ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কৌশল পাল্টিয়েছে জঙ্গীরা, বিদেশ থেকে অর্থ আসছে হুন্ডিতে

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

কৌশল পাল্টিয়েছে জঙ্গীরা, বিদেশ থেকে অর্থ আসছে হুন্ডিতে

শংকর কুমার দে ॥ জঙ্গী অর্থায়নের উৎস জানতে কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। গুলশান, শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা ও কল্যাণপুর, রূপনগর, আজিমপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইলে পৃথক অভিযানে নগদ প্রায় কোটি টাকা পাওয়া গেছে জঙ্গী আস্তানায়। জঙ্গী আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কোটি টাকা মূল্যের অস্ত্র, গোলাবারুদ, গ্রেনেড-বোমা, বিস্ফোরক, মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, জিহাদী বইসহ জঙ্গী হামলায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি। কিন্তু জঙ্গী অর্থায়নে মদদদাতারা এখনও রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। জঙ্গী হামলা ও অভিযানের ঘটনার পর ব্যাংকিং চ্যানেলে জঙ্গী অর্থায়নে কড়াকড়ি আরোপের পর বিদেশ থেকে অর্থ আসছে হুন্ডি চ্যানেলে। কোন্ কোন্ দেশ থেকে কিভাবে কার মাধ্যমে জঙ্গীদের কাছে টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে তার তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গত সপ্তাহে সাভারের আশুলিয়ায় অভিযানকালে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাঁচতলা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে গুরুতর আহতাবস্থায় আটক নব্য জেএমবির অর্থের প্রধান যোগানদাতা আবদুর রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ওই জঙ্গী আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ৩০ লাখ টাকা, বিদেশী পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র, মোবাইল জ্যামার ও জঙ্গীবাদী বই। জঙ্গী অর্থায়নকারী নিহত আবদুর রহমানের পরিবারের চার সদস্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে আজিমপুরে পুলিশের অভিযানকালে নিহত জঙ্গী আবদুল করিম ওরফে তানভীর কাদেরী নিহত হওয়ার পর নারী জঙ্গী আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় চারটি পিস্তল, ৫০ রাউন্ড গুলি, বিস্ফোরক, চারটি ল্যাপটপ ও নগদ প্রায় তিন লাখ টাকা। গত বছরের আগস্ট মাসে চট্টগ্রামভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন ‘শহীদ হামজা ব্রিগেডে’ এক কোটি আট লাখ টাকা অর্থায়নের অভিযোগে রাজধানীর ধানম-ি এলাকা থেকে গ্রেফতার হন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী বিএনপিদলীয় সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের কন্যা ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, এ্যাডভোকেট লিটন, এ্যাডভোকেট বাপনসহ তিন আইনজীবী। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলা ও জঙ্গী আস্তানায় পুলিশ অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, অস্ত্র-গোলাবারুদ, গ্রেনেড-বোমা ও হামলার সরঞ্জামাদি উদ্ধারের পর জঙ্গী অর্থায়নের বিষয়টির তদন্তে নতুন মোড় নিয়েছে। তদন্তে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে দুবাই ও কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম সামনে এসেছে। তদন্তে পাওয়া তথ্যানুযায়ী মধ্যপ্রাচ্য থেকে তিন ধাপে হুন্ডিতে ৫০ লাখ টাকা এসেছে ঢাকায়, যা জঙ্গীদের হস্তগত হয়েছে। এ টাকা বাংলাদেশের একাধিক হুন্ডি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে সংগ্রহ করে জঙ্গীরা। ভয়ঙ্কর একে-৪৭ রাইফেলসহ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দেশে আনা হয় ভারত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে। এপার-ওপারের দুই মিজান এ অস্ত্রগুলো নিয়ে আসে। অস্ত্র ছাড়াও গ্রেনেড তৈরির বিপুলসংখ্যক ডেটোনেটর আনা হয়েছে একই পথে। অর্থ যোগানদাতা হিসেবে বাংলাদেশের তিন ব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। পাকিস্তান ও ভারতের আরও দুই ব্যক্তির জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে দুবাই থেকে পাকিস্তান ও ভারতীয় দুই নাগরিক প্রথম দফায় ২০ লাখ টাকা, দ্বিতীয় দফায় ১৮ লাখ এবং তৃতীয় দফায় ১০ লাখ টাকা হুন্ডিতে পাঠিয়েছে ঢাকায়। বাংলাদেশী হুন্ডি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে এ টাকা গ্রহণ করে পলাতক জঙ্গী বাশারুজ্জামান এবং রাজীব গান্ধী। