ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কারিগরদের দুর্দিন

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৫ অক্টোবর ২০১৬

কারিগরদের  দুর্দিন

সান্তাহারে বাদ্যযন্ত্র কারিগরদের এখন দুর্দিন চলছে। আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢোল, খোল, তবলা, নাল, কঙ্গো, একতারা, দোতারা, সানাই ও বাঁশী। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাতেগোনা কিছু উৎসব অনুষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য অনুষ্ঠানে এইসব বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নেই বললেই চলে। পূজা-পার্বণ, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিয়ে, নববর্ষ আর স্বাধীনতা ও বিজয় উৎসবে ঢুলিদের ডাক পড়ে। এসব অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্রের শিল্পীদের দেহদোলানো ও মনমাতানো বাজনার শব্দে মুখরিত হয় আসর। ক্ষণিকের জন্য হলেও দর্শকরা ভুলে যায় জগত-সংসারের দুঃখ-বেদনা। সান্তাহারে বেশকিছু পরিবার বাদ্যযন্ত্র তৈরির কাজে জড়িত। তারা তবলা, ডুগি, মৃদঙ্গ, খোল, কঙ্গো, খঞ্জনি, ঢাক, ঢোল, হারমোনিয়াম ও একতারার মতো বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে। নতুন বাজার এলাকার বাদ্যযন্ত্র কারিগর উপেন চন্দ্র এই পেশায় নিয়োজিত আছেন ৪০ বছর। অভাব-অনটনের কারণে উপেন লেখাপড়া তেমন করতে পারেননি। এখন তিনি তার সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করতে চান। তিনি জানালেন ব্যবসা এখন ভাল যাচ্ছে না। আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রচলন হওয়ায় তাদের কদর কমে গেছে। এই পেশার আরেক শিল্পী রামু দাস জানালেন, হিন্দু সম্প্রাদায়ের হরিবাসর, পূজা ও নববর্ষের সময় তাদের ব্যবসাটা ভাল যায়। তারা জানান, এক সময় সান্তাহারে তৈরি বাদ্যযন্ত্র উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়েছে। জলিল কারিগর জানালেন, ঢোল, খোল, তবলা, নাল ও কঙ্গো তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে আম, জাম, রেইন্ট্রি, কড়ই ও মেহগনি কাঠ ব্যবহার করা হয়। আর ঢাকের ছাউনির জন্য ছাগল ও ভেড়ার চামড়া এবং বেড়ি দেয়ার জন্য মোষের চামড়া ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানে এসব কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং আগের মতো কদর না থাকায় কমে গেছে তাদের পণ্যের দাম। -মোঃ হারেজুজ্জামান হারেজ সান্তাহার থেকে
×