ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১০ অক্টোবর ২০১৬

স্তন ক্যান্সারে  মৃত্যুর হার সবচেয়ে  বেশি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্তন ক্যান্সারে নারীর মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। মেয়েদের ক্যান্সারের মধ্যে শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ হচ্ছে স্তন ক্যান্সার। আর এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, শতকরা ৬০ ভাগ রোগীরই বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এমনকি শতকরা ৫ ভাগের বয়স ৩০ বছরের নিচে। একটা সময় ছিল যখন এই ক্যান্সারের বিষয়ে শুধু নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দেয়া হত। কিন্তু এখন পুরুষদেরও অধিক হারে সচেতন করে তোলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কারণ পুরুষদের মধ্যেও স্তন ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। যদিও পুরুষদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার খুবই কম। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ সোমবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস। এ উপলক্ষে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে নানা কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। স্তন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, অন্যান্য ক্যান্সারের সঙ্গে স্তন ক্যান্সারের একটা বড় পার্থক্য হলো, সঠিক সময়ে ধরা পড়লে এবং সঠিক চিকিৎসা হলে এ রোগ থেকে সেরে ওঠার সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ। স্তন ক্যান্সার এমন একটি রোগ, যা চিকিৎসকের আগে রোগী নিজেই এই রোগ নির্ণয় ও ডায়াগনসিস করতে পারেন। একজন সচেতন নারী খুব সহজে ও দ্রুত এটি ধরে ফেলতে পারেন। অবিবাহিত বা সন্তানহীনা নারীদের স্তন ক্যান্সারের প্রকোপ বেশি। জেনেটিক ফ্যাক্টরের কারণে মা-খালাদের ক্যান্সার থাকলে সন্তানদের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যারা সন্তানকে কখনও স্তন পান করাননি, তাদের মাঝে স্তন ক্যান্সার অপেক্ষাকৃত অধিকহারে দেখা দিয়ে থাকে। ৩০ বছর পর যারা প্রথম মা হয়েছেন, তাদের স্তন ক্যান্সারের প্রবণতা একজন কমবয়সী মা হওয়া নারীর চেয়ে অনেক বেশি। বয়স যত বাড়ে, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি তত বৃদ্ধি পায়। অল্প সময়ে বাচ্চা নিলে, দেরিতে মাসিক শুরু হলে, তাড়াতাড়ি মাসিক বন্ধ হলে স্তন ক্যান্সারের প্রকোপ বেড়ে যায়। একাধারে অনেক দিন জন্মনিরোধক বড়ি খেলেও স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণগুলো ব্রেস্ট ক্যান্সারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে এগুলোই একমাত্র কারণ নয়। এ রোগে আক্রান্তদের বুকে চাকা এবং বগলেও চাকা নিয়ে রোগী আসতে পারে। নিপল ডিসচার্জ এবং নিপল ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়াও এ রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। কিছু রোগী বুকে ফুলকপির মতো ঘা নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসেন। অনেক সময় বুকে ব্যথা নিয়েও আসতে পারেন। এদিকে ১৫ টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মোর্চা বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের উদ্যোগে ২০১৩ সাল থেকে এই দিবসটি উদ্্যাপন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক প্রতিরোধ, সূচনায় নির্ণয় ও স্ক্রিনিং, উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ চিকিৎসার বিষয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আজ দিনব্যাপী কর্মসূচী হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম। এর অংশ হিসেবে ওই দিন আজ সোমবার সকাল ৯টায় শাহবাগস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত গোলাপী সড়ক শোভাযাত্রা, লিফলেট বিতরণ, ছায়ানট ভবনে বিকেল ও সন্ধ্যায় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। দেশের ৬৪ জেলা শহরেও দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই কর্মসূচী ঘোষণা করেন ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাঃ মোঃ হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
×