ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অজানা অধ্যায় ‘অলিখিত উপাখ্যান’ মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অজানা অধ্যায় ‘অলিখিত উপাখ্যান’ মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের আলোচিত নানা চরিত্রের কথাই সবাই জানে। তবে এই আন্দোলনের এক অনালোচিত চরিত্র রহিমউল্লাহ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ হারালেও এই বিপ্লবীর নামটি সবার অজানা। সুন্দরবনের মোরেলগঞ্জ নামক স্থানে অত্যাচারী বেনিয়াদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন রহিমউল্লাহ। চাষীদের দিয়ে জোর করে জঙ্গল কেটে আবাদ করানোর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল তার কণ্ঠস্বর। সেই প্রতিবাদের পরিণতিতে প্রাণ হারাতে হয় সাহসী প্রাণ এই বিপ্লবীকে। কথাসাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ডায়েরির পাতায় লেখা হয়েছিল তার বীরত্বগাথার কথা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে রিজিয়া রহমান লিখেছিলেন অলিখিত উপাখ্যান নামের উপন্যাস। আর উপন্যাসটিকে আশ্রয় করে ঢাকার মঞ্চে নাট্যদল বাতিঘর নিয়ে এসেছে তাদের দ্বিতীয় প্রযোজনা। অলিখিত উপাখ্যান নামের নাটকটিতে উঠে এসেছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অজানা এক দৃশ্যপট। অলিখিত উপাখ্যান উপন্যাসকে গবেষণার ভিত্তিতে নাট্যরূপ দিয়েছেন মুক্তনীল। নাট্যরূপ দেয়ার পাশাপাশি নাটকটির নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। নাটকটিতে নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো প্রযোজনাটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী। নাটকটির প্রসঙ্গে নির্দেশক মুক্তনীল বলেন, অলিখিত উপাখ্যান উপন্যাসটি পড়ার পর মনে হয়েছে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঘটে যাওয়া এ ঘটনাটি যেন ঢাকা পড়ে আছে অন্ধকারে। ব্রিটিশ বেনিয়াদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন রহিমউল্লাহ। অথচ এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি কোথাও উঠে আসেনি। রহিমউল্লাহকে নিয়ে তেমনভাবে কোন কাজ হয়নি। শোষক ও শোষিতের মাঝের অবস্থানে অবহেলিত রয়ে গেলেন এই বিপ্লবী চাষী। নীল বিদ্রোহের পর ওই ঘটনার মধ্যেও ছিল স্বাধীনতার বার্তা। কিন্তু কোন এক কারণে অজানা রয়ে গেছে দ্রোহের আগুনমাখা অনালোচিত অধ্যায়টি। অজানা সেই বীরত্বগাথাকে তুলে ধরতেই নির্মিত হয়েছে নাটকটি। সুন্দরবনঘেঁষা বাগেরহাটের একটি অঞ্চলের নাম হচ্ছে মোরেলগঞ্জ। একসময় স্থানটির নাম ছিল সরালিয়া। ব্রিটিশ শাসনামলে সুন্দরবনের এই অংশটি ইজারা নেয় মার্গারেট মোরেল নামের অত্যাচারী এক ব্রিটিশ শোষক। পরবর্তীতে নিজের নামের সঙ্গে মিলিয়ে জায়গাটির নাম পরিবর্তন করে দেন এই ব্রিটিশ শোষক। স্থানীয় এলাকাবাসীকে কৌশলে মামলা দিয়ে গহীন জঙ্গল কেটে আবাদি ভূমিতে পরিণত করা হয় অঞ্চলটিকে। জঙ্গল কেটে চাষ করতে কেউ অনিচ্ছা প্রকাশ করলে চালানো হতো নির্মম নির্যাতন। আবার ফসল ফলাতে গিয়ে বাঘের খাবারে পরিণত হতো চাষীদের কেউ কেউ। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন সাহসী চাষী রহিমউল্লাহ। গড়ে তোলেন প্রতিরোধ। পরিণতিতে হত্যা করা হয় ব্রিটিশবিরোধী এই বিপ্লবী চাষীকে। প্রযোজনাটিতে রহিমউল্লাহ চরিত্রে রূপ দিয়েছেন স্মরণ বিশ্বাস এবং বঙ্কিমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পান্থ আফজাল। এছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারানা তাবাচ্ছুম চেরি, মনিরুজ্জামান ফিরোজ, সাফিন আহম্মেদ অশ্রু, সাদ্দাম রহমান, সাবরিনা শারমিন, ফয়সাল, সাদিয়া ইউসুফ বৃতা, তাজিম আহমেদ শাওন, সঞ্জয় গোস্বামী, রুম্মান শারু, সঞ্জয় হালদার, শিশির, রশ, শাম্মি মৌ, তানি, তন্ময় প্রমুখ। বেঙ্গল প্র্যাকটিস স্টুডিওর ছাপচিত্র কর্মশালা ॥ বাংলাদেশের ছাপচিত্রের চর্চাকে আরও সমৃদ্ধ ও বেগবান করতে এবং তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীদের ছাপচিত্রচর্চায় নতুন মাত্রা সঞ্চারের লক্ষ্যে একটি ছাপচিত্র কর্মশালার আয়োজন করেছে বেঙ্গল প্র্যাকটিস স্টুডিও। বৃহস্পতিবার সকালে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যাপীঠের (বাড়ি-৬০, সড়ক-৭/এ, ধানম-ি, ঢাকা) সফিউদ্দীন বেঙ্গল প্রিন্টমেকিং স্টুডিওতে শুরু হয় এ কর্মশালা। ১৩ থেকে ১৭ অক্টোবর এবং ২১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন কর্মশালা সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে।
×