ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বিশ্ব খাদ্য দিবস

খাদ্যশস্য উৎপাদনে রেকর্ড গড়ছে দেশ

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

খাদ্যশস্য উৎপাদনে  রেকর্ড গড়ছে  দেশ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আজ ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস। খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বেশ সাফল্য আর্জন করেছে। রেকর্ড গড়ছে প্রতিটি খাদ্যশস্য উৎপাদনে। দেশের প্রধান খাদ্যশস্য চাল উৎপাদনে ইতোমধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে রফতানিও করছে। দিন দিন বাড়ছে সবজির উৎপাদন। মাছ চাষে সাফল্য ঈর্ষণীয়। বিভিন্ন ফল উৎপাদনের হার অন্য যে কোন দেশের চেয়ে বেশি। কলা উৎপাদনে বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন চাষীরা। বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, ফসল উৎপাদন এবং পরবর্তী প্রতিটি ধাপে যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মল পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমেই অধিক উৎপাদনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার কৃষির সার্বিক উন্নয়নে কৃষিবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সার, বীজসহ সকল কৃষি উপকরণের মূল্যহ্রাস, কৃষকদের সহজশর্তে ও স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, ১০ টাকায় ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগসহ তাঁদের নগদ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। জাতীয় পরিসংখ্যান অনুসারে কৃষি খাতে জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট) অবদান ২১ শতাংশ, কৃষি শ্রমে ৪৮ আর কৃষির সাব-সেক্টরসহ এ অবদান ৫৬ শতাংশ। দেশের কৃষকের শ্রম, কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকি, কৃষি বিজ্ঞানীদের গবেষণা ও সরকারের সদিচ্ছায় ধান চাষ ও চাল উৎপাদনের পাশাপাশি অন্য খাদ্যশস্য উৎপাদনে রেকর্ড গড়ছে বাংলাদেশ। এতে পাল্টে গেছে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বা জিডিপির গ্রাফচিত্র। তথ্য-উপাত্ত বলছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশের চাল নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে ৭ দেশ। মিসর, মালদ্বীপ, নাইজেরিয়া, মরক্কো, সাউথ আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশ। রফতানির বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে ইতোমধ্যে সরকারী উদ্যোগে খাদ্যশস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে গুণগতমানের পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগ্রহী ক্রেতা-দেশের পাশাপাশি নতুন দেশও খোঁজা হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ এখন চাল রফতানিকারক দেশ। আমরা এখন বছরে এক-দুই লাখ টন চাল রফতানি করতে পারি। শ্রীলঙ্কায় চাল রফতানি করেছি। নেপালে দুর্যোগের সময় ১০ হাজার টন চাল সাহায্য দিয়েছি। আফ্রিকায় চাল রফতানির জন্য বাজার খুঁজছি। ইতোমধ্যে রফতানিযোগ্য দেশগুলোর বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারীভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে, সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাদ্য এবং কৃষিও বদলাবে’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও অধিক খাদ্য উৎপাদনের ফলে কৃষিজমির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তাই কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি দরকার টেকসই কৃষি পরিবেশ নিশ্চিত করা। বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্য চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান এ চাহিদা মেটাতে সারাবিশ্বেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ফসল উৎপাদনের শুরু থেকে ভোক্তা পর্যন্ত খাদ্য পৌঁছে দেয়ার প্রতিটি স্তরেই আধুনিক লাগসই কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৬’ পালন করা হচ্ছে জেনে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, কৃষির ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়তে তাঁর সরকার সক্ষম হবে। তিনি বিশ্ব ‘খাদ্য দিবস ২০১৬’র সকল কর্মসূচীর সাফল্য কামনা করেন।
×