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশকে (হুজিবি) সংগঠিত করতে দুবাই থেকে অর্থ পাঠিয়েছে হুজিবির পলাতক সাবেক আমির মুফতি শফিকুর রহমান। কয়েক দফায় এ অর্থ পাঠিয়েছেন তিনি। অর্থ পাঠানো সংক্রান্ত কাগজপত্র ঢাকার কোতোয়ালি থানা এলাকার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। দুবাইয়ে মুফতি শফিকুর রহমান আত্মগোপন করে আছেন। মুফতি শফিকুর রহমান রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি। বিভিন্ন সময়ে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের গ্রেফতার হওয়া সদস্যদের বর্তমান কী অবস্থা এবং তাদের পরিবারকে কী ধরনের সাহায্য করা হয়েছে সে সম্পর্কে কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। হুজিবি তাদের সদস্যদের কিভাবে আর্থিক সহায়তা করে থাকে সে সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য পাওয়ার পর তা তদন্ত করে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ। গুলশান হত্যা ও শোলাকিয়া হামলাসহ সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত অধিকাংশ গুপ্তহত্যার মিশন সফল করতে জঙ্গীদের হাতে বিদেশ থেকে টাকা এসেছে হুন্ডি চ্যানেলে। এমনকি দেশের ভেতরেও জঙ্গীরা নিজেদের মধ্যে অর্থ লেনদেন করেছে সম্পূর্ণ নতুন কৌশলে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গোয়েন্দারা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকলেও জঙ্গী অর্থায়নের কোন ক্লু এতদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গুলশান হত্যাকা-ের মাত্র এক সপ্তাহ আগে এ মিশনে অংশগ্রহণকারীদের হাতে নগদ অর্থ পৌঁছে দেয়া এক হুন্ডি ব্যবসায়ী সম্প্রতি গোয়েন্দাজালে আটকের পর জঙ্গী অর্থায়নের চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে। নব্য জেএমবির অর্থায়নের উৎস সম্পর্কে জানতে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের পক্ষ থেকে কয়েকটি রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে। যেসব দেশ থেকে অবৈধ চ্যানেলে জঙ্গীদের কাছে টাকা এসেছে সেসব দেশের কাছে ইতোমধ্যে সহায়তাও চেয়েছে কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। অন্যদিকে দুবাই থেকে হুন্ডির মাধ্যমে নব্যধারার জেএমবির কাছে যে ১৪ লাখ টাকা এসেছিল তা গ্রহণ করেছিল পলাতক জঙ্গী নেতা বাশারুল্লাহ ওরফে চকলেট। পরে সে ওই টাকা নব্যধারার জেএমবির প্রধান তামিম চৌধুরীর হাতে পৌঁছে দেয়। দুবাই থেকে বাংলাদেশী জঙ্গীদের কাছে কে টাকা পাঠিয়েছিল তা জানতে চান কাউন্টার টেররিজম বিভাগের কর্মকর্তারা। এজন্য নানামুখী তদন্ত করছে পুলিশ। বিদেশ থেকে এবং দেশের ভেতর থেকে জঙ্গীদের কাছে যে মোটা অঙ্কের টাকা নব্যধারার জেএমবির কাছে আসত তার বেশিরভাগ রাখা হতো তামিম চৌধুরী ও আব্দুল করিম ওরফে তানভীর কাদেরীর কাছে। পরে তারা এ টাকা ঘরভাড়া, অবৈধ অস্ত্র ক্রয়সহ অন্যান্য কাজে ব্যয় করতেন। ইতোমধ্যে অস্ত্রের রুট এবং অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। এখন তাদের ধরতে অভিযান চলছে। অস্ত্রের চালান ভারত থেকে আসে, যে কারণে অবৈধ অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে জানতে ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। কয়েকটি জঙ্গী হামলার মিশন সফল করতে হুন্ডির মাধ্যমে কয়েক দফায় প্রায় ৪৪ লাখ টাকা দেশে এসেছে বলে খবর পেয়েছে গোয়েন্দারা। তবে কারা এ অর্থদাতা এবং কবে, কোথায় জঙ্গীরা এ অর্থ গ্রহণ করেছে তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, গুলশান হামলার আগে যে হুন্ডি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ঢাকায় টাকা আনা হয়েছিল, তাকে বেশ কয়েকজন জঙ্গীর ছবি দেখানো হলে তিনি তাদের দুজনকে শনাক্ত করেন। তবে দুবাইয়ে হুন্ডির টাকা কে পরিশোধ করেছিল, সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি। গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে আটক জঙ্গীরা জানান, জঙ্গী অর্থায়ন বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সন্দেহজনক লেনদেন তদারকি শুরুর পর থেকে তারা হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদান করে আসছেন। তবে ছোট অঙ্কের কিছু টাকাও ব্যাংকিং চ্যানেলে এসেছে। এছাড়া বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও এনজিওর মাধ্যমেও বিদেশ থেকে টাকা আসার কথাও তারা স্বীকার করেন। জেএমবিসহ অন্য জঙ্গী সংগঠনগুলো আগে দেশের ভেতর থেকে যাকাত, কোরবানির পশুর চামড়া ও বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় দান থেকে অর্থ সংগ্রহ করত। এখন তাদের