ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দুবাই টেস্ট

আজহারের ইতিহাস, রানের পাহাড়ে পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

আজহারের ইতিহাস, রানের পাহাড়ে পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আজহার আলির ইতিহাস গড়া ট্রিপল সেঞ্চুরির ওপর ভর করে দুবাই টেস্টে রানের পাহাড় গড়েছে পাকিস্তান। দ্বিতীয়দিন শেষেই ৩ উইকেটে ৫৭৯ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছেন অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক। জবাবে তৃতীয়দিন রিপোর্ট লেখার সময় ২ উইকেটে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ১৩৮ রান। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডে-নাইট টেস্টে প্রথমদিনেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন, দ্বিতীয়দিন সেটিকে কেবল ডাবলেই রূপ দেননি, অনন্য ‘ট্রিপলে’ নিয়ে গেছেন আজহার! পাকিস্তানী ওপেনার খেলেছেন অপরাজিত ৩০২ রানের মনোমুগ্ধকার ইনিংস। মাত্র চতুর্থ পাকিস্তানী হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন আজহার। পাকিস্তানের এটি ৪০০তম টেস্ট ম্যাচ, আজহারের ৫০, তার ওপর উপমহাদেশে প্রথম ডে-নাইট (সর্বোপরি দ্বিতীয়), সেখানে ব্যাট হাতে অনন্য এক ইতিহাসই গড়েছেন ৩১ বছর বয়সী পাঞ্জাব তারকা। হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন সামি আসলাম (৯০), আসাদ শফিক (৬৭) ও বাবর আজম (৬৯)। ১৫৬তম ওভারের তৃতীয় বলে জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে কাভার অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে ইতিহাসে নাম লেখান আজহার। চতুর্থ পাকিস্তানী ও টেস্ট ইতিহাসের ২৫তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন তিনি। ঠিক তখনই ইনিংস ঘোষণা করে দেন মিসবাহ। এটি টেস্টের ২৯ নম্বর ট্রিপল সেঞ্চুরি, কারণ চারজন ব্যাটসম্যান দু’বার করে এই কীর্তি গড়েন। পাকিস্তানের হয়ে এর আগে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন গ্রেট হানিফ মোহাম্মদ (৩৩৭ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৫৮), ইনজামাম-উল হক (৩২৯ বনাম নিউজিল্যান্ড ২০০২) ও ইউনুস খান (৩১৩ বনাম শ্রীলঙ্কা ২০০৯)। ৫০তম টেস্টে ১১ নম্বর সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আজহার স্বদেশী সাবেক তারকা মোহাম্মদ ইউসুফের পাশে নাম লিখিয়েছেন। এর আগে নিজের ৫০তম টেস্টে ১১টি করে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ইউসুফ। পাকিস্তানের হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ৫০ টেস্টে আজহারের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে মাত্র দু’জনের, একজন সদ্য প্রয়াত গ্রেট হানিফ মোহাম্মদ। অপরজন আজহারের বর্তমান সতীর্থ ইউনুস খান। দু’জনই ৫০ টেস্টে ১২টি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। ৪৬৯ বলে গৌরবময় মাইলফক স্পর্শ করেন আজহার। চার ২৩ ও ছক্কা ২টি। ৬৫৮ মিনিট ক্রিজে থাকেন। গত নবেম্বরে এ্যাডিলেডে প্রথম ডে-নাইট টেস্ট খেলে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। ওই ম্যাচে কেউ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। এক বছরের ব্যবধানে গোলাপী বলে ফ্ল্যাড-লাইটের আলোয় অভিজাত ক্রিকেটের রোমাঞ্চকে স্মরণীয় করে রাখলেন পাকিস্তান ওয়ানডে অধিনায়ক। প্রথমদিনেই সেঞ্চুরি তুলে নেয়া আজহার অপরাজিত ছিলেন ১৪৬ রান করে। দ্বিতীয়দিনেও ক্যারিবীয় বোলারদের তুলোধুনো করেছেন। ১৯ চার ও ১ ছক্কায় ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৫৭ বলে। একইদিনে সেটিকেও ছাড়িয়ে যান। ডে-নাইট টেস্টের প্রথম সেঞ্চুরিটাকে ডাবল ছাড়িয়ে ট্রিপলে রূপ দেন ক্ল্যাসিক্যাল ওপেনার। চার মেরে যখন দু’হাত উচিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন দুবাই স্টেডিয়ামের গ্যালারি তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম থেকে সম্মান জানান প্রধান নির্বাচক ইনজামাম-উল হক, কোচ মিকি আর্থার ও অন্যান্য কর্মকর্তা। ও হ্যাঁ, ডাবল সেঞ্চুরির পর মিসবাহর সৌজন্যে ইদানীং পাকিস্তানী উদ্যাপনের ট্রেন্ড হয়ে যাওয়া সেই ‘বুক ডন’টাও দিয়েছিলেন আজহার!
×