ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনে রিনা হাসপাতালে

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৫ অক্টোবর ২০১৬

স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনে রিনা হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৪ অক্টোবর ॥ এবার রিনাকে বেধড়ক মারধর করে একটি পা গোড়ালি বরাবর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে। শরীরে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। পাঁচ বছরের শিশু সন্তান নিয়ে এখন কলাপাড়া হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছে। চিকিৎসা বলতে আশপাশে ভর্তি হওয়া রোগী কিংবা তাদের স্বজনেরা যে যা পারছে কিনে দিচ্ছে ওষুধ। কেউ বা উপকরণ। এভাবেই চলছে। অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ওসিসি কিংবা মহিলা অধিদফতর থেকে শুরু কোন মানবাধিকার সংগঠন নির্যাতিতা এ মহিলার কোন ধরনের সহায়তায় এগিয়ে আসেনি। ১১ অক্টোবর রিনাকে চাকামইয়ার নিশানবাড়িয়া গ্রামের রাস্তায় ফেলে ভরদুপুরে মুগুর দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। রিনার অভিযোগ, শ^শুর সৈয়দ হাওলাদার, শাশুড়ি মুনসুরা বেগম, ভাসুর বেল্লাল ও তার স্ত্রী এবং স্বামী ফেরদৌস তাকে বেধড়ক মারধর করেছে। কোন মতে হামাগুড়ি দিয়ে হাসপাতালে আসেন রিনা। উল্টো নিজেকে আহত দেখিয়ে স্বামী ফেরদৌসও কলাপাড়া হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন। রিনার অভিযোগ ব্লেড দিয়ে ক্ষত করে তার বিরুদ্ধে মামলা করতেই এমন নাটক করা হয়েছে। চাকামইয়ার এক প্রভাবশালী এসেও রিনাকে ধমকে গেছে বলে অভিযোগ করলেন। ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করার সময় পরিচয় ঘটে স্বামী ফেরদৌস হাওলাদারের সঙ্গে। সাত বছর আগের কথা। এক পর্যায়ে বিয়ে হয়, ২০০৯ সালের ২৭ জুন। কয়েক মাস পরেই গা-ঢাকা দেয় ফেরদৌস। খুঁজতে খুঁজতে স্বামীর বাড়ি চাকামইয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া গ্রামে হাজির হয়। শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেও তারা প্রথমে ফেরদৌসের বাড়ি না বলে বের করে দেয়। বুঝতে পেরে বাড়িতে অবস্থান নেয়ার পড়েই প্রথমদফা মারধর হামলা করা হয় রিনার উপর। এরই মধ্যে স্বামী ফেরদৌসকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হয়। বহু মারধর, বহু নির্যাতনের পরে স্বামীকে পেয়েছেন। তাকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। তখন সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাকে ঢাকা শহরের এক সড়কে পাশে দাঁড় করিয়ে পালিয়ে যায় ফেরদৌস। তিন মাস পরে খুঁেজ পায়। বহুবার পেটের সন্তানকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। নিজের এ দশার বিচার চাইতে বহুবার ইউনিয়ন পরিষদে ধর্ণা দিয়েছেন রিনা। জীবনের চাকা ঘোরাতে হাত পাততে হয়েছে সকল দরজায়। তার অসহায় হাতটি ধরে কেউ কিছুটা সহায়তা করেছে। তবে সমাজের কীট নামের বহু নরপশু আবার হায়েনার মতো রিনার শরীরের দিকে কালো হাত বাড়ানোর চেষ্টাও করেছে।
×