ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বর্তমান কোচ টিটের হাত ধরে হেক্সা ট্রফি জয় সম্ভব বলে মনে করছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার

বিশ্বকাপ জিততে আশাবাদী নেইমার

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৫ অক্টোবর ২০১৬

বিশ্বকাপ জিততে আশাবাদী নেইমার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শঙ্কা কাটিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে উড়ন্ত ছন্দে আছে ব্রাজিল। শুধু তাই নয়, ১০টি করে ম্যাচ শেষে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দারুণ এই সাফল্যের পর আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে সেলেসাওদের। টিটে কোচ হিসেবে যোগ দেয়ার পরই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পেলের দেশ। এ কারণে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার মনে করছেন, বর্তমান কোচ টিটের হাত ধরেই ২০১৮ বিশ্বকাপ জিততে পারে ব্রাজিল। যদিও সেলেসাও কোচ এখনই এসব নিয়ে ভাবছেন না, তিনি আগে বাছাইপর্ব উতরানো নিয়েই ভাবছেন। ব্রাজিলে যুগে যুগে এসেছে পেলে, গ্যারিঞ্জা, ভাভা, পেরেইরা, রোমারিও, বেবেতো, রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো, কাকা, রবিনহোর মতো ফুটবলার। এসব তারকাদের উদ্ভাসিত নৈপুণ্যে বরাবরই সাফল্য দেখিয়ে এসেছে ব্রাজিল। দেশটির সাফল্যে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে, ব্রাজিল এবং ফুটবল একে অপরের পরিপূরক হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টে সাফল্যের পাশাপাশি বিশ্বের সেরা আয়োজন বিশ্বকাপেও সেরা দলের তকমা ব্রাজিলের। কেননা রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ী তারা। সাফল্যের পরিসংখ্যানে এমন অবস্থা ব্রাজিল মানেই সেরা হওয়া। ‘দ্বিতীয়’ হওয়াটাকেও দেশটি ব্যর্থতা হিসেবে মনে করে। ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর দীর্ঘ দুই যুগ পর ১৯৯৪ সালে আবারও বিশ্বকাপ জেতে জাগো বনিতোরা। আধুনিক যুগে এসে এ সময় থেকেই মূলত দেশটি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা তিন বিশ্বকাপে ১২ বছর বিস্ময়কর সাফল্য দেখায় ব্রাজিলিয়ানরা। এ সময়ের তিনটি বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই ফাইনালে খেলে ব্রাজিল এবং দু’টিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। এমন আকাশচুম্বী সাফল্যের পর ব্রাজিল দল যেন সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। এ কারণেই ২০০৬ বিশ্বকাপে ‘হেক্সা’ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে জার্মানি পাড়ি জমায় লুই ফিলিপ সোলারির দল। এ সময় রোনাল্ডিনহোরা এতটাই ফর্মের তুঙ্গে অবস্থান করছিলেন যে বিশ্বকাপ জয় করা নিয়ে কোন সংশয় ছিল না। কিন্তু চূড়ান্ত লড়াইয়ে খেই হারিয়ে বিদায় নিতে হয় ব্রাজিলকে। এরপর দলের দায়িত্ব দেয়া হয় ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কার্লোস দুঙ্গাকে। ২০০৯ সালে কনফেডারেশন্স কাপ জয় করে তিনিও স্বপ্ন দেখিয়েছেন ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের। কিন্তু দলের সেরা ফুটবলারদের বিশ্বকাপে না এনে তথাকথিত ‘শ্রমিক‘ দিয়ে শিল্পকর্ম করতে যেয়ে ব্যর্থ হন তিনি। এরপর স্বাভাবিকভাবেই অপসারিত হতে হয় এই লৌহমানবকে। ২০১৪ বিশ্বকাপে নিজ দেশে ব্যর্থ হয় পেলের দেশ। টানা তিন বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়া ব্রাজিলের এখন পাখির চোখ ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে। আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া দলটির সেরা তারকা নেইমার এ প্রসঙ্গে সাক্ষাতকারে বলেন, টিটের আগমন জাতীয় দলকে বদলে দিয়েছে, তবে আবহ বদলায়নি। কোচ হিসেবে টিটে আমাকে বিস্মিত করেছেন। তিনি সবচেয়ে প্রস্তুত কোচদের মধ্যে একজন। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তাদের মধ্যে অন্যতম সেরা কোচ। নেইমার আরও বলেন, টিটের অধীনে খেলাটা দারুণ। আমি নিশ্চিত তিনি আমাদের বিশ্বকাপে নিয়ে যাবেন, সম্ভবত শিরোপাও জেতাবেন। পুরো দলটাকে তিনি গুছিয়ে নিয়েছেন, সবকিছু ঠিকমতো করছেন। গত কোপা আমেরিকায় ইকুয়েডরের সঙ্গে ড্র আর পেরুর কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় ব্রাজিল। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা সাফল্যের দলটির জন্য যা নিদারুণ লজ্জার। এরপর দায়িত্বে আসেন টিটে। বাছাইপর্বে ব্রাজিলের তখন নাজুক অবস্থা। টিটে দায়িত্ব নেয়ার পর বাছাইপর্বের চার ম্যাচের প্রতিটিতেই জয় পেয়েছে সাম্বা ছন্দের দেশ। এর মধ্যে ৩৩ বছর পর ইকুয়েডরের মাঠে যেয়ে জয়ও আছে। এই চার ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ব্রাজিল বল পাঠিয়েছে ১২ বার। বাছাইপর্বের এ সাফল্য ধরে রেখে বিশ্বকাপেও ব্রাজিল বাজিমাত করবে এমনটাই মনে করছেন নেইমার।
×