ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এবারের সম্মেলনেও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ॥ আশরাফ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

এবারের সম্মেলনেও  যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত  নেয়া হবে ॥  আশরাফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন সবসময় বিশাল হয় এবং সারা জাতিকে নাড়া দেয়। এবার আরও উৎসবমুখর পরিবেশে এই সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এবারের সম্মেলন অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি সফল ও ঐতিহাসিক হবে। বুধবার বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন সফল করতে এ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল যেন সুষ্ঠু হয় সেটা নিশ্চিত করতে চাই। আপনারা জানেন এ সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসছেন। সুতরাং আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং শি জিনপিংয়ের সফর এ দুটি বিষয় নিয়ে আমরা সবাই ব্যস্ত। আমরা আনন্দিত যে চীনের প্রেসিডেন্ট প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয় সফরে অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে আসছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তান আমলে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছিল। আশা করি, এবারের সম্মেলনেও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। বর্ধিত সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের মাধ্যমে যে কমিটি নির্বাচিত হবে, তারাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত থাকবে। আশা করি, ওই নির্বাচনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার নির্বাচিত হবেন। কারণ শেখ হাসিনার বিকল্প কেবল শেখ হাসিনাই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজ নিজ এলাকার বিশেষ দূত হিসেবে কাজ করবেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরবেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আনিসুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে একটা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সম্মেলনের যে বিলবোর্ড লাগানো হবে, তাতে জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিতে হবে। অন্য কোন নেতা নিজের ছবি দিতে পারবেন না। আমি মনে করি, এর কারণে ঢাকা শহর অনেক সুন্দর হয়ে যাবে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ এমপির সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান এমপি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ। সম্মেলনের লক্ষ্য সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গীবাদকে পরাজিত করা- সেতুমন্ত্রী ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য হবে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ পরাজিত করা। বুধবার বিকেলে ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি উপলক্ষে দফতর উপ-কমিটির বৈঠকে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ পরাজিত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কাক্সিক্ষত অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই হবে এ সম্মেলনের প্রধান অঙ্গীকার। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করার মতো প্রকাশ্য শত্রু নেই। কিন্তু গোপন শত্রু সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ সক্রিয় রয়েছে। তিনি বলেন, আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, সাংগঠনিক পদে একাধিক প্রার্থী থাকলে স্বচ্ছ ব্যালট পেপারে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতা নির্বাচন করা হবে। কোন কোন পদের জন্য ফরম বিক্রি করবে আওয়ামী লীগ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফরম বিক্রি যারা করে তারা দলে গণতন্ত্রের চর্চা করে না। আমাদের গঠনতন্ত্র ফরম বিক্রির কথা বলে না। প্রার্থীদের কাউন্সিলরদের সামনে পরীক্ষা দিতে হবে। এরপর দলীয় পদে নাম প্রস্তাব হবে, একাধিক প্রস্তাব আসলে স্বচ্ছ ব্যালট পেপারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা তিন সদস্যের একটি নির্বাচন কমিশনের অধীনে হবে। তিনি বলেন, ৭৭টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৬৭টি জেলার কাউন্সিলর এবং ডেলিগেটের তালিকা আমাদের দফতরে জমা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রত্যেক জেলার সাংগঠনিক রিপোর্টও জমা হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে রংপুর এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক দৌহিত্র ও শেখ রেহানার পুত্র রেজওয়ান সিদ্দিক মুজিব ববিকে ঢাকা মহানগর উত্তর থেকে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিলর করা হয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয়কে আওয়ামী লীগের ফিউচার লিডার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি সজীব ওয়াজেদ জয় এবং রেজওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে স্বাগত জানান। বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু এমপি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সুজিত রায় নন্দী উপস্থিত ছিলেন।
×