ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আলেপ্পোয় ব্যাপক বিমান হামলা

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

আলেপ্পোয় ব্যাপক বিমান হামলা

সিরিয়া ও রাশিয়া আলেপ্পোর বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকাগুলোতে বৃহস্পতিবার ভোরে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। একটি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা একথা জানিয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। এর আগে দামেস্ক ও মস্কোর দুই দিনের বিমান হামলায় সেখানকার অন্তত ৭১ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। ব্রিটেনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস আরও জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে বিদ্রোহী অধিকৃত আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে ২০টিরও বেশি বিমান হামলা চালানো হয়। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোরে বিদ্রোহীরা রকেট হামলা চালিয়েছে। এটি একটি স্কুলে আঘাত করে। এতে ৪ শিশু নিহত হয়েছে। সিরীয় বাহিনী আলেপ্পোকে পুনরায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাপক হামলা শুরু করেছে। ২০১২ সাল থেকে নগরীর পূর্বাঞ্চলটি বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার প্রধান রামি আব্দেল রহমান বলেন, মঙ্গলবার বিদ্রোহী অধিকৃত এলাকাগুলোতে রাশিয়া ও সরকারী বাহিনীর হামলায় ৫৬ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ শিশু রয়েছে। এছাড়াও সরকারী ও রুশ বাহিনীর আরেকটি হামলায় বুধবার ১৫ বেসামরিক লোক প্রাণ হারায়। এদিকে আলেপ্পোয় বোমাবর্ষণের অভিযোগে যুদ্ধাপরাধের মুখোমুখি হতে পারে রাশিয়া এমন বিষয় নাকচ করে দিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। ফরাসী মিডিয়ায় দেয়া এক সাক্ষাতকারে এই অভিযোগকে বাগাড়ম্বরপূর্ণ উক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ফ্রান্সের টিএফওয়ান টিভি চ্যানেলকে পুতিন বলেন, সন্ত্রাসীদের খুঁজছি আমরা। যদিও সাধারণ মানুষের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে তারা। সন্ত্রাসীরা জনগণকে ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করবে এবং বিশ্বকে ব্ল্যাকমেল করবে। এটির অনুমোদন দিতে পারি না আমরা। তবে যুদ্ধের করুণ বাস্তবতা হলো সাধারণ মানুষের মৃত্যু। পুতিন বলেন, এই অবস্থার জন্য প্রথম এবং প্রধানত দায়ী আমাদের পশ্চিমা অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। আসাদ সরকারকে হটাতে যুক্তরাষ্ট্র গোপনে আল কায়েদার সঙ্গে যুক্ত জিহাদীদের সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। যদিও তা প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার সরকার বলেছিল, পূর্ব আলেপ্পোয় অবরুদ্ধ হয়ে পড়া বিদ্রোহী যোদ্ধারা অস্ত্র নামিয়ে রেখে পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদে শহর ছেড়ে চলে যেতে পারবে। কিন্তু সরকারী এ প্রস্তাবকে ‘ছলচাতুরি’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার বৃহত্তম শহর আলেপ্পো গত কয়েক বছর ধরে সরকারী বাহিনী ও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত অংশের মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। সম্প্রতি বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে সরকারী বাহিনী। ব্যাপক বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের মাধ্যমে ওই অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে তারা। আলোপ্পোয় রুশ বোমাবর্ষণের ঘটনাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। সিরীয় সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙ্গে যাওয়ার পর নতুন করে বোমাবর্ষণ শুরু হয়েছে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহরটিতে। তবে বুধবার পুনরায় আলোচনা করতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। আলোচনার জন্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও তার প্রতিপক্ষ জন কেরি এবং গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে শনিবার সুইজারল্যান্ডে বৈঠকে বসবেন।
×