ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শারদীয় দুর্গাপূজার বিশেষ নাটক ‘দশভুজা’

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১১ অক্টোবর ২০১৬

শারদীয় দুর্গাপূজার বিশেষ নাটক ‘দশভুজা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরি হয়েছে বিশেষ নাটক ‘দশভুজা’। শৌর্য দীপ্ত সূর্যর রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন যৌথভাবে শৌর্য দীপ্ত সূর্য ও সোহেল রানা। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেনÑ নাজিয়া হক অর্ষা, সাব্বির আহমেদ, নরেশ ভুইয়া, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, জেরি, তালিম, সুহৃদ জাহাঙ্গীর, আমিনুল ইসলাম তুহিনসহ অনেকে। নাটকটি আগামীকাল মঙ্গলবার বিজয়া দশমীর দিন রাত ৮-৪০ মিনিটে এটিএন বাংলায় প্রচার হবে বলে জানা গেছে। নাটকের কাহিনীতে দেখা যাবে হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম বৈকুণ্ঠপুর গ্রামের একমাত্র কুমার হরিদাস পাল। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মধ্যে সে একমাত্র কুমার পরিবার। তার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত বেশকিছু জমিতে একটি মন্দিরও আছে। সেখানেই সেই বিভিন্ন প্রতিমা বানায়। হরিদাস পালের স্ত্রী অনেক আগেই মারা গেছে। একমাত্র সন্তান দুর্গাকে নিয়েই হরিদাশের সংসার। কালের বিবর্তনে হরিদাশ পালের এই ভূসম্পত্তির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। এই জমির ওপর কুনজর পড়ে গ্রামের অর্থ প্রতিপত্তি ও প্রভাবশালী ব্যক্তি জনার্দন সিকদারের। জনার্দন সিকদারের একটি মাস্তান বাহিনীও আছে। এই জনার্দান সিকদার ও তার মাস্তান বাহিনীর দ্বারা বৈকুণ্ঠপুরের মানুষজন অতিষ্ঠ। কিছুদিন আগে তারা কালীদাস রায়কে ভিটামাটি ছাড়া করে কিন্তু কালীদাস রায়ের ছেলে রজত রায় শুধু দুর্গাকে ভালবাসার টানে আবার গ্রামে ফিরে আসে। আরও অনেক পরিবারকে সে ভিটেমাটি ছাড়া করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। এদিকে জনার্দন সিকদার হরিদাস পালের জমিজমা দখল করার পাঁয়তারা হিসেবে একটি জাল দলিল তৈরি করে বাড়ি দখল করার ফন্দি আঁটে। সে হরিদাস পালকে আসন্ন পূজার আগেই জমিজমা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় অথবা এর বিকল্প হিসেবে সে দুর্গাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু হরিদাশ পাল কিছুতেই ওই দুশ্চরিত্র লম্পট বহু বিবাহকারী জনার্দনের হাতে তার মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হয় না। দুর্গাপূজার ৭ দিন আগে সেই মন্দিরে গ্রামের সাধারণ লোকজন মহালয়া অনুষ্ঠান শুনতে আসে। একদিকে মহালয়া চলতে থাকে অপরদিকে হারিদাশ পাল তার ওপর এবং গ্রামবাসীর ওপর অত্যাচারের বর্ণনা করেন। মহালয়ায় বলা হয় যে, বিশ্ব ব্রহ্মা-ের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অত্যাচারিত মানুষের দুর্গতি হরণ করার জন্য আবির্ভূত হয় মা দুর্গা। মা দুর্গা আসলে ১০ জনের সম্মিলিত ঐক্যের একটি শক্তি। বিভিন্ন দেবতা বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে তাকে সহায়তা করে। আর এই দশজনের শক্তিতেই সে বলীয়ান হয়। এই মহালয়া অনুষ্ঠানের পর গ্রামের লোকদের বোধদয় হয়। তারা সম্মিলিতভাবে অসুরসম জনার্দন সিকদারকে প্রতিরোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিত্তশালী রাম লাল সাহা এজন্য অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়। বাসুদেব উকিল হরিদাশকে আইনগত সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। চাতাল শ্রমিক বিষ্ণু পালিত তার লোকবল দিয়ে সহায়তার ঘোষণা দেয়। কাঁলাচান কামার বিনা পয়সায় অস্ত্র বানিয়ে দেয়ার কথা বলে। এভাবেই আর দশজন তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর সবাই প্রস্তুতি নেয়। কথামতো পূজার আগের দিন জনার্দন সিকদার তার মস্তান বাহিনী নিয়ে হরিদাশ পালের বাড়ির দিকে আসে। তারা ওদেরকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলে। প্রথমে দুর্গা বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। তার হাতে একটা বড় দা থাকে। এরপর একে একে সবাই যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে জনার্দন সিকদার।
×