ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টে দুই আসামির আবেদন বাতিল

তালসরা দরবার শরীফের অর্থলুট মামলা বিচারে আর কোন বাধা নেই

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৭ অক্টোবর ২০১৬

তালসরা দরবার শরীফের অর্থলুট মামলা বিচারে আর কোন বাধা নেই

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে করা দুই আসামির আবেদন বাতিল হয়েছে। ফলে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় তালসরা দরবার শরীফের দুই কেটি টাকা লুটের চাঞ্চল্যকর মামলাটির বিচারকাজ শুরু হতে আর কোন বাধা নেই। রবিবার চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সার এ মামলার চার্জশীটসহ সংশ্লিষ্ট সকল নথিপত্র বিচারিক আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আগামী ২৯ নবেম্বর শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছেন। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৪ নবেম্বর আনোয়ারার তালসরা দরবার শরীফে ঘটে এ লুটের ঘটনা। র‌্যাব সদস্যরা তল্লাশির নামে দরবারে গিয়ে দুই কোটি সাত হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ আনে দরবার কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আনোয়ারা থানায় র‌্যাবের ১২ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় আসামিরা হলেনÑ র‌্যাব-৭ এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (চাকরিচ্যুত) জুলফিকার আলী মজুমদার, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (চাকরিচ্যুত) শেখ মাহমুদুল হাসান, র‌্যাব-৭ এর সাবেক ডিএডি আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, র‌্যাবের তিন সোর্স দিদারুল আলম ওরফে দিদার, আনোয়ার মিয়া ও মানব বড়ুয়া। মামলাটি দায়ের করেন দরবারের পীরের গাড়িচালক মোঃ ইদ্রিস। মামলার বিবরণে জানা যায়, লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদারের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল তল্লাশি অভিযানের নামে দরবার শরীফের লকার ভেঙ্গে দুই কোটি সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়। মামলাটি দেশজুড়ে আলোচিত হয়। তালসরা দরবার শরীফে পরিচালিত ওই অভিযানে মিয়ানমারের পাঁচ নাগরিককে আটক করা হয়। বিচারের জন্য তাদের হস্তান্তর করা হয় আনোয়ারা থানায়। কিন্তু সেখান থেকে টাকা সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে উল্লেখ করেনি র‌্যাব। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে র‌্যাব সদর দফতর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদুল হাসানকে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীতে ফিরিয়ে নেয়া হয়। পরে চাকরিচ্যুত করা হয়। মামলার সকল আসামিই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, চার্জশীট দাখিলের পর উচ্চ আদালতে মামলাটি বাতিলের আবেদন জানান অন্যতম আসামি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (চাকরিচ্যুত) শেখ মাহমুদুল হাসান। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে এর বিচারকাজ ২০১২ সালের ১৮ নবেম্বর পর্যন্ত স্থগিত ছিল। তবে চলতি বছরের ১৭ আগস্ট ওই বাতিলের আবেদনটি খারিজ করে দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জেম হোসেন ও বিচারপতি এম বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আ ক ম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মামলাটির বিচারকাজ পুনরায় শুরু হতে আর কোন বাধা নেই। চট্টগ্রামে বিচারিক দায়িত্বে যিনি আছেন তিনি শুনানি করতে পারবেন। বিচার শুরুর জন্য মামলাটি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
×