ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক নজরে নোবেল পুরস্কার

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

এক নজরে নোবেল পুরস্কার

নোবেল পুরস্কার প্রবর্তিত হয় ১৯০১ সালে। ঐ বছর থেকে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সফল এবং অনন্য সাধারণ গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং মানবকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। মোট ছয়টি বিষয়ে পুরষ্কার প্রদান করা হয়। বিষয়গুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য এবং শান্তি। নোবেল পুরস্কারকে এ সকল ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তদেরকে ইংরেজীতে নোবেল লরিয়েট বলা হয়। সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ১৮৯৫ সালে করে যাওয়া একটি উইলের মর্মানুসারে নোবেল পুরস্কার প্রচলন করা হয়। নোবেল মৃত্যুর পূর্বে উইলের মাধ্যমে এই পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা করে যান। শুধুমাত্র শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয় নরওয়ের অসলো থেকে। বাকি ক্ষেত্রে স্টকহোম, সুইডেনে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অর্থনীতি ছাড়া অন্য বিষয়গুলোতে ১৯০১ সাল থেকে পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে, কিন্তু অর্থনীতিতে পুরস্কার প্রদান শুরু হয়েছে ১৯৬৯ সালে। পুরস্কার প্রাপ্তদের প্রত্যেকে একটি স্বর্ণপদক, একটি সনদ ও নোবেল ফাউন্ডেশন কর্তৃক কিছু পরিমাণ অর্থ পেয়ে থাকেন। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার। নোবেল পুরস্কার সাধারণত মৃত কাউকে দেয়া হয় না। কিন্তু এর কিছু ব্যতিক্রম আছে। নোবেল পুরস্কার কেবল একটি পুরস্কার নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু। প্রতিটি জাতি নিজের নোবেল বিজয়ীদের নিয়ে গর্ববোধ করে থাকে। এমনকি জাতির সভ্যতা ও অগ্রসরতার মানদ- নির্ধারিত হয় নোবেল বিজয়ীদের সংখ্যার উপর। নোবেল বিজয়ীরা শুধু নিজের ক্ষেত্রেই নয়, অন্য যে কোন ক্ষেত্রে তাদের মতামত দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে থাকেন আন্তর্জাতিক বিশ্বে। এবং যে কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা বা ফোরামে তাদের মতামত গুরুত্বের সাথেই গৃহীত হয়ে থাকে। পৃথিবীর যে কোন দেশেই তাদের রয়েছে অবাধ প্রবেশের অধিকার। নোবেল বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মানিত পুরস্কার হলেও এটি সর্বোচ্চ বিতর্কিত বিষয়ও বটে। এমনকি রয়েছে নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের ঘটনাও। নিন্দুকেরা এমনও বলে থাকেন, সব সময় সঠিক ব্যক্তি নোবেল লাভ করেন না। বিভিন্ন সময়েই এই পুরস্কার বিজয়ীদের নিয়ে নানা বিতর্ক উত্থাপিত হয়েছে। আলোচনা সমালোচনার ঝড়ও বয়ে গেছে। নোবেলের আরেকটি অন্ধকার দিক আছে। অনেকেই বলেন, নোবেল পুরস্কার প্রদানের পেছনে কাজ করে রাজনীতি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মহাশক্তিধর দেশগুলো কিংবা অনেক সময় বৃহৎ বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো পর্যন্ত এ বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। একটা সময় ছিল, যখন উপনিবেশিক স্বার্থ বিবেচনায় নোবেল দেয়া হয়েছে। আমাদের উপমহাদেশে নোবেল বিজয়ী সংখ্যা তুলনামূলকভাবে এখনও অনেক কম। তবে সত্য হচ্ছে এই নোবেল বিজয়ী যে দেশেরই হন না কেন, তিনি সারা বিশ্বের সম্পদ। এখানেই নোবেলের সৌন্দর্য।
×