ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

[প্রকাশকাল আগস্ট, ১৮৪৭];###;মোতাহার হোসেন সুফি

বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র ॥ রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র ॥ রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ

বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র ‘রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ’। ইতিহাস ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ প্রাচীন ভূখ- রঙ্গপুর থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ। রঙ্গপুর সুপ্রাচীন ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ভূমি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের মতে, প্রাগজ্যোতিষপুর তথা কামরূপ (বর্তমান আসাম) প্রাচীনকালে উন্নত সভ্যতার অধিকারী ছিল। রঙ্গপুর ছিল এই কামরূপ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। রঙ্গপুর নামকরণ সম্পর্কে প্রচলিত কিংবদন্তি-কামরূপ রাজা ভগদত্তের রঙ্গমহল বা প্রমোদনিকেতন অবস্থিত ছিল রঙ্গপুর শহরের নিকটবর্তী ঘাঘট নদীর তীরে। পৌরাণিক রাজা ভগদত্ত কোন অর্বাচীন ব্যক্তি নন। মহাভারতে [রচনাকাল প্রাচীন] বর্ণিত আছে, রাজা ভগদত্ত কুরু পা-বের যুদ্ধে প্রচুর চীন ও কিরাত সেনা এবং দুর্ধর্ষ গজ (হস্তী) সৈন্য সমভিব্যাহারে অংশগ্রহণ করেছিলেন কৌরবপক্ষ দুর্যোধনের। কুরুক্ষেত্রের ভয়াবহ যুদ্ধে পঞ্চপা-বের অন্যতম বীর অর্জুনের হাতে নৃশংসভাবে তিনি নিহত হয়েছিলেন। এরপর অর্জুন কর্তৃক বিজিত হয়েছিলেন প্রাগজ্যোতিষপুর। ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থের মতো রাজা ভগদত্ত কামরূপের তথা প্রাগজ্যোতিষপুরের প্রথম রাজা হতে তেইশ পুরুষ পরবর্তী। [রজনীকান্ত চক্রবর্তী, গৌড়ের ইতিহাস, প্রকাশকাল, জানুয়ারি ১৯৯৯ পৃষ্ঠা-৩৭] ‘রঙ্গপুর’ নামকরণের আছে ইতিহাস। প্রাগৈতিহাসিককাল থেকে ‘রঙ্গপুর’ প্রচলিত। বাংলাভাষা ও সাহিত্যের সঙ্গে ফারসী ভাষা ও সাহিত্যের সম্পর্ক মধ্যযুগে। ফারসী ভাষার প্রভাবে ‘রঙ্গপুর’ শব্দের উদ্ভব হয়নি। প্রশাসনিক প্রয়োজনে রঙ্গপুর পাঁচ জেলায় বিভক্ত হয়েছে যথা- রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম। রঙ্গপুরের ইতিহাস যেমন প্রাচীন ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ অনুরূপ সমৃদ্ধ ও গৌরবম-িত রঙ্গপুরের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার ইতিহাস। স্মরণাতীতকাল থেকে রঙ্গপুরের সাহিত্য ও সংস্কৃতি ব্যাপক চর্চা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইংরেজ আমলের বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা থেকে রঙ্গপুর মোটেও পিছিয়ে ছিল না। সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চায় সাময়িক পত্রিকার ভূমিকা অনন্য সাধারণ। ঊনবিংশ শতাব্দীতে সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার অঙ্গনে রঙ্গপুর জেলা থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকার ভূমিকা গৌরবোজ্জ্বল। দীর্ঘদিন ধরে অনেক অনুসন্ধানে রঙ্গপুর জেলা থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকার যেসব নাম সংগ্রহ করা গেছে তার সংখ্যা বিপুল। সব পত্রিকা সংগ্রহ করা আমার পক্ষে সম্ভবপর হয়নি। নিঃসন্দেহে পত্রিকা উদ্ধারের এই কাজ অত্যন্ত দুরূহ। রঙ্গপুরের প্রাচীন পাঠাগার রঙ্গপুর পাবলিক