ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৭১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করবে আইসিবি

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

১৭১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করবে আইসিবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১০ সালের বাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত মার্জিন ঋণধারী গ্রাহকদের সুদ মওকুফের উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ লিমিটেড (আইসিবি)। সাড়ে ১২ হাজারের বেশি মার্জিনধারী বিও হিসাবের বিপরীতে ১৭১ কোটি ৮ লাখ টাকার সুদ মওকুফের প্রস্তাব পরবর্তী পর্ষদ সভায় উত্থাপন করবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটি। এতে গ্রাহকদের একটি বড় অংশই পুঁজিবাজারে সক্রিয় হতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার-উজ-জামান বলেন, বাজার ধসের পর ক্ষতিগ্রস্ত মার্জিনধারী গ্রাহকদের কাছে মার্জিন ঋণের সুদ বাবদ পাওনা মওকুফের একটি প্রস্তাব পরবর্তী পর্ষদ সভায় উত্থাপন করা হবে। পর্ষদ তা অনুমোদন করলে আশা করছি, সুবিধাপ্রাপ্ত গ্রাহকদের একটি বড় অংশই বাজারের লেনদেনে নিয়মিত হতে পারবেন। বিষয়টি বাজারের জন্যও ইতিবাচক হবে। তিনি আরও জানান, ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মার্জিনধারী গ্রাহকদের প্রকৃত লোকসান নিরূপণ ও তাদের জন্য সুবিধা প্রস্তাবে স্বাধীন নিরীক্ষকের সহায়তা নিয়েছে আইসিবি। জানা গেছে, আইসিবি তাদের ৭ হাজার ৭৪ জন মার্জিন গ্রাহকের ৮০ শতাংশ সুদ মওকুফ করবে। মার্জিন ঋণের কারণে যাদের নিজস্ব ইক্যুইটি ঋণাত্মক হয়ে গেছে, তারা এ সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে আইসিবিকে প্রায় ১৬৬ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করতে হবে। অন্যদিকে বড় লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে দেয়াসহ নানা কারণে যাদের পোর্টফোলিওর মোট সম্পদমূল্য শূন্যে নেমে গেছে, তাদের সুদ শতভাগ মওকুফ করে দেয়া হবে। তবে মার্জিন ঋণের আসল পরিশোধ করতে হবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে। এ ধরনের গ্রাহকের সংখ্যা ৫ হাজার ৫৭৫। ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মার্জিনধারী গ্রাহকদের কাছে সুদাসলে আইসিবির পাওনা ৪২৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২১৭ কোটি টাকা মার্জিন ঋণের আসল এবং বাকিটা (২১২ কোটি টাকার বেশি) সে ঋণের সুদ বাবদ। এখন ফোর্সড সেল করা হলে আইসিবি বড়জোর ১৪৩ কোটি টাকা পুনরুদ্ধার করতে পারবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ঋণাত্মক ইক্যুইটির ৭ হাজার ৭৪ জন গ্রাহক যদি তাদের ২০ শতাংশ সুদ পরিশোধ করেন, তাহলে আইসিবি ৪১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পাবে। ব্রোকারেজ সাবসিডিয়ারির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল মিলিয়ে বর্তমানে ৪০ হাজারের বেশি বিনিয়োগকারীকে সেবা দিচ্ছে আইসিবি। এর বাইরে ২০১০ সালের ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার ঘোষিত ৯০০ কোটি টাকার বিশেষ পুনর্অর্থায়ন স্কিমেরও তদারক তারা। অবশ্য সেকেন্ডারি বাজারের সার্বিক পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও তহবিলের প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা অবণ্টিত রয়ে গেছে। বাজার-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সুদ মওকুফ সুবিধা পাওয়া বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশই সেকেন্ডারি বাজারে সক্রিয় হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবেন। বিভিন্নভাবে মার্জিন ঋণের কারণে আটকে যাওয়া বিও হিসাবগুলোকে লেনদেনে সক্রিয় করা গেলে তা শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে ভূমিকা রাখবে। দেশের মার্চেন্ট ব্যাংকাররাও এ কারণে সম্প্রতি সরকারের কাছে ৬ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল দাবি করেছে। তাদের গ্রাহক ও নিজ পোর্টফোলিওতে ঋণাত্মক ইক্যুইটির মোট অংকটিও প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।
×