ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

৫ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার হাতছানি, সাকিবের দিকেও তাকিয়ে টাইগাররা

ঘরের মাঠে চমক দেখানোর অপেক্ষায় তামিম

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১২ অক্টোবর ২০১৬

ঘরের মাঠে চমক দেখানোর অপেক্ষায় তামিম

মোঃ মামুন রশীদ ॥ সাগরিকায় সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। আরেকটি সিরিজ জয়ের হাতছানি বাংলাদেশ দলের। আজ সফরকারী ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলেই টানা সাতটি সিরিজ জেতা হয়ে যাবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এমন গুরত্বপূর্ণ ম্যাচে তাই দলের নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটারদের ওপরই সব আস্থা টাইগারদের। ব্যাটে-বলে আগের ম্যাচে ঝলসে ওঠা মাশরাফি বিন মর্তুজা একাই জিতিয়েছিলেন। কিন্তু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এরপরও বাংলাদেশের নির্ভরতার নাম কিন্তু বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল। চলতি সিরিজে বল হাতে তেমন জ্বলে উঠতে না পারলেও ব্যাট হাতে দারুণ এক ইনিংস ইতোমধ্যে উপহার দিয়েছেন সাকিব। তবে প্রথম দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন তামিম। সে কারণে এবং অযাচিত কিছু ঘটনায় এখন আক্রমণাত্মক এ ব্যাটসম্যান দারুণ তেতে আছেন। কারণ দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে করমর্দনের সময় কোন কারণ ছাড়াই তার সঙ্গে বিত-ায় জড়িয়েছেন বেন স্টোকস। তাই আজ তার নিজ ঘরের মাঠে আগুনের ফুলকি ছুটতে পারে এ বাঁহাতির ব্যাটে। আর সাগরিকায় তামিমই সর্বাধিক রানের মালিক। প্রথম দুই ওয়ানডেতে মাত্র ১৭ ও ১৪ রান করে সাজঘরে ফিরে গেছেন তামিম। নিজের রূপটা দেখাতে পারেননি ইংলিশ বোলারদের। অথচ এর আগে পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবেই রানের মধ্যে ছিলেন এ ওপেনার। বাংলাদেশের পক্ষে তিন ফরমেটেই সর্বাধিক রান ও শতকের মালিক তামিম। কিন্তু নিজের ঘরের মাঠ সাগরিকায় কোন সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারেননি ৭ ওয়ানডে শতকের মালিক। আর খেদটা তো আছেই দুই ম্যাচে রান করতে না পারার। তারচেয়ে বড় কথা মনস্তাত্ত্বিকভাবে উস্কে দেয়া হয়েছে তাকে। আগুন দেয়া হয়েছে মেজাজে! দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে খেলোয়াড়দের করমর্দনের সময় জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে ঝামেলা হয়, স্টোকস এগিয়ে এসে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেটা তামিমের ভেতরে বিধ্বংসী মনোভাবটাকে আরও জাগিয়ে দিয়েছে। আজই তার ভাল সুযোগ কিছু একটা করার। কারণ নিজের ঘরের মাঠে খেলবেন চট্টগ্রামের এ তারকা। এ মাঠে আবার সর্বাধিক রানেরও মালিক তিনি। ১৩ ম্যাচে ৪১.০৯ গড়ে করেছেন ৪৫২ রান। ৪টি হাফসেঞ্চুরি থাকলেও নেই কোন সেঞ্চুরি ঘরের মাঠেই। তাছাড়া একটি বিশেষ অর্জনের সামান্য সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। আর মাত্র ৩৮ রান করতে পারলেই প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫ হাজার রানের মালিক হয়ে যাবেন তিনি। আগের দুই ম্যাচেও সুযোগটা ছিল কিন্তু ব্যাট হাতে রান করতে না পারায় সেটা ছুঁতে পারেননি। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনিই ৪ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন। এখন অবশ্য তার সঙ্গী হয়েছেন সাকিব এবং মুশফিকুর রহীমও। এবার দু’জনকে পেছনে ফেলে নতুন এক উচ্চতায় এককভাবে উড্ডয়নের সুযোগ তামিমের। আর তামিমের ব্যাটে রান আসা মানেই বাংলাদেশ দলের জন্যও সুবিধাজনক। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েই এতকিছু আজ করতে পারবেন তামিম? তামিম নিজের ঘরে শতক হাঁকাতে না পারলেও একমাত্র বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে সাগরিকায় শতক হাঁকিয়েছেন সাকিব। ২০১৪ সালের ২১ নবেম্বর জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ৯৯ বলে ১০১ রান করেছিলেন তিনি। এছাড়াও এ মাঠে ৫ সেঞ্চুরি আছে যা সফরকারী দলের ক্রিকেটাররাই করেছেন। ব্যাটে-বলে দলের অন্যতম নির্ভরতা সাকিব। চলতি সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই ৫৫ বলে ৭৯ রানের একটি বিস্ফোরক ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি। বল হাতেও নিয়েছেন দুই উইকেট। অবশ্য সাগরিকায় ব্যাট হাতে অতীতটা ভয়াবহ রকমের বাজে তার। এ মাঠে সর্বাধিক ১৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি, অথচ রান করেছেন মাত্র ২৩.৯০ গড়ে ২৩৯! শুধু ওই একটি সেঞ্চুরিই ছিল বলার মতো ইনিংস, এছাড়া আর কোন বড় স্কোর নেই। এবার সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ ব্যাট হাতে নিজেকে ফিরে পাওয়া সাকিবের। প্রথম ওয়ানডেতে তিনি ৭ ইনিংস পর অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিলেন। অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচে আবার ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছেন ৩ রানে। তবে সাগরিকায় বোলার সাকিবের ওপরই যত ভরসা বাংলাদেশের। কারণ এ মাঠে ৩০ উইকেট শিকার করে সবার সেরা তিনিই। মাত্র ১৪.৬৩ গড়ে এ উইকেটগুলো নিয়েছেন, আছে দুইবার ৪ উইকেট শিকারের ঘটনা। বাংলাদেশের পক্ষে তিন ফরমেটেই সর্বাধিক উইকেট শিকারি সাকিবের ওপর তাই আস্থা থাকবে মাশরাফিবাহিনীর। তবে ইংলিশদের বিরুদ্ধে অতীতের মতোই এ সিরিজেও তেমন সুবিধা করতে পারছেন না তিনি। এ বাঁহাতি প্রথম ম্যাচে ৫৯ রান দিয়ে ২ উইকেট এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৫০ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন। বিশ্বের চার নম্বর ওয়ানডে বোলার সাকিব আজ ঝলসে উঠতে পারবেন?
×