ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট দ্বৈরথ

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১২ অক্টোবর ২০১৬

পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট দ্বৈরথ

উপমহাদেশের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ আয়োজনে প্রস্তুত দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম, হোম ভেন্যু হয়ে ওঠা আরব আমিরাতে ফেবারিট মিসবাহ-উল হকের পাকিস্তান, টি২০ ও ওয়ানডেতে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হওয়া ক্যারিবীয়দের জন্য আরও একটি অগ্নিপরীক্ষা স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মরুর দেশ আরব আমিরাতে এবার টেস্ট দ্বৈরথে মুখোমুখি পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন সিরিজে বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্টটি হবে দিবারাত্রির। আমিরাত তো বটেই, ফ্লাডলাইটের আলোয় উপমহাদেশেই প্রথম টেস্ট এটি। স্বভাবতই সেখানে বইছে উৎসবের আমেজ। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কার টিম বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন পাকিস্তান। দলটি আমিরাতকে নিজেদের দুর্গ বানিয়ে ফেলেছে। সাদা পোশাকে এখানে মিসবাহ-উল হকদের সাফল্য প্রশ্নাতীত। র‌্যাঙ্কিংয়ের ওপরে উঠে আসার (বর্তমানে দ্বিতীয়) পেছনে দুবাই-শারজাহ-আবুধাবির অবদান অনেক। টি২০ ও ওয়ানডেতে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হওয়ার পর তিন টেস্টের এই সিরিজটা ক্যারিবীয়দের জন্য আরও একটি অগ্নিপরীক্ষা। টেস্টে জেসন হোল্ডারের দল যে আট নম্বরে! ২০১৩ সালে এখানে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একবার দিবারাত্রির টেস্ট আয়োজন করতে চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু গোলাপি বলে অনুশীলনের ঘাটতির জন্য সেটি আলোর মুখ দেখেনি। বছরের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দিবারাত্রির টেস্ট খেলবে পাকিস্তান। তারই প্রস্তুতি হিসেবে এই আয়োজনের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রস্তাব দিলে ক্যারিবীয়রা তাতে রাজি হয়। উল্লেখ্য, গত বছর নবেম্বরে এ্যাডিলেড ওভালে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। উইন্ডিজের সঙ্গে এই টেস্ট ছাড়া এ বছর অন্তত দশটি দিবারাত্রির প্রথমশ্রেণীর ম্যাচ আয়োজনের ব্যবস্থা করবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। আলোচিত এই সিরিজে পাকিস্তান দলে বড় খবর বাবর আজমের ডাক পাওয়া। ওয়ানডেতে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্যাপ পরার অপেক্ষায় ২১ বছর বয়সী তরুণ এই ব্যাটসম্যান। তিন ওয়ানডেতে তিনি করেছেন ৩৬০ রান! প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হক বলেন, ‘আজম খুবই ভাল করছে, দারুণ ফর্মে আছে। যে কারণে তাকে টেস্টে অন্তর্ভুক্ত করা। আমার বিশ্বাস সাদা পোশাকেও সে নিজেকে মেলে ধরবে।’ নেয়া হয়েছে তরুণ স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজকে। তবে পাকিদের জন্য দুঃসংবাদ, ডেঙ্গু জ্বর থেকে সেরে উঠলেও পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় প্রথম টেস্টে খেলতে পারছেন না ইউনুস খান। পাকিস্তানকে শীর্ষে তুলে আনতে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের অবদান অনেক। ফর্মহীনতায় বাদ পড়েছেন মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ রিজোয়ান, শান মাসুদ ও ইফতেখার আহমেদ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ফেরানো হয়েছে বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিকানকে। এছাড়া ঘরের মাটিতে গত ভারত সিরিজের দল অপরিবর্তিত। যেখানে সাত ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি উইকেটরক্ষক দু’জন, তিন অলরাউন্ডার ও পাঁচ ডানহাতি পেসার। মূলত আমিরাতের কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে মোট স্পিনার তিনজন। টেস্টে দু’দলের অবস্থান একেবারে বিপরীতমুখী। জেসন হোল্ডারের নেতৃত্বে উইন্ডিজ যেখানে ধুঁকছে, সেখানে গত ইংল্যান্ড সফরে ২-২এ সিরিজ ড্র করার পর প্রথমবারের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছিল পাকিস্তান। মিসবাহর দলে রয়েছেন আসাদ শফিক, সরফরাজ আহমেদ, আজহার আলী, বাবর আজমের মতো ব্যাটসম্যান। বোলিংয়ে পেসার মোহাম্মদ আমির, সোহাইল খান, ইমরান খানের সঙ্গী ধুরন্ধর লেগস্পিনার ইয়াসির শাহ। ক্যারিবীয় ব্যাটিংয়ের মেরুদ- মারলন স্যামুয়েলস, ক্রেইগ ব্রেথওয়েট, জার্মেইন ব্লাকউড আর ড্যারেন ব্রাভো। ১৯৫৮-২০১১ পর্যন্ত মুখোমুখি ৪৬ টেস্টের ১৬টিতে জয় পাকিস্তানের, উইন্ডিজ ১৫টি। ড্র হয় ১৫টি টেস্ট। ২০১১ সালে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ২ টেস্টের সিরিজ ১-১এ ড্র করেছিল পাকিস্তান। ২০০১-২০০২ এ আমিরাতে দুই টেস্টে ক্যারিবীয়দের ‘হোয়াইটওয়াশ’ করেছিল পাকিরা।
×