ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রায়ান ফাং, ওয়াশিংটন পোস্ট

শত শত মার্কিন টেক কোম্পানি ভোটের দিন ছুটি থাকবে

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৫ অক্টোবর ২০১৬

শত শত মার্কিন টেক কোম্পানি ভোটের দিন ছুটি থাকবে

যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৪ সালের নির্বাচন পর্বে ভোটার উপস্থিতি যা ছিল তাকে কমের দিক থেকে নতুন রেকর্ড বলা চলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জনসংখ্যার অনুপাতে এত কম সংখ্যক আমেরিকান আর কখনও ভোট দিতে যায়নি। গত কয়েক দশক ধরেই ভোটারের উপস্থিতি ক্রমেই কমছে। এখন এই ধারাটা পাল্টে দিতে আমেরিকার প্রায় ৩শ’ টেক শার্মে ঠিক করেছে যে ৮ নবেম্বর অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন তাদের কর্মচারীরা সচেতন ছুটি ভোগ করবে। কোম্পানিগুলো আশা করে যে তাদের এই পদক্ষেপ অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এমনকি ফেডারেল সরকারকেও একই পথে পা বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করবে। গত কয়েক দশক ধরে ভোটারদের অংশগ্রহণ যে কমে আসছে তার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি বিষয়কে দায়ী করে থাকেন। তবে ভোটারদের অংশগ্রহণে অনীহার কারণের চাইতে যে বিষয়টি তাদের কাছে অধিকতর উদ্বেগজনক তাহলো এর পরিণতি। ব্রুকিং ইনস্টিটিউশনের স্কলার উইলিয়াম গলস্টনের মতে, রাজনৈতিক পরিম-লের উভয় প্রান্তে যেসব মতাদর্শ গত কট্টরবাদীর অবস্থান তাদের অন্যান্য আমেরিকানের চেয়ে ভোট দেয়ার প্রবণতা বেশি তবে সেই সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতির হার কমে যাওয়ার অধিকতর উগ্রবাদী প্রার্থী বা নীতির আবির্ভাব ঘটতে পারে। ভোটার উপস্থিতির হার হ্রাস পাওয়ায় মার্কিন রাজনীতির উত্তরোত্তর মেরুকরণ ঘটছে। টেক শিল্পের যেসব মালিক নির্বাচনের দিনটি সচেতন ছুটি ঘোষণা করেছে তাদের বিশ্বাস এই উদ্যোগের ফলে রাজনীতির মেরুকরণ ঘটার কিংবা উগ্রবাদী রাজনীতির উত্থান ঘটার প্রয়াস মার খেতে পারে। এমনকি এর ফলে মার্কিন রাজনীতির ধারাও বদলে যেতে পারে। এই ভাবনা থেকেই সাবেক গুগল কর্মচারী ও বর্তমানে ভেনচার ক্যাপিটেলিস্ট হান্টার ওয়াক গত জুলাই মাসে বেশ কিছু টুইটে ৮ নবেম্বর ভোট দেয়ার সুবিধার্থে ওই সময়টা কাজকম বন্ধ রাখার জন্য জনসাধারণ ও কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিলিকন ভ্যালির কয়েক ডজন স্টার্ট আপ কোম্পানি তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের ছুটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই ধরনের কোম্পানির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলে। অবস্থা এমন হয় যে ওয়াক গুগলের একটি স্প্রেডশীটে সেগুলোর হিসাব রাখতে শুরু করেন। এই সেদিন পর্যন্ত এসব কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭৭টি। এমন নীতের প্রস্তাব দিতে সিলিকন ভ্যালির কোম্পানিগুলো মোটেও প্রথম নয়। ২০০১ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ একটি কমিশনের রিপোর্ট অনুমোদন করেছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কাটার ও জেরাল্ড ফোর্ডের সভাপতিত্বে এই কমিশন অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে সুপারিশ করেছিল যে নির্বাচনের দিনটি ভেটারেন ডেতে সরিয়ে আনা হোক, যাতে করে দেশপ্রেমসুলভ কর্তব্য হিসেবে ভোট দিতে আমেরিকানরা আরও ভালভাবে উদ্বুদ্ধ হয়। আরও সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট ওবামা এক সাক্ষাতকারে বলেছেন যে তিনি নির্বাচনের দিনটিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করার পক্ষপাতী। তবে নির্বাচনের দিন কর্পোরেট জগতে ছুটি থাকলেই কি ভোটারের উপস্থিতির ক্ষেত্রে অর্থপূর্ণ পরিবর্তন ঘটবে? সেটা কে কিভাবে ব্যাপারটা দেখছে তার ওপর নির্ভর করছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেন যে, এই পদক্ষেপে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার গতিপথ পরিবর্তন না হওয়ারই বেশি সম্ভাবনা।
×