখানাতেই স্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি। ১৯৮৩ সালে ডায়াগনাস্টিক সেন্টারের মাধ্যমে জন্ম হয় পপুলার গ্রুপের। এরপর ২০০৫ সালে ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে যাত্রা শুরু করে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এরপর ২০০৬ সালে ওষুধ রফতানি শুরু। এখন কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১২০ কোটি টাকা। এ সময় কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ বদরুদ্দিন, কোম্পানির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার রবিন কুমার পাল ও সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মাসুদ হাসানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×