লাইব্রেরি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কারমাইকেল কলেজ ও প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদে অনেক অনুসন্ধান করেও ইংরেজ আমলে প্রকাশিত বহু পত্রিকা উদ্ধার করা যায়নি। যে সামান্যসংখ্যক পত্রিকা উদ্ধার করা গেছে তা সম্ভবপর হয়েছে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায়। রঙ্গপুর থেকে প্রকাশিত বিপুলসংখ্যক পত্রপত্রিকা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে কোন উল্লেখযোগ্য আলোচনা আমাদের কোন পত্রপত্রিকায় এ যাবত প্রকাশিত হতে দেখা যায়নি। তবে আলোচনা যে একেবারে হয়নি সে কথাও বলা যায়নি। রঙ্গপুর থেকে প্রকাশিত দু’একটি সাময়িক পত্রিকা সম্পর্কে কোন কোন গবেষক আলোচনা করেছেন সাময়িক পত্রিকার ইতিহাসমূলক গ্রন্থাদিতে। রঙ্গপুর থেকে প্রকাশিত স্বল্পসংখ্যক পত্রপত্রিকা সম্পর্কে কিছু কিছু আলোচনা করা হয়েছে। সেই সমস্ত জ্ঞানগর্ভ রঙ্গপুর থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা সম্পর্কে আমাদের জানার আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে। ইংরেজ আমলে বাংলা গদ্যচর্চার সূত্রপাত ঘটেছে। সেই সঙ্গে বাংলা গদ্যচর্চাকে স্ফুর্তিদান করেছে সাময়িক পত্রপত্রিকা। ইংরেজ শাসনামলে রঙ্গপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন সময়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজের শ্রীবৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞাপন প্রচার ও সেই সঙ্গে বিচিত্র সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি পাঠকের রুচি লক্ষ্য করে সাহিত্যরস পরিবেশনের দায়িত্বও সে সব পত্রপত্রিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় রঙ্গপুর থেকে প্রকাশিত অধিকাংশ পত্রপত্রিকার বিলুপ্তির ইতিহাস করুণ। এসব পত্রপত্রিকার অধিকাংশ মুখ্যত গ্রাহকদের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ও পত্রিকা কতর্ৃৃপক্ষের আর্থিক অসচ্ছলতা এবং অনেক সময় সরকারী বিধিনিষেধের দরুন অকালে ঝরে গেছে। রঙ্গপুর থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা সম্পর্কে কোন আলোচনা করতে হলে বাংলা সাময়িক পত্রিকার উদ্ভব ইতিহাস আলোচনা করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলা গদ্যসাহিত্যের বিকাশে, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ধর্ম ও দর্শনতত্ত্বের চর্চা এবং রসসাহিত্য সৃষ্টিতে গদ্য ভাষার ব্যাপক প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাংলা সাময়িক পত্রপত্রিকার ভূমিকা অসামান্য। সমকালীন পৃথিবীর জ্ঞানসাধনা ও সাহিত্যচিন্তাকে সাময়িক পত্রপত্রিকাসমূহ বলিষ্ঠভাবে পাঠক সাধারণের সম্মুখে তুলে ধরেছে। ইংরেজ আমলের বাংলার রাজধানী কলকাতা ও সন্নিহিত এলাকাকে কেন্দ্র করে প্রধানত বাংলা গদ্যসাহিত্যের চর্চা শুরু হয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর সূচনায় কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে গদ্যচর্চার পর সাময়িক পত্রপত্রিকার পৃষ্ঠায় বিতর্কমূলক নিবন্ধাদি প্রকাশের মাধ্যমেই বাংলা গদ্যভাষার প্রকাশ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। বাংলা সাময়িক পত্রিকা প্রকাশনার ইতিহাসে শ্রীরামপুর মিশনারিদের প্রচেষ্টা সর্বাগ্রে স্মরণীয়। ইংরেজ শাসনামলে কলকাতার নিকটবর্তী শ্রীরামপুর থেকে সাময়িক পত্রিকা প্রকাশের শুভ সূচনা হয়। প্রথম বাংলা সাময়িক পত্রিকা প্রকাশের কৃতিত্ব এই