নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১১ অক্টোবর ॥ রাহিমা এখন দু’চোখে সব অন্ধকার দেখছেন। পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নেই সম্বল। পাষ- স্বামী মাসুমবিল্লাহ ওরফে সাগর তাকে নয় বছরের সন্তান রামিমসহ অথৈ সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে। মাদকসেবী এই অমানুষ সংসারের যোগান দিত না। দিত না ভরণপোষণ। তারপরও সংসার-স্বামী-সন্তান আগলে রেখে সেলাইয়ের কাজ করে সংসারের চাকা কোনমতে ঠেলছিল রাহিমা। বাবার বাড়িতে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রির টাকায় ছলিমপুর গ্রামে এক চিলতে জায়গা কিনে টিনশেড ঘর তুলেছিল। সেখানে সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছিল আগামী দিনের। সেসব এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। পাষ- স্বামী নেশার টাকা না পেয়ে স্ত্রীর তোলা ঘরে দিনের বেলা আগুন লাগিয়ে ছাই করে দিয়েছে। ঘরের আসবাবপত্র থেকে রাহিমার হাঁড়ি-বাসন থেকে শুরু করে জীবিকার অবলম্বন সেলাইমেশিন পর্যন্ত পুড়ে গেছে। এখন রাহিমা কী করবে তাও বুঝতে পারছেন না। মাদকসেবী সাগরকে এলাকার লোকজন ধাওয়া করে তাৎক্ষণিক পাকড়াও করে পুলিশে দিয়েছে। সাগর এখন জেলহাজতে রয়েছে। থানায় একটি মামলা করেছেন রাহিমা। কিন্তু রাহিমার এখন কী হবে? কী অবলম্বন করে ফের সংসার গোছাবে। কীভাবে ফের একমাত্র সন্তানকে মাদ্রাসায় পাঠাবে। কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে কী না, তা চরম অনিশ্চয়তার শঙ্কায় পড়েছে।
রাহিমা জানায়, ১৬ বছর আগে ঝাড়াখালী গ্রামের সাগরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর পাষ- স্বামীকে উপার্জনমুখী করতে বাবার দেয়া টাকায় প্রথম দফায় টমটম কিনে দেয়। সেটি বিক্রি করে দেয়। ফের একটি হোন্ডা কিনে দেয়। কিন্তু কোনকাজেই মন নেই। মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকসেবনে জড়িয়ে পড়ে। তারপরও বাবার পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করে সেলাইয়ের কাজ শিখে সংসারের যোগান দিচ্ছিল রাহিমা। রাহিমা আরও জানান, বিয়ের পর থেকে নানা ছলছুতোয় তাকে মারধর করা হতো।
বরিশালে যৌতুকের বলি নববধূ লিমা
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য লিমা বেগম (১৯) নামের এক নববধূকে অমানুসিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর শিহিপাশা গ্রামের। নিহত লিমার পিতা পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার বানীয়াশুরী গ্রামের মুজাম সরদার জানান, তার কন্যা লিমার সঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের হাতেম হাওলাদারের পুত্র জসিম হাওলাদারের সঙ্গে গত দেড় মাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর পক্ষের দাবিকৃত যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান মালামাল পরিশোধ করা হয়। বিয়ের পর জসিম পান বরজ করার জন্য আরও এক লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য লিমা বেগমকে চাপ প্রয়োগ করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: