মশিউর রহমান খান ॥ দীর্ঘ ২৬ বছর পর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃপক্ষ প্রতিটি মহল্লার আবাসিক, বাণিজ্যিক ও বিভিন্ন স্থাপনার কর নতুন করে নির্ধারণের মাধ্যমে সমতা আনতে মাঠে নেমেছে। ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে রাজধানীর উত্তরা এলাকার কর সমতায়নের লক্ষ্যে জরিপকাজ শেষ করেছে। গুলশান এলাকায় জরিপ শুরু করবে বলে জানা গেছে। অপরদিকে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ তাদের আওতাধীন অঞ্চল-১ ও ২ অর্থাৎ ধানম-ি এবং মতিঝিল এলাকায় গত ২ অক্টোবর থেকে কর জরিপের কাজ শুরু করেছে। আগামী চার মাসের মধ্যেই এ জরিপের কাজ শেষ করা হবে বলে জানা গেছে।
নিয়মানুযায়ী পাঁচ বছর পরপর কর সমতায়নের জন্য সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের জরিপ পরিচালনা করে কর ধার্য করার বিধান থাকলেও দীর্ঘ বছরেও তা করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন যাবত অনেক নাগরিক কর সমতায়ন না করায় সিটি কর্পোরেশনের কাছে অভিযোগ প্রদান করে আসছে। সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, নতুন করে মাঠপর্যায়ে কর জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে কর সমতায়ন করা হলে নাগরিকদের বর্তমানের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আয়ও তুলনামূলক বৃদ্ধি পাবে। ফলে নাগরিকদের দুর্দশা লাঘবে তা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সূত্র জানায়, দ্য মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (ট্যাক্সেশন) রুলস-১৯৮৬-এর ২১ বিধি অনুযায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে বিভিন্ন ভবন, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা হোল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সমতা আনতে কর পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ডিএসসিসি ও ডিএনসিসির রাজস্ব খাতে আয় বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আইনানুযায়ী পাঁচ বছর পরপর কর সমতায়ন আনতে সাধারণ জরিপ (জেনারেল এ্যাসেসমেন্ট) করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও নির্বাচিত মেয়র ও প্রশাসকগণ কর সমতায়নে কোন প্রকার মনযোগ দেননি। ফলে দুই সিটি কর্পোরেশনেরই রাজস্ব আয় দিন দিন কমেছে। এর ফলে নাগরিকদের স্বাভাবিক সুবিধা নিশ্চিতে তেমন কাজ করতে সক্ষম হয়নি দুই সিটি কর্পোরেশন। সম্প্রতি ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন বেশ জোরেশোরেই মাঠে নেমেছে। পূর্ব ঘোষণা দিয়ে দৈনিক পত্রিকা ও গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কর সমতায়নের জরিপ করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিনরাত কাজ করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা কর্পোরেশন কর্তৃক রাস্তা, ড্রেনেজ, স্ট্রিট লাইট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা ভোগ করেন। এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন এলাকায় কর কমবেশি নির্ধারণ করা হয়। তবে কর ধার্য করার নিয়মানুযায়ী নতুন কোন হোল্ডিংধারী ব্যক্তির কর নতুন নিয়মে ধার্য করা হয়। এক্ষেত্রে কোন কোন মালিক ১৯৮৯ সালের ধার্যকৃত কর প্রদান করে আসছেন। অপরদিকে নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকরা সরকারের নতুন নিয়মে কর প্রদান করতে বাধ্য হচ্ছেন।