নেতাকর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী বিদেশ থেকে টাকা পাঠাচ্ছে, যা দিয়ে জঙ্গীরা অস্ত্র-গোলাবারুদ কিনছে। এছাড়া তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায়ও এ অর্থ ব্যবহৃত হচ্ছে। জঙ্গী নিয়ে কাজ করা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার ধারণা, শুধুমাত্র এদিকে নজরদারি বাড়িয়ে জঙ্গী অর্থায়ন বন্ধ করা যাবে না। এজন্য প্রযুক্তিনির্ভর আরও কৌশলী ছক তৈরি করতে হবে। এর সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তারা বলেন, জঙ্গী অর্থায়ন বন্ধে ব্যাংকিং চ্যানেলে সব ধরনের সন্দেহভাজন লেনদেনের ওপর নজরদারি শুরুর পর তারা হুন্ডি চ্যানেলের বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছে। এখন হুন্ডি চ্যানেল বাধাগ্রস্ত হলে তারা ভিন্ন কৌশল কাজে লাগাবে। লোক মারফত কিংবা ভিন্ন নেটওয়ার্কে তারা টাকা পাঠাবে, যা শনাক্ত করতে গোয়েন্দাদের অনেকটা সময় লেগে যাবে। তাই জঙ্গী অর্থায়ন বন্ধে সবার আগে এর নেপথ্য মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে হবে বলে মনে করেন ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে সারাদেশের ৬৩ জেলায় একসঙ্গে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজের শক্তি জানান দেয় ইসলামী জঙ্গীবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। এরপর থেকে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটেছে নীরবে। এ সময় বাংলাদেশের জঙ্গীরা আন্তর্জাতিক জঙ্গীগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, প্রশিক্ষণ ও হামলায় পারস্পরিক সহযোগিতা পেয়েছে। জঙ্গীবাদের এ আন্তর্জাতিকায়নের মতো এর অর্থায়নের উৎসমুখও বড় হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গী অর্থায়নের উৎস খুঁজতে উচ্চপর্যায়ের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জঙ্গীবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে কাজ করলেও সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি। তবে জঙ্গীবাদে অর্থায়নের অভিযোগে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ৩৫টি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট জব্দ করে রেখেছে। এ এ্যাকাউন্টগুলো সিরিয়া যুদ্ধে অংশ নিয়ে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত বাংলাদেশী জঙ্গী সাইফুল হক সুজন ও তার আত্মীয়স্বজনের। বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্তে জানতে পারে, বিভিন্ন দেশ থেকে সুজন ও তার ঘনিষ্ঠদের এ্যাকাউন্টে দুই কোটি ২২ লাখ টাকা আসে। পরে ওই টাকা যুক্তরাজ্য হয়ে সিরিয়ায় আইএসের জঙ্গীদের কাছে পাঠানোর অভিযোগে এ্যাকাউন্টগুলো জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। জঙ্গীবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থা সুরক্ষার জন্য ফিন্যান্সিয়াল এ্যাকশন টাস্কফোর্স অন মানি লন্ডারিংয়ের (এফএটিএফ) ৪০টি সুপারিশ আছে। র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ও মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিভিন্ন সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে জঙ্গী অর্থায়নে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের দেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য র‌্যাব যাচাই-বাছাই করে দেখেছে। বিদেশ থেকেও বিপুল সাহায্য আসছে। শুধু ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে নয়, আরও অনেকভাবেই আসতে পারে বলে মনে করেন এ র‌্যাব কর্মকর্তা। গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, জঙ্গী সদস্যদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ হয় মাসের পর মাস। মালয়েশিয়া, তুরস্ক, সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে-আসছে যাত্রীবেশী জঙ্গীরা। হামলায় ব্যবহার হচ্ছে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র। শূন্য হাতে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়া তরুণ জঙ্গীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে অস্ত্র ও অর্থ। জঙ্গী অর্থায়ন করছে এমন বাংলাদেশী বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, জঙ্গীদের অর্থ যোগানদাতা ও অস্ত্র দেশে নিয়ে আসার রুটও চিহ্নিত করা হয়েছে। কারা অস্ত্র এনেছে এবং কারা অস্ত্র গ্রহণ করেছে তার সবই এখন স্পষ্ট। যেসব দেশ থেকে নব্যধারার জেএমবির কাছে টাকা এসেছে আমরা তার উৎস জানার চেষ্টা করছি। এজন্য দেশগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
×