ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাচ্চাদের ভাষাগত সমস্যা শনাক্তে অ্যাপস

প্রকাশিত: ২০:১৮, ১২ অক্টোবর ২০১৬

বাচ্চাদের ভাষাগত সমস্যা শনাক্তে অ্যাপস

অনলাইন ডেস্ক॥ কথা বলার সময় যারা ভাষাগত বিশৃঙ্খলায় ভোগেন তাদের যে কারো জন্যই সেটি একটি বিশ্রি বিষয়। আর যে শিশুরা সবে মাত্র সমাজে প্রবেশ করতে শুরু করেছে তাদের জন্য এটি হতে পারে বিপর্যয়কর। খেঁপানো, হুমকি, বন্ধুর অভাব এবং স্কুলে দুর্বল পারফর্মেন্স এর মতো বিষয়গুলোর উৎপত্তি হতে পারে কথা বলতে অক্ষমতা বা স্বাভাবিকভাবে শোনার অক্ষমতা থেকে। এ ধরনের সমস্যার শুরুতেই যদি এর চিকিৎসা করা হয় তাহলে তা দূর করা সম্ভব। তবে যথেষ্ট দ্রুততার সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে বেশিরভাগ সময়ই এই ধরনের সমস্যার চিকিৎসা সময় মতো করানো হয় না। এ সমস্যায় আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৬০% শিশুর চিকিৎসা তারা বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে শুরু করা হয়না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির জেন গং এবং জন গুটাং এই পরিস্থিতিতে বদলের প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন। সেপ্টেম্বরে সান ফ্রান্সিসকোতে ইন্টরাস্পিস সম্মেলনে তারা একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এটি ব্যবহার করে সহজেই বাচ্চাদের ভাষাগত সমস্যা শনাক্ত করা যাবে। বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের ভাষাগত সমস্যা থাকলেও সবসময় তা ঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারেন না। যেমন কোনো শিশু হয়তো কথা বলার সময় অস্বাভাবিকভাবে বিরতি গ্রহণ করে। সমস্যাটি হয়তো শিশুটির বাবা-মা স্বাভাবিকভাবে শনাক্ত করতে পারেন না। কিন্তু কোনো পেশাদার লোকের কানে সমস্যাটি ঠিকই ধরা পড়বে। মিস গং এবং ড. গুটাং, দুজনেই কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তারা তাদের উদ্ভাবিত মেশিনটিকে ভাষাগত সমস্যাযুক্ত শিশুদের কথাবার্তাকে ভাষাগত সমস্যা নেই এমন শিশুদের কথাবার্তা থেকে আলাদা করে শনাক্ত করার দক্ষতা কীভাবে শেখানো সম্ভব তা ভাবছিলেন। এ প্রচেষ্টায় তারা প্রথমেই একটি গাণিতিক পরিভাষা লেখেন। এরপর তারা ভাষাগত রোগের দুই চিকিৎসক এমজিএইচ ইনস্টিটিউট অফ হেলথ প্রফেশনস এর টিফানি হোগান এবং জর্দান গ্রিনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। ওই গবেষকরা মিলে চার থেকে ১৭ বছর বয়সী ২৩১টি শিশুর কথাবার্তার অডিও রেকর্ড করেন। ওই শিশুদেরকে চিত্র দেখানোর পাশাপাশি একটি গল্প নিজেদের ভাষায় পুনর্বর্ণনা করার কথা বলা হয়। ড. হোগান এবং ড. গ্রিন গবেষণার আগে ওই শিশুদের ১৯২ জনের ভাষাগত দক্ষতার উন্নয়ন স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে বলেই শনাক্ত করেন। অন্যদিকে, ৩৯ জনের ভাষাগত দক্ষতার উন্নয়নে সমস্যা আছে বলে শনাক্ত করা হয়। মিস গং এবং ড. গুটাং এরপর তাদের গাণিতিক পরিভাষা ব্যবহার করে শিশুদের কথাবার্তার অডিওগুলোর ওপর প্রয়োগ করেন। এতে দেখা যায়, বিরতির সংখ্যা, বিরতির স্থিতিকাল এবং বিরতি ও বক্তব্যের ভিন্ন ভিন্ন অংশের অনুপাত কোনো শিশুর ভাষাগত দক্ষতায় সমস্যা থাকলে তা শনাক্ত করতে সক্ষম। মিস গং সম্মেলনে জানান, মিস হোগান এবং ড. গ্রিন ভাষাগত সমস্যায় আক্রান্ত যে শিশুদের চিকিৎসা করেছেন তাদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিও সে শিশুদের ৭২ শতাংশের ভাষাগত দক্ষতার উন্নয়নের সমস্যাটি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। পদ্ধতিটি ব্যবহার করে উদ্ভাবিত অ্যাপ দিয়ে বাবা-মায়েরাও শিশুদের ভাষাগত সমস্যা শনাক্তে রুটিনমাফিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে পারবেন। এবং কোনো শিশুর ভাষাগত সমস্যা থাকলে সে ব্যাপারে আগেভাগেই সতর্ক হতে পারবেন। সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
×