মিশনারিদেরই প্রাপ্য। মিশনারি জন ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনায় ১৮১৮ সালে ‘দিগদর্শন’ মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটিতে স্কুলপাঠ্য নানা বিষয়ের অবতারণা বেশি করে করা হতো বলে একে পত্রিকা না বলে ‘মাসিক পুস্তিকা’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। মার্শম্যান সম্পাদিত অপর উল্লেখযোগ্য পত্রিকা ‘সমাচার দর্পণ’। ‘দিগদর্শন’ প্রকাশের পরবর্তী এক মাসের মধ্যেই ‘সমাচার দর্পণ’ পত্রিকার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এটি একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। পত্রিকাটির প্রকাশকাল ১৮১৮ সালের ২৩ মে। দেশীয় প-িত মুনশিগণ ‘দিগদর্শন’ পত্রিকার ন্যায় ‘সমাচার দর্পণ’ পত্রিকারও প্রধান লেখক ছিলেন। ভাষাসাহিত্য, শিক্ষাসমাজ সম্পর্কিত বাঙালী সমাজের বিভিন্ন দিকের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ এই পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। ১৮৪১ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটি স্বীয় অস্তিত্ব বজায় রেখেছিল। ‘সমাচার দর্পণ’ পত্রিকা প্রকাশের সমকালে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য ও হরচন্দ্র রায় ‘বেঙ্গল গেজেট’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। এটি বাঙালীর উদ্যোগে প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা। অনেকের অভিমত গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের ‘বেঙ্গল গেজেট’ বা ‘বাঙালী গেজেট’ আদি বাংলা সাময়িক পত্রিকা। পত্রিকাটির প্রথম প্রকাশ ১৮১৮ সালের ১৪ মে। ঊনবিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে রঙ্গপুর থেকেও সাময়িক পত্রিকার আত্মপ্রকাশ ঘটে। রঙ্গপুর জেলা থেকে প্রকাশিত সর্বপ্রাচীন সাময়িক পত্রিকার নাম ‘রঙ্গপুর বার্তাবহ’। এটি একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। পত্রিকাটির প্রকাশকাল ১৮৪৭ সালের আগস্ট মাস (১২৫৪ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাস)। ‘রঙ্গপুর বার্তাবহ’ রঙ্গপুর শহরের অনতিদূরে কু-ী পরগনার গোপালপুর গ্রামে স্থাপিত ‘বার্তাবহযন্ত্র’ নামক ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হতো। ১৮৪৭ সালে ‘রঙ্গপুর বার্তাবহ’ প্রকাশের জন্য রঙ্গপুরে স্থাপিত মুদ্রণ যন্ত্রটিই পূর্ববঙ্গের প্রাচীনতম বাংলা মুদ্রণযন্ত্র। ‘রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ’ যেমন শুধু রঙ্গপুরের নয় বর্তমান বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত প্রথম সাময়িক পত্রিকার মর্যাদার অধিকারী অনুরূপভাবে ‘বার্ত্তাবহ যন্ত্র’ শুধু রঙ্গপুরেরই নয় বর্তমান বাংলাদেশের প্রথম মুদ্রাযন্ত্র। এ প্রসঙ্গে মুদ্রাযন্ত্র স্থাপনের ইতিহাস আলোচনা করা অপ্রাসঙ্গিক হবে না। ইংরেজ আমলের অবিভক্ত বাংলায় প্রথম মুদ্রাযন্ত্র স্থাপিত হয় ১৭৭৮ সালে। এই ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন এ্যান্ড্রুজ নামে একজন ইংরেজ। ১৭৭৮ সালেই হ্যালহেড রচিত ‘এৎধসসবৎ ড়ভ ঃযব ইবহমধষর খধহমঁধমব’ ছাপা হয়। ইংরেজীতে রচিত বাংলাভাষার এই ব্যাকরণে প্রথম বাংলা হরফ মুদ্রিত হয়। ...