ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাস, সংগ্রাম ঐতিহ্য শীর্ষক সেমিনার

দেশের যা কিছু অর্জন তা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার জন্য

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

দেশের যা কিছু অর্জন তা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার জন্য

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ আজ যা ভাবে, এদেশে অনেক দল তা কাল কিংবা কখনই ভাবতে পারে না। ভাষা থেকে স্বাধীনতা, পরবর্তী গণতন্ত্র ও উন্নয়ন দেশের যা কিছু অর্জন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আর নেতা হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার কারণেই। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ আজ পরিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তিই হচ্ছে তৃণমূলের শক্তি, মানুষের শক্তি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ : ইতিহাস, সংগ্রাম ও ঐতিহ্য’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ। আগামী ২২-২৩ অক্টোবর দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে সিরিজ সেমিনারের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবারের এ সেমিনার আয়োজিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। আলোচনায় আরও অংশ নেনÑ দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, সাংবাদিক-কলামিস্ট স্বদেশ রায়, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মেলনের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ। সেমিনার পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং স্বাধীনতা সংগ্রামসহ দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগের অবদান তুলে ধরে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মানুষ কিছু পায়। না থাকলে দেশের মানুষ সবকিছুতেই বঞ্চিত হয়। দেশের যা কিছু অর্জন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আর নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার কারণে। আজ আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই বাংলাদেশ পরিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা দলটির সুদীর্ঘ পথচলায় নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও আঘাতের কথা তুলে ধরে বলেন, পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর অনেকেই মনে করেছিল এবার বুঝি আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কোন পরনির্ভরশীল কিংবা অন্য কোন দেশের মুখাপেক্ষী হয়ে রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগের শক্তি তৃণমূলের শক্তি, মানুষের শক্তি। এইচ টি ইমাম বলেন, কাজে উদ্দীপনা ও তারুণ্য থাকলে নিজেকে কখনই বৃদ্ধ বলে মনে হবে না। আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে নিশ্চয়ই অনেক তরুণ নেতৃত্ব আসবে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারব। দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের ইতিহাস এত বিশাল যে, তা এ ধরনের একটি মাত্র সেমিনারে আলোচনা করে শেষ করা যাবে না। এ ইতিহাস তুলে এনে সংরক্ষণের জন্য ব্যাপকভিত্তিক গবেষণা দরকার। গোলাম সারওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক দল। সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে এ দলের আপোস করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। জঙ্গীবাদ দমনে শেখ হাসিনার আহ্বানে সমগ্র দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। তাই এদেশ থেকে জঙ্গী নির্মূল হবেই। আর শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন আওয়ামী লীগ ও দেশের নেতৃত্ব দেবেন। অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জনগণ ও তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিরোধী দলে থাকলেই আওয়ামী লীগে সংহতি ও ঐক্য দৃঢ় থাকে। ক্ষমতায় থাকলে দল ও সরকারকে আলাদা করা যায় না। নেতারা দলের সমর্থক ও জনগণের খোঁজখবরও রাখেন না। তৃণমূলের কর্মীদেরও মূল্যায়ন করেন না। অথচ বিপদে পড়লে তারাই দলের পাশে এসে দাঁড়ান। আওয়ামী লীগ ছিল, আছে, থাকবে। সাংবাদিক স্বদেশ রায় বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয় না। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ সৃষ্টি হলেও এ সৃষ্টির পেছনেও একটি অতীত ইতিহাস রয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ একটি পরিপূর্ণ রাজনৈতিক দল। সময়ের প্রয়োজনে এ দলটি সব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করেই এগিয়ে গেছে। এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তির পথেও এগিয়ে যাবে। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের ইতিহাস এক ও অভিন্ন। এ দলের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা লাভ। বাঙালীর মূল চেতনা ও সাংস্কৃতিক ধারা এবং অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যকে একমাত্র আওয়ামী লীগই ধারণ করে। মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, দেশের বৃহত্তম, দায়িত্বশীল ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আওয়ামী লীগ কেবল দেশ পরিচালনায়ই নেতৃত্ব দেয় না, একই সঙ্গে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে পথচলার অগ্রবর্তী চিন্তাও। আওয়ামী লীগ আজ যা ভাবে, এদেশে অনেক দল তা কাল কিংবা কখনই ভাবতে পারে না। আর আওয়ামী লীগ কেবল ক্ষমতাপ্রত্যাশী একটি রাজনৈতিক দল নয়, এদেশের সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির একটি বিশেষ ধারার প্রতিনিধিত্বকারী দলও। আর সে ধারাই হচ্ছে বাংলাদেশের মূল ধারা।
×