ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনা তিস্তা চুক্তির জোরালো দাবি তুলতে পারেন মোদির কাছে

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

শেখ হাসিনা তিস্তা চুক্তির জোরালো দাবি তুলতে পারেন মোদির কাছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিকস-বিমসটেক লিডারস আউটরিচ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ রবিবার গোয়া যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি আজ সকাল আটটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। ফ্লাইটটি বেলা পৌনে এগারোটায় (ভারতীয় সময়) গোয়া পৌঁছবে। সফরকালে আজ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অত্যন্ত আলোচিত ইস্যু তিস্তা চুক্তির জোরালো দাবিটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে নতুন করে তুলে ধরতে পারেন বলে জানা গেছে। আর এ ব্যাপারে ভারত সরকারও যে আগ্রহী, তাও ইতোমধ্যে জানতে পেরেছে দু’দেশের কূটনীতিক মহল। প্রধানমন্ত্রী বিকেলে ভারতে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস-বিমসটেক লিডারস আউটরিচ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। গোয়ায় অনুষ্ঠেয় ১৫-১৬ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের থিম হচ্ছেÑ ‘ব্রিকস-বিমসটেক : একটি অংশীদারিত্বের সুযোগ।’ ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রেয়ুট চ্যান-ও-চা এবং নেপালী প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী আলিনা সালদানহা, গোয়া সরকারের সচিব (কোপারেশন) পদ্মা জয়সবাল এবং মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার সামিনা নাজ গোয়া নৌ-বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল সোমবারই দেশে ফিরবেন। কূটনৈতিক সূত্র এবং ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর ভারতে এ সফরের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়টি প্রাধান্য পেতে পারে। গোয়ায় নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে তিস্তা নিয়ে দিল্লীর ওপর প্রচল চাপ সৃষ্টি করেছে ঢাকা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রীর সামনে এর গুরুত্বকে তুলে ধরতে বাংলাদেশের কূটনীতিকরা জোরদার লবি করেছেন। আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তা চুক্তি নিয়ে যে আপত্তি করেছেন সে সম্পর্কে ঢাকা ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশ সরকার এটাও জানে যে এখনও মমতা তার অবস্থানে কোন বদল করেননি। কিন্তু বাংলাদেশ এবার পুরো ব্যাপারটাই নরেন্দ্র মোদির মাধ্যমেই করতে চাইছে। মমতাকে রাজি করানোটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়Ñ এ যুক্তিতে দায়িত্ব মোদির ওপরই ছেড়ে দিয়েছে ঢাকা। নয়াদিল্লীর কূটনীতিকদের মতে, শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৬ অক্টোবরের (আজ রবিবার) বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি তিস্তার ব্যাপারে ইতিবাচক বার্তাই দিতে চাইছেন। মমতা ব্যানার্জীর তোলা অভিযোগগুলো দ্রুত মেটাতে চান দেশটির প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সচিব ভাস্কর খুলবেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিস্তা নিয়ে সিকিমের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যে বিবাদ চলছে, তা-ও মেটানোর ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্র। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে জানিয়েছেন, তিস্তা চুক্তি করতে তার কোন অসুবিধা নেই। পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে কিছু ত্যাগ স্বীকার করেও তিস্তা চুক্তি করতে আগ্রহী নরেন্দ্র মোদি। এ বিষয়টিই আজকের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রাধান্য পেতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
×