উনিশ শতকের প্রথম দুই তিন দশকে বাংলাদেশে আরও কয়েকটি মুদ্রাযন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮২৫ সালে ‘সমাচার দর্পণে’ (২২ জানুয়ারির সংখ্যাটি) প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায় যে, তখন কলকাতায় দেশীয় লোকের পরিচালনাধীনে ১১টি (এগারোটি) ছাপাখানা ছিল। ঢাকায় প্রথম মুদ্রাযন্ত্র ‘বাঙালী যন্ত্র’ স্থাপিত হয় ১৮৬০ সালে। ‘বাঙ্গালা যন্ত্রকে’ অবশ্যই পূর্ববঙ্গে (বাংলাদেশ) স্থাপিত প্রথম মুদ্রাযন্ত্র বলা যায় না। এর বহু আগে ১৮৪৭ সালে রঙ্গপুর জেলার কু-ী পরগনার গোপালপুরে স্থাপিত হয় ‘বার্ত্তাবহ যন্ত্র’ নামক মুদ্রাযন্ত্র। ‘বার্ত্তাবহ যন্ত্র’ কু-ী পরগনার জমিদার রাজমোন রায় চৌধুরী কর্তৃক তাঁর বাসস্থান সদ্য পুষ্করিণীতে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি পরলোকগমন করলে ‘বার্র্তাবহ যন্ত্র’ সদ্য পুষ্করিণী থেকে গোপালপুরে স্থানান্তরিত হয়। [ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘সংবাদপত্রে সেকালের কথা ১ম ভাগ-২য় সংস্করণ ১৩৪৪ পৃষ্ঠা ৭৫-৭৬] অবিভক্ত বাংলাদেশের রাজধানী কলকাতার বাইরে মফঃস্বলের প্রথম সাময়িক পত্রিকার নাম ‘মুর্শিদাবাদ পত্রিকা’। ইংরেজ আমলে ১৮৩৯ সালে বাংলাভাষা দ্বিতীয় রাজভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর থেকে বাংলাভাষা চর্চা স্ফুর্তিলাভ করে অবিভক্ত বাংলাদেশের জেলাগুলোতে। ১৮৪০ সালে মুর্শিদাবাদ থেকে গুরুদয়াল চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ও তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘মুর্শিদাবাদ পত্রিকা’। ১৩৩৫ বঙ্গাব্দের পৌষ সংখ্যা ‘কল্লোল’ সাহিত্য পত্রিকায় ‘মুর্শিদাবাদ পত্রিকার’ সম্পাদকের নাম গুরুদাস চৌধুরী উল্লেখ করা হয়েছে। সঠিক তথ্য পরিবেশন করে ‘ভারতের সংবাদপত্র’ গ্রন্থে তারাপদ পাল বলেন : ‘মুর্শিদাবাদ থেকে প্রকাশিত হয় ‘মুর্শিদাবাদ সংবাদপত্রী’ (সাপ্তাহিক) ১৮৪০ এর ১০ মে। এটাই মফঃস্বল থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র। পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন গুরুদয়াল চৌধুরী। বছর খানেক কাগজটি জীবিত ছিল।’ ড. রতনলাল চক্রবর্তী ও সুশান্ত চন্দ্র খাঁ সম্পাদিত ‘রঙ্গপুর বার্র্তাবহ’ গ্রন্থ (১৮৪৮-১৮৫১) কলকাতা কলেজ স্ট্রিটের প্রগেসিভ পাবলিশার্স কর্তৃক ২০০১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটি রংপুরের প্রখ্যাত সমাজকর্মী ও আইনজীবী প্রয়াত শীতল কুমার রায় চৌধুরীর (১৯২২-১৯৮৭) করকমলে অর্পিত হয়েছে। সম্পাদকদ্বয় কর্তৃক ‘রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ’ গ্রন্থের প্রকাশ একটি প্রশংসনীয় কাজ। এই গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশের জন্য সম্পাদকদ্বয় গবেষক ও পাঠকদের ধন্যবাদের পাত্র। ‘রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ’ গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক সুশান্তচন্দ্র খাঁ রঙ্গপুরের সন্তান। রঙ্গপুরের কু-ীর জমিদার পরিবারের সঙ্গে বৈবাহিকসূত্রে আবদ্ধ হওয়ার কারণে ’৮০-এর দশকে রংপুর শহরের কলেজ রোডে অবস্থিত সাহিত্যপ্রাণ সুরেন্দ্রচন্দ্র রায় চৌধুরীর বাসভবন থেকে আবিষ্কার করেন ‘রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ’ পত্রিকার দুষ্প্রাপ্য কপিসমূহ। সুরেন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী ১৯০৫ সালে স্থাপিত বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের প্রথম শাখা রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। তাঁর পুত্র আইনজীবী শীতলকুমার রায় চৌধুরীর জামাতা সুশান্ত চন্দ্র খাঁ।
×